‘চলচ্চিত্র অনুদানে স্বচ্ছতা’ শিরোনামে মুক্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত

‘চলচ্চিত্র অনুদানে স্বচ্ছতা’ শিরোনামে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর নাট্যকলা বিভাগের সেমিনার কক্ষে মুক্ত আলোচনা আয়োজন করে জাতীয় চলচ্চিত্র আন্দোলন। রবিবার (২৭ জুলাই) বিকাল ৪টায় এই আলোচনা অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।
আয়োজনে সভাপতিত্ব ও সঞ্চালনা করেন অ্যাডভোকেট শফিকুর রহমান। কি-নোট পেপার উপস্থাপন করেন জাতীয় চলচ্চিত্র আন্দোলনের সংগঠক মোহাম্মদ নূরউল্লাহ। মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন চলচ্চিত্র গবেষক বিধান রিবেরু, চলচ্চিত্র নির্মাতা ও অনুদান কমিটির সদস্য আকরাম খান ও পার্থিব রাশেদ, চলচ্চিত্র নির্মাতা এন রাশেদ চৌধুরী, মোহাম্মদ কাইয়ুম। এছাড়াও বাচসাস সভাপতি কামরুল আহসান হাসান দর্পণ, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির প্রতিনিধি রুবেল ইউনুস। আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ফেডারেশন অফ ফিল্ম সোসাইটিজ, বাংলাদেশ টেলিভিশন জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (তেজাব), চলচ্চিত্র সংস্কার রোডম্যাপ ২৪, বাংলাদেশ প্রামাণ্যচিত্র পর্ষদ এর প্রতিনিধিরা। মুক্ত আলোচনায় রাজনৈতিক দল নাগরিক ঐক্য এবং বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাংস্কৃতিক প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
চলচ্চিত্র নির্মাতা মোহাম্মদ কাইয়ুম বলেন, অনুদানের জন্য পূর্ণ স্ক্রিপ্ট দেয়া জরুরি নয়। নির্মাতার ফিল্মগ্রাফি, লগ লাইন, সিনোপসিস স্টোরি লাইন বা ট্রিটমেন্ট এগুলো দিয়েই পৃথিবীতে অন্যত্র ফিল্মে গ্রান্ড দেওয়া হয়।
চলচ্চিত্র নির্মাতা এন রাশেদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের সিনেমাকে আসলে কেউ ধারণ করে না। চলচ্চিত্রে অনুদান পাবার পর নির্মাতারা, বিভিন্ন কিস্তির অর্থ পাওয়ার ভোগান্তিটা আরো বেশি যেটা নিয়ে খুব একটা আলোচনা হয় না, যেটাও সমান ভাবে জরুরি। রাজনৈতিক প্রভাব এড়িয়ে আবেদনের প্রক্রিয়া স্বচ্ছ করা জরুরী।
চলচ্চিত্র সংস্কার রোডম্যাপ এর প্রতিনিধি, চলচ্চিত্র শিক্ষক ও গবেষক সাজেদুল বলেন, অনুদান নীতিমালার আমূল পরিবর্তন দরকার। আগামী অনুদানে এই নীতিমালার পরিবর্তন নাম থেকেই শুরু হতে পারে। সদ্য প্রকাশিত চলচ্চিত্র সংস্কার রোডম্যাপ এর প্রস্তাবিত নীতিমালার নাম ‘জাতীয় চলচ্চিত্র নির্মাণ অর্থায়ন নীতিমালা- National Filmmaking Fund’. এই প্রস্তাবনা উন্মুক্ত এবং যে কেউ এই প্রস্তাবিত নীতিমালায় তাদের মন্তব্য দিতে পারেন। সবাই একসাথে কাজ করলে চলচ্চিত্রের সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব।
অনুদান কমিটির সদস্য চলচ্চিত্র পরিচালক আকরাম খান বলেন, চলচ্চিত্রের সার্বিক দিক বিবেচনায় অনুদানের সংখ্যা এবং বরাদ্দের পরিমাণ বাড়ানো উচিত। বাংলাদেশে প্রামাণ্যচিত্রকে চলচ্চিত্র মনে করা হয় না। ফিকশনের সাথে সমান্তরালে সব ক্যাটাগরিতে সমান সংখ্যক প্রামাণ্যচিত্রেও অনুদান দেয়া উচিত।
সংগঠক মোহাম্মদ নূরউল্লাহ বলেন, সরকারি কমিটি গুলোতে চলচ্চিত্র সংগঠনের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা জরুরি। চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা নিজেদের দাবীগুলো আলোচনা করে, নিজেরা ঠিক করে নিতে পারলে, সবাই মিলে একটি স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার প্রতি আস্থা আনতে পারলে সরকারের পক্ষ থেকে তা বাস্তবায়ন করা সহজ হয়, এজন্যই ঐকমত্যে পৌঁছাতে আরো আয়োজন করা হবে।
সভাপতির বক্তব্যে অ্যাডভোকেট শফিকুর রহমান বলেন, জাতির মানস গঠনে চলচ্চিত্রের ভূমিকা অপরিসীম। সেখানে ফিল্ম মেকারের পথ দেখানোর কথা। আমাদের চলচ্চিত্র সেই পথ কী দেখাচ্ছে? আমাদের নির্মাতারা নৈতিক জায়গা থেকে নেতৃত্ব দিবেন সেটাই প্রত্যাশা।
বিভি/এসজি
মন্তব্য করুন: