ওসমানী উদ্যানে ‘জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ’র ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন

গত ২০২৪ সালের ঐতিহাসিক ছাত্র-জনতার জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে ঢাকার ওসমানী উদ্যানে নির্মিতব্য ‘জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ’র ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে।
রবিবার স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া আনুষ্ঠানিকভাবে এ ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়া এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সকল শহীদের স্মরণে ও জুলাইয়ের চেতনাকে সমুজ্জ্বল রাখতে স্থানীয় সরকার বিভাগের অর্থায়নে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন ৪৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে এই স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। স্মৃতিস্তম্ভটি ওসমানী উদ্যানের কেন্দ্রস্থলে একটি বৃত্তাকার বেদির উপর নির্মিত হবে। এর নকশায় থাকবে ঐক্য, আত্মত্যাগ ও স্বাধীনতার প্রতীকী উপাদান। স্তম্ভটির দুই পাশে চারটি করে মোট ৮টি আয়তাকার পারসিভড কলাম থাকবে এবং মাঝখানে থাকবে একটি স্বতন্ত্র বৃত্তাকার মূল কলাম, যার উচ্চতা হবে ৯০ ফুট। স্মৃতিস্তম্ভে প্রবেশের জন্য দুটি প্রবেশপথ থাকবে এবং প্রবেশপথে থাকবে এপিটাফ বা শহীদদের স্মৃতিবাণী খোদাই করা শিলালিপি।
পুরো স্মৃতিস্তম্ভ এলাকাজুড়ে কৃষ্ণচূড়া ও অন্যান্য দেশীয় বৃক্ষরোপণ করা হবে, যা শহীদদের আত্মত্যাগ ও সংগ্রামের প্রতীক হিসেবে স্থান পাবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, ‘জুলাই স্মৃতিস্তম্ভের নকশা ও নির্মাণে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহীদদের স্মৃতি ও ইতিহাসকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান নিয়ে কাজ শুরু হলেই একটি মহল বাজেট নিয়ে বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন তোলে। এসব প্রশ্ন জনগণের টাকার প্রতি দায়বদ্ধতার জন্য নয়, বরং রাজনৈতিক অপচেষ্টা। বিগত ফ্যাসিবাদের সময় যখন রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপব্যবহার চলছিল, তখন এমন কোনো প্রশ্ন ছিল না।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিগত সরকারের সময়ে কেবল পরামর্শক ফি হিসেবেই যে অর্থ ব্যয় হতো, এখন সেই অর্থ দিয়েই প্রায় একটি পূর্ণাঙ্গ প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব হচ্ছে। সকল অপচেষ্টা মোকাবিলা করেই সরকার জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহীদ ও আহতদের আত্মত্যাগের স্মৃতি প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ছড়িয়ে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়া বলেন, ‘যখন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের স্মৃতি সংরক্ষণের উদ্যোগ কেউ নেয়নি, তখন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার নেতৃত্বে ডিএসসিসি এই স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের গৌরবময় দায়িত্ব গ্রহণ করে।’
তিনি জানান, স্মৃতিস্তম্ভের পাইলিং কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে এবং চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসেই নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হবে।
অনুষ্ঠানের শেষে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা শহীদদের স্মরণে দোয়া করেন এবং একটি ঔষধি বৃক্ষ রোপণ করেন। অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার বিভাগ ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, প্রকল্প বাস্তবায়ন সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী, গণমাধ্যমকর্মী ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
বিভি/এজেড
মন্তব্য করুন: