বিএসএফের গুলিতে মরলো সাইদুল, ক্ষোভে ফুসছে এলাকাবাসী (ভিডিও)
ছেলের লাশের খাটিয়া ধরে বসে আছেন অসহায় পিতা। আর মা-বোনের গগনবিদারী মাতম দেখে অশ্রুসিক্ত স্বজন-পাড়াপ্রতিবেশী। সবারই একই প্রশ্ন- কি অপরাধ ছিল কৈশোর পেরিয়ে সবে যৌবনে পা রাখা টগবগে যুবক সাইদুলের? নিজ দেশের অভ্যন্তরে ঢুকে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বিএসএফ কেন গুলি করে হত্যা করলো তাকে।
গত বুধবার সন্ধ্যায় সুনামগঞ্জের গামারিতলা গ্রামে মাঠ থেকে গৃহপালিত গরু আনতে গিয়ে বিএসএফের গুলিতে মারা যান কৃষক সাইদুল। তিনি ওই গ্রামের জয়নাল আবেদীনের ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যায় গুলির শব্দ শুনে মাঠের দিকে ছুটে যান গামারিতলা গ্রামের মানুষজন। তারা তখন দেখতে পান কাটাতার পেরিয়ে বাংলাদেশের ৫০ থেকে ৬০ গজ অভ্যন্তরে ঢুকে সাইদুলকে পর তিনটি গুলি করে বিএসএফ। একটি গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হলেও দুটিগুলি লাগে তার বুকে ও পেটে। এ সময় আহত সাইদুলকে ভারতের অভ্যন্তরে নিয়ে যেতে চায় বিএসএফ। কিন্তু স্থানীয়দের উপস্থিতি টের পেয়ে পিছু হটে তারা। পরে স্বজনরা তাকে চিকিৎসার জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন৷
এদিকে, কৃষক সাইদুলকে শেষ বিদায় জানাতে এসেছেন বহু মানুষ। শোকে কাতর স্বজনরা। তাকে হত্যা করায় ক্ষোভে ফুসছে স্থানীয় মানুষ। তাদের দাবি, রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে এই জুলুম নির্যাতনের প্রতিবাদ করতে হবে। সীমান্ত হত্যা বন্ধ করতে হবে।
সুনামগঞ্জ ২৮ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল একে এম জাকারিয়া কাদির জানান, সাইদুল হত্যার ঘটনায় দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিজিবি এই হত্যাকাণ্ডের জোর প্রতিবাদ জানিয়ে বিএসএফের কাছে বিস্তারিত জানতে চেয়েছে। প্রতিউত্তরে বিএসএফ জানিয়েছে, বাংলাদেশী নাগরিকের উপর গুলির ব্যাপারে বিএসএফ এবং পুলিশের সমন্বয়ে একটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। তদন্ত শেষে ফায়ারের সম্পৃক্ততার বিষয়টি জানানো হবে।
প্রতিবেশী দেশের সংঙ্গে শান্তিপূর্ণ বসবাস চান সীমান্তবর্তী মানুষজন। সেইসাথে সীমান্ত হত্যা বন্ধে সরকারের আশু পদক্ষেপ দাবি করেন তারা।
বিভি/এজেড
মন্তব্য করুন: