অক্টোবর সেবা মাসের শুভ সূচনা করলো লায়ন্স জেলা ৩১৫এ১

সেবাই মানবধর্ম—এই চিরসত্যকে ধারণ করে লায়ন্স ইন্টারন্যাশনাল, ডিস্ট্রিক্ট ৩১৫ এ১- বাংলাদেশ প্রতি বছরের মতো এবারও ‘বিশ্ব লায়ন্স সেবা দিবস’ ও ‘অক্টোবর সেবা মাস’ উপলক্ষে আয়োজন করেছে বর্ণাঢ্য উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ও সেবামূলক কার্যক্রম।
বুধবার (১ অক্টোবর) রাজধানীর চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রের সামনের সড়কে এক প্রাণবন্ত লায়ন্স সমাবেশের মাধ্যমে শুরু হয় অক্টোবর মাসব্যাপী সেবা কার্যক্রম। সংগঠনের আন্তর্জাতিক পরিচালক লায়ন নাজমুল হক একগুচ্ছ বেলুন ও সাদা শান্তির প্রতীক কবুতর উড়িয়ে কর্মসূচির শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এরিয়া লিডার কাজী সাইফুল, মাল্টিপল চেয়ারপার্সন আশরাফ হোসেন হিরা, লায়ন্স ডিস্ট্রিক্ট ৩১৫ এ১ জেলা গভর্নর একেএম গোলাম ফারুক, প্রথম ভাইস জেলা গভর্নর ও অক্টোবর সেবা কর্মসূচীর চেয়ারপার্সন নওজাত সারওয়াত ইসলাম, দ্বিতীয় ভাইস জেলা গভর্নর ড. আবুল হোসেন খন্দকার, ক্যাবিনেট সেক্রেটারি মিজানুর রহমান মিজান, ক্যাবিনেট ট্রেজারার সাইদুর রহমান খান প্রমুখ।
উদ্বোধনী দিনের সকালটা যেন হয়ে উঠেছিলো মানবতার এক মহোৎসব। চারপাশ মুখর ছিলো লায়নদের প্রাণচাঞ্চল্যে, সেবার অঙ্গীকারে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান পরিচালনা ও সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন অক্টোবর সেবা কার্যক্রম কমিটির সদস্য সচিব লায়ন কে. এম. আকতার হোসেন। তিনি পুরো আয়োজনকে প্রাণবন্ত করে তুলেন।
উদ্বোধনী বক্তব্যে আন্তর্জাতিক পরিচালক নাজমুল হক বলেন, ‘সেবা কোনো একদিনের দায়িত্ব নয়, এটি প্রতিদিনের চর্চা। লায়ন্স গত ১০৮ বছর ধরে বিশ্বব্যাপী নিঃস্বার্থ সেবার এক অনন্য ইতিহাস গড়ে তুলেছে। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। আমাদের লায়ন্সরা সবসময় দুর্যোগ ও সংকটে মানুষের পাশে থেকেছে, পাশে থাকবে।’
জেলা গভর্নর একেএম গোলাম ফারুক তার বক্তব্যে সকল ক্লাবকে অক্টোবর মাসব্যাপী সুবিধাবঞ্চিত ও দুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘আমাদের সেবা যেন থাকে সত্যিকারের হৃদয় থেকে উৎসারিত। তবেই সমাজে পরিবর্তন সম্ভব।’
এরিয়া লিডার কাজী সাইফুল বলেন, ‘লায়ন্সরা নিঃস্বার্থ সেবার প্রতীক। আমাদের প্রতিটি উদ্যোগ সাধারণ মানুষের জীবনে পরিবর্তন আনে—এই বিশ্বাস থেকেই আমরা এগিয়ে চলি।’
মাল্টিপল চেয়ারপারসন আশরাফ হোসেন হিরা এই জেলাকে ‘সমাজসেবায় এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, ‘৩১৫ এ১ জেলা সবসময় মানবিকতার আলো ছড়িয়ে এসেছে, এবং ভবিষ্যতেও আরও বড় পরিসরে কাজ করবে।’
অনুষ্ঠান শেষে ১৪৫টি ক্লাবের এক হাজারেরও বেশি লায়নের অংশগ্রহণে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্র থেকে শুরু হয়ে রাজধানীর প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে আগারগাঁওয়ের লায়ন্স ভবনে গিয়ে শেষ হয়। স্লোগানে মুখরিত, ব্যানার-প্ল্যাকার্ডে সজ্জিত এই র্যালি যেন মানবতার জয়গান গেয়ে চলেছিলো।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন লায়ন্স ডিস্ট্রিক্ট ৩১৫ এ১ এর সাবেক জেলা গভর্নর নজরুল ইসলাম সিকদার, এলসিআইএফ কোঅর্ডিনেটর আনিসুর রহমান, জিএসটি কোঅর্ডিনেটর মো. রমজান খান, জিএমটি কোঅর্ডিনেটর মো. মোরসালিন খান, মার্কেটিং চেয়ারপারসন নুর মোহাম্মদ হাওলাদার চুন্নু, ইনভায়রনমেন্ট চেয়ারপারসন মো. মোরশেদ আলম ভূঁইয়া—সহ জেলা নেতৃবৃন্দ।
র্যালির পর আগারগাঁও লায়ন্স ভবনে আয়োজন করা হয় তিনটি মানবিক কর্মসূচির। প্রথমেই আয়োজন করা হয় রক্তদান কর্মসূচি, যেখানে অনেক লায়ন সদস্য স্বতঃস্ফূর্তভাবে রক্তদান করেন। পরে ‘মিশন ১.৫’ বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। এতে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ও সচেতনতা বৃদ্ধিতে উদ্যোগ গ্রহনের আহ্বান করেন বক্তারা। সবশেষে লিওদের অংশগ্রহণে রচনা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এ প্রতিযোগিতায় লিও সদস্যরা ভবিষ্যতের তরুণ নেতৃত্ব মানবতা ও সেবার ভাবনাগুলো তুলে ধরেছে।
বিভি/এআই
মন্তব্য করুন: