ভার্চু্য়াল প্ল্যাটফর্ম কনভেতে একসঙ্গে ৫০০ আন্তর্জাতিক প্রতিনিধি

বাংলাদেশের প্রযুক্তিখাতের উদ্ভাবন কনভে এখন দেশে-বিদেশে ভরসার নাম। দেশের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের জাতীয় প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চলছে কনভের ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে।
দুই মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে ‘ইন্টারোডাকশন টু ফিন্যান্সিয়াল অ্যানালাইসিস অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ইন্সট্রুমেন্টস ফর ক্লাইমেন্ট ফাইন্যান্স’ শীর্ষক ওই জাতীয় প্রশিক্ষণ কর্মসূচির অনলাইন টেকনোলজি পার্টনার কনভে।
ইতোমধ্যে এ প্লাটফর্মে দেশের একটি আন্তর্জাতিক পরিবেশ সম্মেলনে দেশ-বিদেশের পাঁচ শতাধিক প্রতিনিধি যুক্ত হয়েছেন। যেখানে অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানসহ দেশ-বিদেশের উচ্চ-পর্যায়ের প্রতিনিধিত্ব ছিল।
রাজধানীর পরিকল্পনা বিভাগে আয়োজিত হাইব্রিড মোডের ওই সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নেদারল্যান্ডস, জার্মানি, সুইজারল্যান্ড ও সুইডেনের দূতাবাসের প্রতিনিধিরা এবং ইউএনডিপি, জিসিএফ, সিভিএফ, ভি২০, আইআইএক্স, এফসিবিও, ও জিএ ক্যাপিটালের আন্তর্জাতিক প্রতিনিধি ও বিশেষজ্ঞরা অংশ নেন। কনভের ‘বিগ মিটিং’ ফিচার ব্যবহার করে সেখানে ভার্চুয়াল সেশনে এ বিপুল সংখ্যক অংশগ্রহণকারী সরাসরি যুক্ত হয়ে অনুষ্ঠানটি অনুসরণ করেন, যেখানে কোনো প্রযুক্তিগত বিঘ্ন ঘটেনি। এত বড় পরিসরের সম্মেলন দেশীয় প্লাটফর্মে এমন সাফল্যে অভিভূত হন আয়োজকরা।
জাতীয় এ প্রশিক্ষণ কর্মসূচি তিনটি ধাপে সম্পন্ন হচ্ছে, যার প্রথম দুটি ধাপ কনভে প্ল্যাটফর্মে সম্পূর্ণভাবে অনলাইনে পরিচালিত হচ্ছে। প্রথম ধাপে রয়েছে ১১টি মূল্যায়নভিত্তিক সেশন, দ্বিতীয় ধাপে থাকছে ২২টি গভীরতর সেশন। মোট এক হাজার অংশগ্রহণকারীকে নিয়ে পুরো প্রশিক্ষণ কর্মসূচিটি মূলত অনলাইনেই কনভে প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে।
অংশগ্রহণকারীরা ডেস্কটপ, আইফোন ও অ্যান্ডড্রয়েড থেকে কনভেতে জয়েন করেছে। তাদের অভিজ্ঞতা, জুমে তারা এত বড় মিটিং করেনি। কনভের মতো এতো স্মুথ প্লাটফর্ম তারা আগে পাননি।
সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা বলছেন, এটা দারুণ খবর দেশের জন্য। বৈশ্বিক মানের সক্ষমতা অর্জনের উদাহরণ কনভে।
এর আগে বিশ্বখ্যাত জুম, গুগল মিট কিংবা টিমসকে ছাপিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশের ‘কনভে’তে অনুষ্ঠিত হয়েছিল ক্ষমতাধর রাষ্ট্রের জোট জি২০-র সিডসসা সভা। দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রপতি এইচ. ই. সিরিল রামাফোসা’র নেতৃত্বে কনভের ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে ‘সাসটেইনেবল ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট সিম্পোজিয়াম (সিডসসা)-২০২৫ শীর্ষক ওই সভায় অংশ নিয়েছেন ২৭ দেশের মন্ত্রী, কূটনীতিক, নীতিনির্ধারক এবং বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিরা।
বুয়েটসহ শীর্ষ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ প্রকৌশলীদের নিয়ে দেশের শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান সিনেসিস আইটির তৈরি ‘কনভে’। এটি কেবল একটি ভিডিও কনফারেন্সের অ্যাপ বা সেবা নয়, বরং একে বলা যায় পূর্ণাঙ্গ, নিরাপদ ও স্কেলেবল অফিস কোলাবোরেশন সল্যুশন, যা দেশীয় উদ্ভাবনে বৈশ্বিক মানের সক্ষমতার প্রমাণ দিয়েছে।
কনভের বিগ মিটিং ফিচারে একসঙ্গে এক মিটিংয়ে পাঁচ হাজার জন পর্যন্ত অংশগ্রহণকারী যুক্ত হতে পারে। কনভে খুব শিগগির দশ হাজার জন অংশগ্রহণকারীর মিটিং উন্মুক্ত করবে, যা দেশের জন্য ও বিশ্বের প্রযুক্তির জন্য মাইলস্টোন হবে। বিশ্বের হাতে গোনা কয়েকটা প্রডাক্ট এখন এ মুহূর্তে বড় মিটিংয়ের ফিচারটা দিতে পারে। এটি ডাটা রেসিডেন্সি ও স্যাভেরেইন্টি নিশ্চিত করে।
এতে ভিডিও কনফারেন্স হোস্টিং ও নিয়ন্ত্রণ, টিম ও গ্রুপ ম্যানেজমেন্ট, ইন্টিগ্রেটেড চ্যাট ও টাস্ক ম্যানেজমেন্ট, ক্লাউড স্টোরেজ ও ফাইল শেয়ারিং, রিয়েল টাইম স্ক্রিন শেয়ারিং, ডিজিটাল হোয়াইটবোর্ড, এআইভিত্তিক অটো মিটিং মিনিটস ও ট্রান্সক্রিপশন, স্পিকার আইডেন্টিফিকেশন (বাংলা ও ইংরেজি), বহুভাষার ট্রান্সক্রিপশন সাপোর্ট, কম ব্যান্ডউইথে কার্যকর মিটিং সুবিধা, বিগ মিটিং ফিচার, এআই অ্যানালিটিকস ও অটোমেটেড রিপোর্টস, উন্নত নিরাপত্তা ব্যবস্থা বা অ্যাডভান্স সিকিউরিটি, ক্লাউট ও অন-প্রিমিস হোস্টিং অপশনসহ নানা ফিচার রয়েছে।
প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পাচঁ শতাধিক অংশগ্রহণে মিটিং স্মুথ ও ফ্রিকশনলেস করার অভিজ্ঞতা হাতে গোনা দু’একটি গ্লোবাল প্রডাক্টের আছে। কনভে সে জায়গাটা এখন ক্লেইম করছে এখন।
সিনেসিস আইটির চিফ বিজনেস অফিসার এএসএম নুরুন নবী বলেন, গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক সম্মেলন ও জাতীয় প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে দেশের তৈরি পণ্য কনভেতে আস্থা রাখায় আমরা কৃতজ্ঞ। এ আস্থাই বাংলাদেশ হতে সত্যিকার গ্লোবাল পণ্য তৈরিতে আমাদের অনুপ্রেরণা।
বিভি/এজেড
মন্তব্য করুন: