• NEWS PORTAL

  • মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫

Drama: Jamai Bou Chor
Drama: Jamai Bou Chor

প্রযুক্তিনির্ভর কৃষিতে ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন সীমান্ত এলাকার কৃষক

মো. অসীম চৌধুরী

প্রকাশিত: ১৪:১১, ১৪ মে ২০২২

ফন্ট সাইজ
প্রযুক্তিনির্ভর কৃষিতে ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন সীমান্ত এলাকার কৃষক

প্রযুক্তি হাতের মুঠোয় চলে আসায় নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। যার ফলে চাষিরা তাদের ফসলের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে পারছেন। ভিডিও কলের মাধ্যমে ঢাকার ব্যবসায়ী মরিচ দেখে ফরমায়েশ প্রদান করছেন, স্থানীয় আড়তদার সে মোতাবেক ট্রাকে পাঠিয়ে দিচ্ছেন পণ্য।

ঠাকুরগাঁওয়ের মরিচ চাষিদের ন্যায্যমূল্য পাওয়া নিয়ে যে সংকট ছিল; তা কেটে গেছে। ক্ষেত থেকে সরাসরি আড়তে নিয়ে মরিচ বিক্রি করতে পারছেন তারা। 

মধুপুর গ্রাম ঠাকুরগাঁও বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার চাড়োল ইউনিয়ন। অতীতে গ্রামের স্থানীয় কৃষকদের শহরে মরিচ বিক্রি করতে পাড়ি দিতে হতো অন্তত ২৫ কিলোমিটার রাস্তা। আর এখন উপজেলার মহাজনহাট থেকে মধুপুর গ্রাম পর্যন্ত তিন কিলোমিটারের রাস্তায় সাত স্থানে প্রতিদিন আড়ত বসিয়ে কাঁচা মরিচ কেনাবেচা হচ্ছে।

সরাসির ক্ষেত থেকে মরিচ এনে বিক্রিতে ভালো দামও পাচ্ছেন মরিচ চাষিরা। শনিবার (১৪ মে) সরেজমিনে আড়তে গিয়ে এসব তথ্য পাওয়া যায় কৃষকদের কাছ থেকে।

তারা জানান, মহাজনহাটে দুটি, লালাপুর জঙ্গলবাড়ী গ্রামের তিন রাস্তার মোড়ে একটি, কাঁচনা মধুপুর গ্রামের পুকুরপাড়ে দুটি এবং মধুপুর গ্রামের ভেতরে কয়েকটি স্থানে প্রতিদিন আড়ত বসছে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা এখান থেকে মরিচ কিনে ঢাকার ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করছেন। প্রতিদিন ৮০ থেকে ৯০ লাখ টাকার মরিচ কেনাবেচা হচ্ছে।

কৃষকরা জানান, ক্ষেত থেকে তুলেই তারা ন্যায্যমূল্যে মরিচ বিক্রি করতে পারছেন। দিনের টাকা দিনেই উঠিয়ে ফেলছেন তারা। আড়তের টোল, মাকামের দর কষাকষি না থাকায় মহাজনহাট থেকে মধুপুর গ্রাম হাটগুলোয়ে মরিচ বিক্রি বাড়ছে।

ব্যবসায়ীরা জানালেন, চাষি থেকে সরাসরি মরিচ কেনায় তাদেরও দামের হিসেব বেশ ভালো হচ্ছে। আগে বিভিন্ন অসুবিধা দেখা দিলেও এখন তা নেই। সতেজ ও টাটকা অবস্থায় মরিচ কিনেই তারা ঢাকার ব্যবসায়ীদের কাছে পাঠিয়ে দিতে পারছেন। পরিবহনেরও কোনো সমস্যা নেই।

কৃষক ও ব্যবাসায়ীদের মতে, প্রযুক্তি হাতের মুঠোয় চলে আসায় নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। যার ফলে চাষিরা তাদের ফসলের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে পারছেন।

মধুপুর গ্রামের অভ্যন্তরে সবচেয়ে বড় আড়ৎটি স্থানীয় ব্যবসায়ী জয়নুল হক, আজিজুল হক, দুলালসহ পাঁচজনের। তারা জানান, সকাল ৬ টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত তাদের আড়তে প্রায় ৬ হাজার কেজি মরিচ কেনা হয়। এসব মরিচ বিকেল ৪টার মধ্যে ট্রাকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় ঢাকায়। ঢাকার ব্যবসায়ীরা প্রতি কেজিতে যা কমিশন দেন, তা নিয়েই আড়তের সবাই খুশি। আজকে (শনিবার) প্রতি কেজি মরিচ কেনা হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে।

ফারুক হোসেন নামে এক কৃষক মধুপুর গ্রামের আড়তে মরিচ বিক্রি করতে এসেছেন। ২০ কেজি মরিচ ৪৭ টাকা দরে বিক্রি করছেন তিনি। জানান, খেতের মরিচ সরাসরি বালিয়াডাঙ্গী কাঁচামালের আড়ৎ বা ঠাকুরগাঁও রোড আড়তে নিতে গেলে তার ১০০ টাকা গাড়ি ভাড়া ও আড়তে মাকাম নিতে ৯০ টাকা টোল দিতে হতো। সময় ব্যয় হতো ৩ ঘণ্টার মতো। এখন সময় ও অর্থ দু্টোই কম লাগছে। তার মরিচ বিক্রি করে ভালো লাভ পাচ্ছেন তিনি।

ভিডিও কলের মাধ্যমে ঢাকার ব্যবসায়ী মরিচ দেখে কিনে নিয়ে যান বলে জানান ব্যবসায়ী আব্দুল্লাহ। তিনি জানান, সকাল ৬ টার দিকে তাদের এলাকায় আড়ৎ বসে। এ সময় তারা ঢাকার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে মরিচের দাম নেন। সেই দামে স্থানীয় চাষিদের কাছে থেকে মরিচ কিনে গাড়ি করে রাজধানীতে পাঠিয়ে দেন।

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুবোধ চন্দ্র রায় বলেন, সীমান্ত এলাকার কৃষকরা এখন প্রযুক্তিনির্ভর কৃষিতে অভ্যস্ত হয়ে উঠছে। প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বাজারদর জানতে পারছে। বাড়ির পাশে ফসল বিক্রি করে ন্যায্যমূল্য পাওয়ার পাশাপাশি বাড়তি খরচ থেকে রেহাই পাচ্ছেন। এতে তাদের আয় ভালো হচ্ছে।

বিভি/এজেড

মন্তব্য করুন:

সর্বাধিক পঠিত
Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2