ফেনীতে নামছে বন্যার পানি, বাড়ছে ভোগান্তি

উজানের পাহাড়ি ঢল এবং টানা বৃষ্টিতে ফেনীর ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলায় মুহুরী, কুহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর ২০টি স্থানে বাঁধ ভেঙে বন্যায় ডুবে যায় অনেক গ্রাম। ফুলগাজী ও পশুরাম উপজেলা থেকে বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। দেখা দিয়েছে জনভোগান্তি।
জানা যায়, ফেনী থেকে ফুলগাজী পর্যন্ত যান চলাচল কিছুটা স্বাভাবিক হলেও বন্ধ রয়েছে পরশুরাম সড়কে। যেসব এলাকা থেকে পানি সরে গেছে সেসব এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ স্বাভাবিক করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসন থেকে দেওয়া তথ্যমতে জানা যায়, মুহুরী নদীর পানি পরশুরাম পয়েন্টে বিপৎসীমার তিন মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে ছাগলনাইয়া পয়েন্টে হরিপুর এলাকা হয়ে মুহুরি নদীর পানি ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যার কারণে ছাগলনাইয়া, ফেনী সদর ও দাগনভূঁইয়ার কিছু গ্রাম বেশ কয়েকটি এলাকা নতুন করে প্লাবিত হয়েছে।
এদিকে গেল রাতে ফেনী শহরের পেট্রোবাংলা এবং আরামবাগ এলাকায় আবার কিছুটা পানি উঠেছিল। তবে সকালে নেমে গেছে। এ বন্যায় ৩৭ হাজার মানুষ পানিতে নিমজ্জিত ছিল। এখনো সাড়ে চার হাজার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছে। ৫০০০ মানুষ আশ্রয়কেন্দ্র থেকে ঘরে ফিরেছে। এখনো ৮৭টি আশ্রয়কেন্দ্র চালু রয়েছে। উপজেলাগুলোতে ১৬০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। দুর্গতদের মধ্যে ২২০০ প্যাকেট শুকনা ও অন্যান্য খাবার দেওয়া হয়েছে। বন্যায় সর্বশেষ ১১২টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যে ফুলগাজীতে ৬৭, পরশুরামে ২৭, ছাগলনাইয়ায় ১৫, ফেনী সদর ও দাগনভূঞায় দুটি গ্রাম।
ফেনী জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করে গণমাধ্যমকে জানান, জেলা-উপজেলা পর্যায়ে খাদ্য ও প্রয়োজনীয় সামগ্রীর পর্যাপ্ত বরাদ্দ ও মজুত রয়েছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ, মোবাইল নেটওয়ার্ক সচল রাখতে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড ও মোবাইল নেটওয়ার্ক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করা হচ্ছে। জনগণের নিরাপত্তায় বন্যাকবলিত কিছু এলাকায় সাময়িকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে।
ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আক্তার হোসেন মজুমদার গণমাধ্যমকে বলেন, পরশুরাম ও ফুলগাজী অংশে নদীর পানি বিপদসীমার অনেক নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও ছাগলনাইয়া ও ফেনী সদর অংশে পানি অনেক বাড়ছে। বাঁধের ভাঙনের স্থান দিয়ে পানি ঢুকছে। পানি কমার পরেই বাঁধ মেরামতের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বিভি/পিএইচ
মন্তব্য করুন: