শুকাচ্ছে ফোরাত নদী, প্রকাশ পাচ্ছে কেয়ামতের আরও একটি আলামত!
আজ থেকে প্রায় ১৪০০ বছর আগে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স.) বলে গিয়েছেন যে কেয়ামতের আগে শুকিয়ে যাবে এই ফোরাত নদী। ফোরাত নদী বা ইউফ্রেটিয়াস রিভার, ২,৮০০ কিলোমিটার লম্বা এই নদীটি তুর্কী, সিরিয়া ও ইরাকের উপর দিয়ে বয়ে গেছে।
শতাব্দির পর শতাব্দি ধরে প্রবাহিত হওয়া এই নদী একসময় প্রাচীন মেসোপটেমিয়ান সভ্যতাকে শিকড়কে লালন করেছিল। শুধু তাই নয়, প্রাচীন থেকে বর্তমান, এর তীরে গড়ে ওঠা জনপদকে লালন করেছে এই নদী।
তবে জলবায়ু পরিবর্তন আর মানুষের সৃষ্টি করা দুষনের কারণে ধীরে ধীরে শুকিয়ে আসছে এই ফোরাত নদী। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে এই নদীর পানির স্তর উদ্বেগজনকভাবে হ্রাস পাচ্ছে যা নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে একাধিক প্রতিবেদন। এসব প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, শুকিয়ে যাওয়া ফোরাত নদী সিরিয়া এবং ইরাকের কৃষিকে প্রভাবিত করেছে ব্যপকভাবে। বৃষ্টিপাত কমে যাওয়া, বাঁধ নির্মাণ এবং দুর্বল ব্যবস্থাপনাকেই দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা।
অর্থাৎ স্পষ্টতই বুঝা যাচ্ছে মহানবী (স.) এক করা সেই ভবিষ্যদ্বাণী সত্য হতে শুরু করেছে। ফোরাত নদীর কিছু বছর আগের আর বর্তমানের ছবি গুলো পাশাপাশি রাখলেই বোঝা যাবে কতটা দ্রুত শুকিয়ে যাচ্ছে এই নদী। শুধু কি জলবায়ু পরিবর্তন বা বাঁধ নির্মানই ফুরাত নদী শুকিয়ে যাওয়ার কারণ? আবু হোরায়রা (র.) থেকে বর্ণিত, “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “ততক্ষণ পর্যন্ত কেয়ামত সংগঠিত হবে না, যতক্ষণ না ফোরাত নদী শুঁকিয়া যায় এবং তার মাঝ থেকে একটি স্বর্ণের পাহাড় উন্মোচন হয়। মানুষ এই স্বর্ণের জন্য যুদ্ধ করবে এবং প্রতি ১০০ জনের মাঝে ৯৯ জনই মারা যাবে এবং তারা প্রত্যেকেই ভাববে হয়ত আমিই সেই বেঁচে যাওয়া ১ জন হবো।” [সহীহ মুসলিম, আল-বুখারি]
আবু হোরায়রা (র.) থেকে আরও একটি হাদিস বর্ণিত আছে, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, "শীঘ্রই ফোরাত নদী স্বর্ণের পর্বত প্রকাশ করবে, তাই যে সেই সময়ে উপস্থিত থাকবে সে যেন সেখান থেকে কিছু না নেয়।" [সহীহ আল-বুখারি]
এবার ফোরাত নদী নিয়ে মহানবী (স.) এর দ্বীতিয় হাদিসটির দিকে তাকানো যাক। সেখানে বলা আছে ফোরাত নদী শুকিয়ে গেলে বেরিয়ে আসবে এক স্বর্ণের পাহাড়। আর এই স্বর্ণের জন্য মানুষের মাঝে শুরু হবে যুদ্ধ এবং সে যুদ্ধের ভয়াবহতা এতটাই হবে যে অংশগ্রহণকারীদের মাঝে মাত্র ১ শতাংশ মানুষ প্রাণে বাঁচবেন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে আসলেও কি প্রকাশ পাবে এমন কোন স্বর্ণের পাহাড়?
ফোরাত নদী শুকিয়ে যাওয়ার পর এর তলদেশ থেকে উন্মোচন হয়েছে এক সুরঙ্গ। যে সুরঙ্গে আছে নিখুঁত সিড়ি ও অবকাঠামো। অনেক প্রত্নতাত্তিক ও গবেষকের ধারণা ফোরাত নদীর আশেপাশে বা এর তলদেশে হয়ত একটা বিরাট স্বর্ণের খণি রয়েছে। কেউ বলছেন এটি একটি প্রাকৃতিক খণি, যাতে প্রাকৃতিক নিয়মেই স্বর্ণ জমা হয়েছে, আবার কারও মতে এটি প্রাচীন কোন সভ্যতার রেখে যাওয়া গুপ্তধন। তবে কি এই সুরঙ্গ পথ ধরে এগুলেই পাওয়া যাবে সেই স্বর্ণের খনি? যদিও এই বিষয়ে এখনও নিশ্চিত করে কেউ কিছুই বলতে পারেননি।
সাম্প্রতিক সময়ে ইন্টারনেটে কিছু ভিডিও ভাইরাল হয়েছে যাতে দেখা যায় মানুষ ফোরাত নদী থেকে পাথরের টুকরার মত স্বর্ণের টুকরাও পাচ্ছে। তবে এই ভিডিওর সত্যতা সম্পর্কেও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে এতটুকু নিশ্চিতি হয়া গেছে যে, ফোরাত নদী শুকিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু কবে প্রকাশ পাবে সেই স্বর্ণের পাহাড় তা একমাত্র আল্লাহ ভালো জানেন।
বিভি/এজেড
মন্তব্য করুন: