• NEWS PORTAL

  • শনিবার, ১০ মে ২০২৫

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

পরিবারের আপত্তিতে তোলা হয়নি শহীদ সাগরের লাশ

রাজবাড়ী প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৮:৪৩, ৮ মে ২০২৫

ফন্ট সাইজ
পরিবারের আপত্তিতে তোলা হয়নি শহীদ সাগরের লাশ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার নারুয়া ইউনিয়নের বিলটাকাপোড়া গ্রামের সাগর আহমেদের (২১) মরদেহ উত্তোলনে সম্মতি দেননি পরিবারের সদস্যরা ও এলাকাবাসী। বুধবার (৭ মে) সকাল ১১ টায় আদালতের নির্দেশে বালিয়াকান্দির সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এহসানুল হাকিম শিপনের নেতৃত্বে ময়নাতদন্তের জন্য কবরস্থান থেকে শহীদ সাগরের মরদেহ উত্তোলন করতে যায় ওই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মিরপুর মডেল থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) রাশেদুল ইসলামের একটি টিম। 

সরেজমিনে দেখা যায়, ম্যাজিস্ট্রেট সাগরের কবরের সামনে গেলে কবরস্থানে ছুটে যান শহীদ সাগরের বাবা মোঃ তোফাজ্জল, মা গোলাপী বেগম, চাচাতো ভাই সাইফুল ইসলামসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা। শহীদ সাগরের বাবা ও পরিবারের অন্যান্য সদস্য ও এলাকাবাসীর আপত্তিতে ধর্মীয় অনুভূতি বিবেচনায় লাশ কবরস্থান থেকে তোলা হয়নি। পরে পরিবারের আপত্তির মুখে লাশ উত্তোলন না করেই ফিরে যান ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এহসানুল হক শিপন বলেন, ঢাকার বিজ্ঞ চীফ মেট্রোপলিটন আদালতের জিআর ৭০/২৫ মামলার ২৪ মার্চ ২০২৫ তারিখের ১ নম্বর আদেশ মোতাবেক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ সাগরের লাশ উত্তোলন করে সুরতহাল করার জন্য আদালত আদেশ দিয়েছিলেন। আদালতের নির্দেশে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মিরপুর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাশেদুল ইসলামসহ পুলিশের একটি টিম শহীদ সাগরের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলনের জন্য গিয়েছিলেন। কিন্তু, পরিবারের সদস্যরা চাননি দীর্ঘদিন পর কবর থেকে তাদের সন্তানের মরদেহ তোলা হোক। বিশেষ করে, সাগরের বাবা কান্নায় ভেঙে পড়েন। সাগরের বাবাকে বলা হয়েছে, একটি লিখিত আবেদন দেওয়ার জন্য। আমরা বিষয়টি বিজ্ঞ আদালতকে অবগত করবো।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মিরপুর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রাশেদুল ইসলাম বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় মিরপুর ১০ গোল চত্তরে সাগর নিহত হন। তাকে রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার বিলটাকাপোড়া গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। পরে এ ঘটনায় মিরপুর মডেল থানা একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়। আমি কোর্টের আদেশ মোতাবেক লাশের ময়নাতদন্তের জন্য এখানে আসি। কিন্তু, পরিবারের আপত্তিতে আমরা লাশ উত্তোলন করিনি।

তিনি আরও বলেন, ২০২৫ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি শহীদ সাগরের চাচাতো ভাই মোঃ সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে ৪৮৬ জনকে এজাহার নামীয় আসামি করে ও অজ্ঞাত ২০০/৩০০ জনকে আসামি করে মিরপুর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় এখন পর্যন্ত ৩০ জনের মতন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে সাগরের বাবা তোফাজ্জল হোসেন বলেন, আমার ছেলেকে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। আমার ছেলের মরদেহ কবর থেকে তুলতে হলে আগে আমাকে কবরে শুইয়ে তারপর তুলতে হবে।

মামলার বাদী সাগরের চাচাতো ভাই সাইফুল ইসলাম বলেন, সাগরকে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, এটা সারা দেশের মানুষ জানে। এজন্য তার মরদেহ ময়নাতদন্তের প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না। তাই, আমরা মরদেহ উত্তোলনে আপত্তি জানিয়েছি।

বিভি/পিএইচ

মন্তব্য করুন: