ডিক্রি কার্যকরে ঋণ খেলাপির সম্পত্তি দখল নিতে বাধা

পটুয়াখালীতে আদালতের নির্দেশে রূপালী ব্যাংক পিএলসি’র অনুকূলে ন্যস্ত সম্পত্তির দখল বুঝে নিতে গিয়ে আদালত-মনোনীত প্রতিনিধি, ব্যাংক কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টরা মারাত্মক বাধার মুখে পড়েছেন।
শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিজ্ঞ যুগ্ম জেলা জজ ১ম আদালত ও অর্থঋণ আদালত, পটুয়াখালীর প্রদত্ত রায়ের আলোকে অর্থঋণ আদালত আইন, ২০০৩-এর ৩৩(৭) ধারা অনুযায়ী ব্যাংকের অনুকূলে হস্তান্তরিত সম্পত্তির দখল কার্যক্রম শুরু হয়। কিন্তু দায়িক পক্ষ তা প্রতিহত করায় কার্যক্রম সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি।
আদালতের রায়ের ভিত্তিতে পটুয়াখালী শহরের মৌজা পটুয়াখালী, জেএল নং-৩৮, এসএ খতিয়ান নং-২৩০৪, নামজারি খতিয়ান নং-১৪৪৭০, দাগ নং-২৭০৩, ২৬৯৬ ও ২৭০১—মোট ১০.৩৭ শতাংশ জমি ও তদস্থিত স্থাপনা রূপালী ব্যাংক পিএলসি, নিউ টাউন শাখার অনুকূলে ন্যস্ত করা হয়। আদালতের নির্দেশে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ, জেলা নাজির, জারিকারক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত হয়ে দখল বুঝে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করলেও দায়িক পক্ষের বাধার কারণে তা ব্যাহত হয়।
ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানায়, আশরাফ নামের এক ঋণগ্রহীতা ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ করলেও দীর্ঘদিনেও কোনো টাকা পরিশোধ করেননি। এ ঘটনায় ব্যাংক ১৮/২০১৮ নম্বর অর্থঋণ মামলা দায়ের করে। মামলায় আদালত ব্যাংকের পক্ষে রায় দেন এবং পরবর্তীতে অর্থজারি মোকদ্দমায়ও ব্যাংক ডিক্রি প্রাপ্ত হয়। দায়িক ব্যক্তি হাইকোর্টে গিয়েও কিস্তি মঞ্জুর করান, কিন্তু তা পরিশোধ না করায় উচ্চ আদালত তাকে ও তার আইনজীবীকে জরিমানা করেন। সব আইনি প্রক্রিয়া শেষে আদালত ব্যাংকের পক্ষে সম্পত্তির দখল বুঝিয়ে দেওয়ার নির্দেশ প্রদান করে।
ব্যাংকের প্যানেল আইনজীবীরা বলেন, ভাড়াটিয়াদের সঙ্গে ব্যাংকের কোনো বিরোধ নেই। তারা চাইলে ভবিষ্যতে হেড অফিসের অনুমোদনক্রমে ভাড়ার ভিত্তিতে থাকতে পারবেন। তবে মূল ঋণ খেলাপি বেআইনিভাবে সম্পত্তি দখল করে আছেন এবং আদালতের নির্দেশ অমান্য করছেন, যা আইনের পরিপন্থী।
এ পরিস্থিতিতে সংঘাত ও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার আশঙ্কায় আদালত-মনোনীত প্রতিনিধিরা দখল কার্যক্রম অসমাপ্ত রেখেই ফিরে আসেন। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিষয়টি আদালতকে অবহিত করা হবে এবং দায়িক পক্ষের বিরুদ্ধে দেওয়ানী আটকাদেশ চাওয়া হবে, যাতে জনগণের আমানতের টাকা উদ্ধারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া যায়।
প্যানেল আইনজীবীগণ আরও জানান, রূপালী ব্যাংক দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক। ঋণ খেলাপিদের কারণে ব্যাংক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং জনস্বার্থও বিপন্ন হচ্ছে। আদালতের রায় কার্যকর করে ঋণ খেলাপিকে উচ্ছেদ না করা পর্যন্ত ব্যাংক আইনি লড়াই অব্যাহত রাখবে।
মন্তব্য করুন: