‘সামাজিক কাজে চাঁদা নিয়েও ফেরত দেয়ার নজির প্রথম দেখলাম’

বৈঠক ডেকে ফেরত দেওয়া হয়েছে প্রত্যেকের চাঁদা।
মঠবাড়িয়া উপজেলার দধিভাঙ্গায় শিক্ষার্থীদের পারাপারের জন্য স্থানীয় যুবকদের উদ্যোগে একটি কাঠের পুল তৈরি করা হয়েছে। এই পুল তৈরি করতে স্থানীয়রা চাঁদা দিয়ে অংশ নিয়েছেন। মঠবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল কাইউম কাজ পরিদর্শন করে সন্তোষ প্রকাশ করে বরাদ্দ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। এসময় যুবকরা ঘোষণা দেন যখনই সরকারি বরাদ্দ হাতে পাওয়া যাবে তখনই প্রত্যেকের চাঁদার টাকা ফেরত দেয়া হবে।
সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার ৬ নং টিকিকাটা ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক নজরুল ইসলাম বরাদ্দকৃত টাকা তুলে দেন তরুণ সমাজ সেবক আবু সালেহ’র কাছে। বিকেলে দধিভাঙ্গা বাজারে ব্যবাসায়ীসহ যারা এই সামাজিক কাজে চাঁদা দিয়ে অংশগ্রহণ করেছেন তাদের নিয়ে একটি বৈঠক ডাকেন। ওই বৈঠকে যারা চাঁদা দিয়ে শরীক হয়েছিলেন সকলের টাকা ফেরত দেয়া হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ৬ নং টিকিকাটা ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, নিয়াজ মাখদুম ভাই ও আবু সালেহ ভাই একটি উদাহরণ তৈরি করেছেন। তাদের দায়বদ্ধতা আছে। এলাকা নিয়ে তারা ভাবেন। চাঁদা তুলে কাজ করে তারপর সেটি আবার ফেরত দেয়া-এটি একটি নৈতিকতা এবং সততা। তাই বলবো দশে মিলে করি কাজ হারি জিতি নাহি লাজ।
সবশেষে নজরুল ইসলাম বলেন, মঠবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুর কাইউম স্যারকে ধন্যবাদ তিনি আমার সকল অনুরোধ রেখেছেন। এই বাজারের বাথরুমের জন্য অর্থ বরাদ্দ দিয়েছেন, টলসেটের জন্য বরাদ্দ এসেছে।
এসময় তরুণ সমাজ সেবক আবু সালেহ বলেন, আমরা যখন বলেছিলাম-টাকা ফেরত দিবো। তখন অনেকেই হাসাহাসি করেছিলেন। কেউ কেউ বলেছেন, ইউএনও স্যার যদি টাকা দেন-তা কেউ পাবে না। আজ টাকা ফেরত দিয়ে প্রমাণ করলাম-আমরা কাজের বেলায় কতটা সিরিয়াস।
ডাচ-বাংলা এজেন্ট ব্যাংকের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক বাচ্চু বলেন, সামাজিক কাজে টাকা নিয়ে ফেরত দেয়ার নজির এই প্রথম দেখলাম। সবাই শুধু টাকাই নেয় কাজ করে না। তারা টাকাও নিয়েছে, কাজও করেছেন। আবার সরকারি টাকা পেয়েছেন জনগণের টাকা ফেরতও দিয়েছেন। এটি সত্যি একটি বড় দৃষ্টান্ত।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, দধিভাঙ্গা বাজারের সর্বজন মুরুব্বি এবং বাজার জামে মসজিদের খতিব মাওলানা আফজাল হোসাইন, সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান জাকির হোসেন, বাজারের সাধারণ সম্পাদক ও যুবদল নেতা দুলাল খান, দধিভাঙ্গা বড়তালেশ্বর সিনিয়র মাদ্রাসার প্রভাষক আব্দুস সালাম, ফরিদ উদ্দিন, মাস্টার জামাল হোসাইন, মাওলানা শাহজাহাল রেজা, হাফেজ আব্দুর রহিম, বাজারের তরুণ ব্যবসায়ী লিটন মুন্সী, মিজানুর রহমান সোহাগ, কবির হোসেন, মাসুম বিল্লাহ, গোলাম রসুল, রেদোয়ান, জাহাঙ্গীর, মেহেদী হাসান মারুফ, মুরাদ, রাসেল এবং রাতুলসহ আরো অনেকে।
বিভি/এজেড
মন্তব্য করুন: