• NEWS PORTAL

  • বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বাবার বাড়িতে গেলে কসরের নামাজ পড়তে হবে কি?

প্রকাশিত: ০১:৩০, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ফন্ট সাইজ
বাবার বাড়িতে গেলে কসরের নামাজ পড়তে হবে কি?

নামাজ ইসলামের দ্বিতীয় স্তম্ভ। এটি মুসলমানদের জন্য নিয়মিত ফরজ ইবাদত, যা আদায় আবশ্যক। ইচ্ছাকৃতভাবে ফরজ নামাজ ত্যাগ করা বড় গুনাহ। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মানুষের গুনাহ মুছে তাকে পবিত্র ও পরিশুদ্ধ করে। নামাজ আদায়ের মাধ্যমে বান্দা সরাসরি আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করে। এটি তাঁর সন্তুষ্টি অর্জনের অন্যতম হাতিয়ার।

অনেক সময় আমরা সফরে থাকি। সেক্ষত্রেও নামাজ আদায় বাধ্যতামূলক। তবে রয়েছে কিছু নিয়ম। যদি কোনো ব্যক্তি সফর অবস্থায় থাকেন, তার জন্য ইসলামের বিধান হচ্ছে তিনি নামাজ কসর করবেন। 

কসর একটি আরবি শব্দ, যার অর্থ হলো কম করা বা কমানো। ইসলামে সফরকারী বা মুসাফিরদের জন্য চার রাকাতের ফরজ নামাজ (যেমন-জোহর, আসর ও এশা) দুই রাকাতে সংক্ষিপ্ত করে পড়ার বিধান রয়েছে। নিজ শহর বা গ্রাম থেকে নির্দিষ্ট দূরত্ব (প্রায় ৪৮ মাইল বা ৭৮ কিলোমিটার) অতিক্রম করে সফরের নিয়তে বের হলে মুসাফির হিসেবে গণ্য হয়। 
সফরের সময় যাতে ভ্রমণকারীদের অতিরিক্ত কষ্ট না হয়, সেজন্য এই বিধান দিয়েছেন আল্লাহ। 

দুই রাকাত অথবা তিন রাকাত বিশিষ্ট যে নামাজগুলো আছে, যেমন মাগরিব নামাজ, ফজর নামাজ, এর কোনো কসর নেই। অর্থাৎ এটাকে অর্ধেক করার কোনো সুযোগ নেই। সুতরাং সফরের সময় শুধু জোহর, আসর ও এশার ওয়াক্তে কসর পড়তে হবে। 

কসর আদায় করা— আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দার এক ধরনের বড় সুবিধা। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘তোমরা যখন জমিনে সফর করবে, তখন তোমাদের জন্য নামাজের কসর করায়— কোনো আপত্তি নেই। (সুরা নিসা, আয়াত: ১০১)

মুসাফির ব্যক্তি সফর অবস্থায় ইচ্ছাকৃত চার রাকাত নামাজ পূর্ণ করলে গুনাহ হবে (তবে মুকিম ইমামের পেছনে হলে অসুবিধা নেই)। এ ক্ষেত্রে নামাজ পুনরায় পড়বে।

আর যদি ভুলক্রমে চার রাকাত শুরু করে দেয় এবং প্রথম বৈঠক করে থাকে, তা হলে সিজদা সাহু করে নিলে ফরজ নামাজ আদায় হয়ে যাবে। আর যদি প্রথম বৈঠক না করে থাকে, তা হলে ফরজ আদায় হবে না, আবারও পড়তে হবে। (বাদায়েউস সানায়ি : ১/৯১)

বাবার বাড়িতে গেলে কসর পড়তে হবে কি?
বিয়ের পর মেয়েরা সাধারণত স্বামীর বাড়িতেই স্থায়ীভাবে বসবাস ও সংসার করা শুরু করেন। তখন স্বামীর বাড়িই তাদের ওয়াতনে আসলী অর্থাৎ মূল বাড়ি হিসেবে গণ্য হয়ে থাকে, তাই কোনো মেয়ে বিয়ের পর বাবার বাড়িতে ১৫ দিনের কম সময়ের জন্য বেড়াতে গেলে এবং স্বামীর বাড়ি থেকে বাবারবাড়ি ৪৮ মাইলের দূরত্বে হলে তাকে কসর করতে হবে।

ঠিক একিভাবে কোনো পুরুষ নিজের বাড়ি থেকে ১৫ দিনের কম সময়ের জন্য শশুরবাড়ি বেড়াতে গেলে এবং শশুরবাড়ি ৪৮ মাইলের দূরত্বে হলে তাকে কসর করতে হবে।

আর যদি মেয়েদের বাবার বাড়ি বা ছেলেদের শশুর বাড়ি শরিয়ত নির্ধারিত ৪৮ মাইলের দূরত্বের কমে হয় তাহলে তাদের কসর না পড়ে পুরো নামাজ আদায় করতে হবে। (ফাতাওয়া দারুল উলুম জাকারিয়া-২/৫১৪, ফাতাওয়া দারুল উলুম দেওবন্দ-৪/৪৮৩, আপকি মাসায়িল আওর উনকা হল-২/৩৮৩)

ইসলামিক স্কলার শায়েখ আহমাদুল্লাহ বলেছেন, বাবার বাড়িতে মেয়েরা পুরো নামাজ আদায় করবেন না। তিনি কসর পড়বেন। কারণ তার স্থায়ী ঠিকানা এটি। তবে কোনো মেয়ে যদি বিয়ের পরও বাবার বাড়িতে স্থায়ীভাবে থাকেন, সেখানেই সংসার গড়ে তুলেন সেক্ষেত্রে পুরো নামাজ পড়বেন। 

তিনি বলেন, যেকোনো ব্যক্তির স্থায়ী ঠিকানা ও বর্তমান বসবাসের ঠিকানা-উভয় জায়গায়ই পুরো নামাজ পড়তে হবে।  

  

বিভি/টিটি

মন্তব্য করুন: