নিয়ামতের নার্সারীতে ১২ হাজার রকমের অর্কিড ফুলের সমাহার

নিয়ামত আলী
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার পার কানসাটের বাসিন্দা নিয়ামত আলী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একাউন্টিং বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর পাস করে চাকরির পিছনে না ছুটে গড়ে তুলেছেন দুই বিঘা জমিতে বিভিন্ন জাতের ফুলের বাগান। এর প্রায় এক বিঘায় রয়েছে বিশাল অর্কিড গাছের সমারোহ। এতে প্রায় ১২ হাজার জাতের অর্কিড রয়েছে তার।
দেশীয় পদ্ধতি ও উপকরণ ব্যবহার করে বাণিজ্যিকভাবে অর্কিডের চাষ করছেন তিনি। এসব গাছ জেলার চাহিদা মিটিয়ে পাঠানো হচ্ছে রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলায়। এতে লাভের টাকা গুনছেন তিনি। তবে কীটনাশকসহ বিভিন্ন উপকরণের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন এ উদ্যোক্তা। এদিকে কৃষি বিভাগ বলছে নিয়ামতের নার্সারীর গাছ বিক্রিতে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করা হচ্ছে।
শিবগঞ্জ পৌরসভার দেওয়ান জাইগীর এলাকার নার্সারি মোড়ে যে কাউকে জিজ্ঞাস করলে দেখিয়ে দেবে নিয়ামতের ফুলের বাগান।
বাগানে রয়েছে দেশি-বিদেশি সকল প্রকার ফুলের গাছ। কিন্তু তার ফুল বাগানের প্রধান আকর্ষণ বিদেশি ফুল অর্কিড। তার বাগানের অর্কিডগুলো থাইল্যান্ড, চীন ও নেদারল্যান্ড থেকে আমদানি করা। দীর্ঘ দিনের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে তিনি অর্কিডের চারা প্রস্তত করে ঢাকায় বাজারজাত করেন।
নারিকেলের খোসা, ইটের খোয়া, ঝামা কিংবা সুরকি দিয়ে অর্কিড ফুল চাষ করা সম্ভব। যার কারণে কাদা-মাটির প্রয়োজন হয় না। অর্কিড ফুলের বিভিন্ন রঙ, আকার আর রকম ফেরের কারণে ফুল প্রেমীদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে নিয়ামতের ফুল বাগান। কিন্তু এই বাগানের অর্কিড ফুলগুলো উচ্চদরের কারণে অনেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। তবে যারা অর্কিড প্রেমি, সৌখিন জীবন যাপনে অভ্যস্ত তারা ফুল কিনছেন।
নিয়ামত আলী বলেন, বাবা কসিম আলী দীর্ঘদিন ধরে নার্সারির সঙ্গে জড়িত। বাবার কাছে ফুল চাষাবাদের দীক্ষা পেয়ে এখানে গত দুই বছর ধরে ফুলের চাষাবাদ করছি। প্রথমে বাইরের দেশ থেকে ফুল গাছগুলো আমদানি করে নিয়ে আসলেও এখন নিজে চারা উৎপাদন ও বিক্রি করি। প্রথমে ২ হাজার অর্কিড ফুলের গাছ দিয়ে শুরু করি। বর্তমানে বাগানে ১২ হাজারের বেশি গাছ রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ডেন্ডারিয়ামের ২০ রঙ, অন সোডিয়ামের ৪ রঙ, ভ্রমলিয়ার ৭ রঙ, গ্রিন লিপের ৫ রঙ, ক্যাটেলিয়ার ৭ জাত, লিপস্টিকের ৪ জাত, এয়ার প্লান্টের ৫ জাত, মিলিনিয়াম হার্টের ৪ জাত, ক্যামপারার ৭ জাতসহ হরেক নামের দামি অর্কিড ফুলের সংগ্রহ রয়েছে আমার কাছে।
আনিক দেওয়ান নামে এক অর্কিড ক্রেতা বলেন, আমি জেলা শহর থেকে এখানে অর্কিড কিনতে এসেছি। কিন্তু এখানে এসে এতো অর্কিড ফুল দেখলাম যে কোনটা নিব চিন্তায় পড়ে গেছে। এখানে প্রায় ১২ হাজার জাতের অর্কিড রয়েছে সব গুলোই ভালো লাগচে।
শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বলেন, উপজেলায় শুধু নিয়ামত আলী বহু জাতের অর্কিড বাণিজ্যিকভাবে চাষ করেন। অর্কিড ফুলের দাম বেশি হওয়ায় এই উপজেলায় চাহিদা খুবই কম। তবে বাজারে চাহিদা তৈরি করতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। এছাড়া আমি নিজেও তার কাছে অর্কিড ক্রয় করি। আর দেশের বিভিন্নস্থানে তো এই অর্কিডের চাহিদা রয়েছে। বিশেষ করে ঢাকায় ব্যাপক চাহিদা এই অর্কিডের।
মন্তব্য করুন: