দালালমুক্ত শ্রমিক সুবিধা নিশ্চিতের ঘোষণা দিলেন শ্রম সচিব

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেছেন, শ্রমিক স্বার্থ ও স্বাস্থ্য সুরক্ষায় শ্রম মন্ত্রণালয়, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের নানামুখী কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এসব কর্মকাণ্ডের সুফল যাতে প্রকৃত ভুক্তভোগী শ্রমিকসহ আরও অনেক বেশি সুবিধাভোগী শ্রমিকদের দোড়গোড়ায় দালালমুক্ত উপায়ে পৌছে দেওয়া যায় সেবিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্বশীল হতে হবে। শ্রমিক সংগঠের কার্যক্রম হবে কেবলই শ্রমিক স্বার্থের উদ্দেশ্যে কোনোভাবেই রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার হবে না। তাহলে কুষ্টিয়াতে যেভাবে বিএটি’র শ্রমিকদের দাবি আদায়ে শ্রম মন্ত্রণালয় শক্ত অবস্থান নিয়েছেন এবং শ্রমিক স্বার্থ সুরক্ষার একটা পথ রচিত হচ্ছে; একই ভাবে সকল সেক্টরের শ্রমিকরাও যদি কোন রাজনৈতিক হীন স্বার্থে নয় কেবলই শ্রমিকের অধিকার নিয়ে দাঁড়ায় তাদের পাশেও থাকবে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর।
শনিবার (১২ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টায় কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক তৌফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে শ্রম সচিব জেলার সকল ট্রেড ইউনিয়নভুক্ত সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সাথে এক মতবিনিময় সভা আয়োজন করেন। এ সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উক্ত কথা বলেন।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় কলকারখানা পরিদর্শন ও কুষ্টিয়ার নব নির্মিত ৬ তলা ভবনের উদ্বোধনে মোড়ক উন্মোচন করেন সচিব। এসময় সেখানে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর কুষ্টিয়ার উপমহাপরিদর্শক ফরহাদ ওয়াহাবসহ সকল কর্মকর্তা এবং জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সেখানে শ্রমিক নেতৃবৃন্দ তাদের দুঃখ বেদনার চিত্র তুলে ধরেন এবং শ্রম আইন অনুযায়ী ন্যায্য অধিকার বাস্তবায়নের দাবি জানান।
দেশের বৃহৎ চালের মোকাম কুষ্টিয়ার খাজানগর চাতাল শ্রমিক সমিতির সভাপতি মমতাজ আলী বলেন, ‘দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্প খাত হিসেবে স্থান করে নেয়া কুষ্টিয়া চালের মোকামে ছোট বড় মিয়ে ৪শতাধিক মিলে প্রায় ২৫ হাজার চাতাল শ্রমিক কাজ করে। অথচ এদের কারো কোন নিয়োগ পত্র নেই। নেই কোন নূন্যতম শ্রমিক অধিকার, না আছে সঠিক মজুরী, নেই কোন কাজের নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য ঝুঁকির কোন দায় এখানকার মিল মালিকরা বহন করেনা। তাই শ্রম মন্ত্রনালয় এবং কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের হস্তক্ষেপে এখানে ট্রেড ইউনিয়ন সহ ন্যায্য অধিকার আদায়ের দাবি করছি’। একই ভাবে রাস্তায় মালামল ও যাত্রী পরিবহন শ্রমিকদের নানা ভোগান্তি ও হয়রানির চিত্র তুলে ধরেন শ্রমিক নেতা বাবুল হোসেন। তার অভিযোগ প্রায় শতভাগ ক্ষেত্রে তাদের কোন নিয়োগপত্রও নেই। কোন কর্মঘন্টারও ঠিক নেই’।
কুষ্টিয়া জেলা স্বর্ণ শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনিচুর রহমান বলেন, ‘কর্মক্ষেত্রে তাদের সুপেয় পানি ও পয়:ব্যবস্থা না থাকায় প্রতিদিন ভোগান্তি পোহাতে হয়। এছাড়া দুর্ঘটনায় আহত শ্রমিকদের চিকিৎসা সহায়তা চেয়ে আবেদনের পর দুই বছর পেরিয়ে গেলেও তার কোন ফলাফল পাননি বলে অভিযোগ তার।
কুষ্টিয়া জেলা নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রাজন মালিথা জেলায় কর্মরত নির্মাণ শ্রমিকদের দু:খ দর্দশা ও মানবেতর জীবনের চিত্র তুলে ধরে কর্মস্থলে দুর্ঘটনায় আহত নিহত শ্রমিক ও তাদের পরিবাবের নিরাপত্তার দাবি করেন।
বিভি/পিএইচ
মন্তব্য করুন: