হত্যা মামলার আসামিকে নিয়ে আ.লীগের মনোনয়ন কিনলেন এমপি মোহন
লাল বৃত্তে চিহ্নিত হত্যা মামলার আসামি শাকিল। ছবি- সংগৃহীত
নরসিংদীর শিবপুরের বহুল আলোচিত সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি হারুন অর রশীদ খান হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামিকে সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পত্র কিনেছেন বর্তমান সংসদ সদস্য জহিরুল হক ভূঞা মোহন। এজাহারভুক্ত আসামি শিবপুর উপজেলার মুনসেফেরচর (ইটাখোলা) গ্রামের পিতা গিয়াস উদ্দিনের ছেলে শাকিল (৩৫)।
চাঞ্চ্যলকর এই মামলার প্রধান আসামি আরিফ ও কিলার মোবারকসহ আরো ৫ আসামিকে এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। মামলার বাদী ও এলাকাবাসীর অভিযোগ, এই আসামিদের প্রবাসে পালিয়ে থাকতেও সহায়তা করেছেন এই এমপির ভাই জুনো। ঠিক এই আলোচনার মধ্যে আসামির সাথে এমপির ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর নিন্দার ঝড় বইছে।
মামলার বাদী ও নিহত হারুন অর রশীদ খানের ছেলে আমীনুর রশীদ খান বলেন, এ ঘটনায় স্পষ্ট প্রমাণ হয় আমার বাবার খুনের সাথে এই এমপি জড়িত। আদালতে চার্জশীট দাখিলের পূর্বে আইন শৃংখলা বাহিনী যেন আরো তদন্ত করে এ বিষয়টি বিবেচনায় আনে সে ব্যাপারেও অনুরোধ জানান মামলার বাদী।
তিনি আরো বলেন, এই হত্যাকান্ডে যে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে সেই অস্ত্র মামলার আসামি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আসাদ। হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই এই আসাদকে সঙ্গে নিয়েও এমপি মোহন দলীয় সভা সমাবেশ অব্যাহত রেখেছেন।
আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী নিহতের ভাতিজা ফজলে রাব্বি খান বলেন, হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই শিবপুরের জনগণ বলে আসছে এই হত্যার সাথে এমপি মোহন ও তার ভাই জুনো জড়িত। দীর্ঘদিন পরে হলেও এই খুনের সাথে জড়িত থাকার প্রমাণ করে এই ছবি। শিবপুরের মানুষের দাবি এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত খুনীরা যত প্রভাবশালীই হোক আইন শৃংখলা বাহিনী যেন তাদের মুখোশ উম্মোচিত করে।
শিবপুর থানার পরিদর্শক (ওসি) ফিরোজ তালুকদার বলেন, এই মামলায় শাকিলকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সে এই মামলার ৪ নম্বর আসামি। বর্তমানে সে জামিনে আছে। প্রধান আসামি আরিফসহ আরো ৫ আসামি দুবাই পালিয়ে যাওয়ায় তাদেরকে এখনো গ্রেপ্তার করা যায়নি।
নরসিংদী (৩) শিবপুর থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও আসন্ন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী জহিরুল হক ভূঞা মোহন দুঃখপ্রকাশ করে বলেন, এ ঘটনায় সত্যি আমি খুবই লজ্জিত। ভীড়ের মধ্যে কিভাবে সে পাশে এসে দাঁড়িয়েছে তা লক্ষ্য করিনি। আকস্মিক দ্রুত আবার কে দ্রুত ছবি তুললো তা নিয়েও ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছি। বিষয়টি জানার পর আমি আমার লোকদের ভবিষ্যতে আরো সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছি। একপর্যায়ে গণমাধ্যমে বিষয়টি না আসার জন্যও তিনি অনুরোধ করেন।
উল্লেখ্য চলতি বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি নিজ বাড়িতে গুলিবিদ্ধ হন শিবপুরের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হারুনুর রশীদ খান। পরে দেশে ও দেশের বাইরে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় গত ৩১ মে ঢাকার একটি হাসপাতালে তিনি মারা যান।
বিভি/এজেড
মন্তব্য করুন: