সমকামিতা ও কওমে লুতের উপর আল্লাহর আজাবের নিদর্শন (ভিডিও)
মহান আল্লাহ যুগে যুগে বহু সীমালঙ্ঘনকারী জাতিকে আজাব দিয়ে ধ্বংস করে দিয়েছেন। এবং সে সব আজাবের নিদর্শন এখনও পৃথিবীতে রয়ে গেছে যেন মানুষ এ থেকে শিক্ষাগ্রহণ করতে পারে। এমনই এক নিদর্শন হচ্ছে মৃত সাগর বা ডেড সি। আল্লহ লুত (আ.) এর জাতিকে তাদের ঘৃণ্য অপরাধের কারণে ধ্বংস করে দেন আর আল্লাহর আজাবের কারণে মৃত সাগর আজ পর্যন্ত মৃত! আর এই স্থানকে দ্রুত ত্যাগ করতে বলেছেন মহানবী (স.)
নাম মৃত সাগর হলেও এটি আসলে একটি হ্রদ। পৃথিবীর অন্যান্য সাগরের তুলনায় এই হ্রদের পানি ১০ গুণ বেশি লবণাক্ত। আর এই কারণে এখানে জন্মাতে পারে না কোন মাছ বা উদ্ভীদ। এই জন্যেই এর নাম দেয়া হয়েছে মৃত সাগর। অতিরিক্ত মাত্রায় লবণ থাকার কারণে সাতার না জানলেও এই পানিতে কেউ ডুবে যায় না। স্বাভাবিক সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৪০০ মিটার নিচে অবস্থিত হওয়ায় একে পৃথিবীর সবচেয়ে নিম্নভূমিও বলা হয়। মৃত সাগরের অবস্থান জর্ডান, ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যবর্তী অঞ্চলে।
বহু বছর আগে এই মৃত সাগরের স্থানেই গড়ে উঠেছিলো এক জাতি, যার নাম ছিলো সাদুম। তারা ছিলো একটি ফিতনা সৃষ্টিকারী জাতি। পবিত্র কোরআন ও হাদিসের ভাস্য অনুযায়ী তাদের বহু অপরাধ ছিলো। যেমন, তারা তাদের এলাকার পাশ দিয়ে যাতায়াতকারী মানুষদের ডাকাতি করতো, তারা ছিলো প্রচন্ড মিথ্যাবাদী। তবে কোরআনে তাদের যে অপরাধটা সবচেয়ে বড় ও ঘৃণ্য বলা হয়েছে, তা হচ্ছে অস্বাভাবিক যৌনাচার।
মহান আল্লাহ তাদের হেদায়েতের জন্য হযরত ইবরাহীম (আ.) এর ভাতিজা হযরত লুত (আ.) কে পাঠালেন। লুত (আ.) দিনের পর দিন তাদের আল্লাহর পথে ডাকলেন, সব রকমের পাপ থেকে তাদের দূরে থাকতে বললেন, অন্যথায় আল্লহর ভয়াবহ আজাবের ভয়ও দেখালেন। কিন্তু তারা লুত (আ.) কথা শুনলো না। বরং তার বললো, যদি তুমি সত্যবাদী হও, তবে নিয়ে আসো সেই আজাব। এর পর নূহ (আ.) আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইলেন। আল্লাহ জিব্রাইল (আ.) কে পাঠালেন সে জাতিকে ধ্বংস করে দিতে। আল্লাহ লুত (আ.) কে নির্দেশ দিলেন রাতে শহর ছেড়ে দিতে এবং চলে যাওয়ার সময় যেন কেউ পেছন ফিরে না তাকায়। কিন্তু লুত (আ.) স্ত্রী পেছন ফিরে তাকায় এবং সেও সেই আজাবের মাঝে পরে।
পরদিন সকালে সাদুম জাতি জিব্রাইল (আ.) এর প্রচন্ড চিতকার শুনলো। এমন ভয়াবহ চিৎকার যে তারা দিকবিদিকশুন্য হয়ে যায়। এর পর জিব্রাইল (আ.) তার পাখার কোনা দিয়ে পুরো শহর তুলে আকাশ পর্যন্ত উঠিয়ে উলটো করে আবার নিচে ফেলে দিলেন। এর পর সেখানে শুরু হয় পাথরের বৃষ্টি। এভাবেই ধ্বংস হয়ে যায় সাদুম জাতি। এই একই জায়গায় রয়েছে এই মৃত সাগর। আল্লাহর আজাবের কারণে এখানে আজ পর্যন্ত কোন প্রাণি বা উদ্ভিদ জন্মায়নি।
সহীস মুসলিম ও বুখারি শরীফের হাদিস অনুযায়ী মহানবী (স.) সেসব স্থান এড়িয়ে চলার নির্দেশ দিয়েছেন যেখানে আল্লাহর গজব নাজিল হয়েছে। এভাবেই আল্লাহ সীমা লঙ্ঘনকারীদের শাস্তি দেন আর তাদের নিদর্শন যুগ যুগ ধরে সংরক্ষিত রাখেন যেন মানুষ শিক্ষা নিতে পারে।
বিভি/এজেড
মন্তব্য করুন: