স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের দাবিতে সম্মিলিত নারী প্রয়াস
স্বাধীন ও রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত নির্বাচন কমিশন গঠনসহ মোট আটটি দাবি তুলে ধরেছে নাগরিক সংগঠন সম্মিলিত নারী প্রয়াস। সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠক থেকে এসব দাবি জানানো হয়।
সংগঠনের সভানেত্রী ড. শামীমা তাসনিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক ড. ফেরদৌস আরা খানম, শিক্ষিকা মাহসিনা মমতাজ মারিয়া, প্রভাষক ড. জেবুন্নেসা, ড. মেহের আফরোজ লুৎফা, জুলাই যোদ্ধা জান্নাতুন নাঈম প্রমি প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, কেবল নির্বাচন কমিশনের কাঠামো পরিবর্তন করলেই সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত হবে না; পাশাপাশি নাগরিকদের চিন্তাভাবনা ও মূল্যবোধের পরিবর্তন প্রয়োজন। তারা মন্তব্য করেন, দুর্নীতিগ্রস্ত নেতৃত্ব নির্বাচিত হলে ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক বাংলাদেশ গড়া সম্ভব নয়।
আলোচনায় শরিফ ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গ তুলে ধরে বক্তারা বলেন, হাদি কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর সম্পত্তি নন; তিনি সবার। অথচ দীর্ঘ সময় পার হলেও তার হত্যার সঙ্গে জড়িতদের এখনো গ্রেফতার করা হয়নি, যা বিচারহীনতার সংস্কৃতিরই প্রতিফলন।
সভাপতির বক্তব্যে ড. শামীমা তাসনিম বলেন, বছরের পর বছর দলীয় প্রভাবাধীন নির্বাচন কমিশন, মনোনয়ন বাণিজ্য, প্রশাসনের রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ ও সহিংস রাজনীতির কারণে দেশে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন ও যোগ্য নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়নি। এর ফলে জনগণ তাদের ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়ছে।
তিনি আরও বলেন, যোগ্য নেতৃত্ব বলতে এমন মানুষকে বোঝায়, যিনি সৎ, দুর্নীতিমুক্ত, শপথের প্রতি দায়বদ্ধ, জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক ও দেশপ্রেমিক। যিনি ক্ষমতাকে ভোগের উপকরণ নয়, বরং দায়িত্ব হিসেবে দেখবেন এবং রাষ্ট্রকে ব্যক্তিগত স্বার্থে ব্যবহার করবেন না।
গোলটেবিল বৈঠক থেকে উত্থাপিত দাবিগুলো হলো—
১. সরকারি ও রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠন।
২. সব রাজনৈতিক দলের জন্য সমান প্রচারণার সুযোগ নিশ্চিত করে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি।
৩. ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে ভয়ভীতিহীন ও সহিংসতামুক্ত ভোট পরিবেশ গড়ে তোলা।
৪. ভোট গণনা ও ফলাফল ঘোষণায় পূর্ণ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা।
৫. নির্বাচনী অপরাধে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি।
৬. গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করে সত্য প্রকাশে বাধাহীন পরিবেশ সৃষ্টি।
৭. মনোনয়ন বাণিজ্য বন্ধ করে রাজনৈতিক দলগুলোর ভেতরে সৎ ও যোগ্য নেতৃত্ব চর্চা।
৮. দুদকসহ সব রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা নিশ্চিত করে দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রম জোরদার।
বিভি/এসজি




মন্তব্য করুন: