অল্প বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা, সাভারে পানিবন্দি অর্ধশত পরিবার

সাভার পৌর এলাকায় সামান্য বৃষ্টির পানিতে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। সড়ক ও বাসা-বাড়িতে পানি প্রবেশ করায় ভোগান্তিতে পড়েছে প্রায় অর্ধশত পরিবার। এতে ওই অঞ্চলে বসবাসকারীরা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। এর মধ্যে পানিবাহিত রোগ কলেরা, ডাইরিয়াসহ রয়েছে বিভিন্ন ধরনের চর্মরোগ। প্রশাসনের কাছে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি দ্রুত যেন পানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেনেজ ব্যবস্থা নির্মাণ করে কর্তৃপক্ষ।
সরেজমিনে দেখা যায়, সাভার পৌর এলাকার ১নং ওয়ার্ডের পূর্ব জামসিং মহল্লায় পানিবন্দি হয়ে পড়া ঘর-বাড়িগুলোর কোথাও কোমরসমান পানি, কোথাও বুকসমান পানি, আবার কোথাও নৌকা ছাড়া মানুষের ঠাঁই হচ্ছে না। বেশ কয়েকটি বাড়ি-ঘর অর্ধেকের বেশি অংশ পানিতে তালিয়ে গেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়া বাড়ি-ঘরগুলোর পায়খানার বর্জ্য পানিতে মিশ্রণের ফলে দূষিত হয়ে পড়েছে ওই অঞ্চলের খাবার পানি। এতে স্থানীয় বাসিন্দারা চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়েছেন।
পানিবন্দি পরিবারগুলোর মধ্যে ময়ুরী নামে একজন বলেন, আমাদের এখানে সামান্য বৃষ্টি হলেই পানি জমে রাস্তা ডুবে যায় এবং সেই পানি ঘর-বাড়িতে প্রবেশে করে। আমার টিনের ঘরের অর্ধেক ডুবে গেছে। কোনো মালপত্র বের করতে পারিনি। সব নষ্ট হয়ে গেছে বলেও দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি।
অপরদিকে ফরিদা পারভীন নামে আরেক নারী বলেন, আমরা পৌর এলাকার বাসিন্দা। কিন্তু ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও রাস্তার সুযোগ-সুবিধা পাই না। আমার দোতলা বাড়ির নিচ তলার প্রায় ৮০ শতাংশ অংশ পানির নিচে। সবার বাড়ির পায়খানার বর্জ্য পানিতে মিশে দূষিত হয়ে গেছে। সেই পানি দিয়ে হেঁটে গেলে বিভিন্ন ধরনের চর্মরোগ হচ্ছে । তাই বাধ্য হয়ে নৌকা দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
আবুল হোসেন নামে এক বৃদ্ধ বলেন, অল্প বৃষ্টি হলেই বন্যা হয়ে যায় আমাদের এলাকায়। রাস্তা ডুবে ঘরে পানি আসে। খাবার পানির সমস্যা এবং রান্না করতেও অনেক সমস্যা হচ্ছে। পায়খানায় পানি প্রবেশ করায় প্রাকৃতিক কাজের জন্যেও অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এ ছাড়া এলাকার মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
অপরদিকে পানিবন্দি পরিবারের মাঝে ত্রাণ বিতরণকালে ঢাকা জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলম রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এ সময় স্থানীয় প্রশাসনকে জলাবদ্ধতায় দুর্ভোগের শিকার মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
এ বিষয়ে সাভার উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু বকর সরকার বলেন, বিগত কয়েক দিন টানা বৃষ্টিতে পানি জমে মানুষের দুর্ভোগ হচ্ছে। দুর্ভোগ কমানোর জন্য ড্রেন ও পাম্প দিয়ে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। যেই অঞ্চলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে, সেই অঞ্চলে পৌরসভার নিজস্ব কোনো খাস জমি নেই। তাই স্থানীয় বাসিন্দারা যদি জমি দিয়ে সহযোগিতা করে তবে ড্রেন নির্মাণ করে র্দীঘ মেয়াদে সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে।
বিভি/এজেড
মন্তব্য করুন: