১১ বছরের শিশুকে পানিতে ডুবিয়ে হত্যার অভিযোগ, আটক ২

সাতক্ষীরায় পারিবারিক বিরোধের জেরে মোরসালিন নামের ১১ বছরের এক শিশুকে পানিতে ডুবিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর পৌনে একটার দিকে সদর উপজেলার কাশেমপুর গ্রামের সরদারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে একটি পুকুরে এ ঘটনাটি ঘটে।
এঘটনায় বিক্ষুব্ধ জনতা ঘাতক মাহফুজুর রহমান শাওন ও তার মা নাজমা আক্তারকে আটক করে গণধোলাই দিয়ে তাদেরকে একটি গাছের সাথে বেঁধে রাখে। পরে পুলিশ গিয়ে তাদেরকে সাতক্ষীরা সদর থানায় নিয়ে আসেন। এসময় পুলিশ নিহত শিশু মোরসালিনের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে পাঠান।
নিহত মোরসালিন সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কাশেমপুর গ্রামের নির্মাণ শ্রমিক রাজু আহমেদের ছেলে।
অপরদিকে, আটককৃত মাহফুজুর রহমান শাওন একই গ্রামের আইনজীবী সহকারী আবু সাঈদের ছেলে।
নিহতের বাবা নির্মাণ শ্রমিক রাজু আহমেদ জানান, তার সঙ্গে প্রতিবেশী আইনজীবী সহকারী আবু সাঈদের দীর্ঘদিনের বিরোধ চলছিল। আবু সাঈদ বিভিন্ন সময়ে তাকেসহ গ্রামের বহু নিরীহ মানুষকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করে হয়রানি করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। শুক্রবার দুপুরে শাওন ও মোরসালিন একইসাথে গোসলের সময় বাড়ির পাশে জনৈক মাজেদের পুকুরে কলা গাছের ভেলা চড়ছিল। দুপুর পৌনে একটার দিকে মোরসালিন বাড়ি যাওয়ার জন্য ভেলা থেকে নামতে চাইলে এতে শাওন বাধা দেয়। একপর্যায়ে শাওন মোরসালিনকে পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করে।
অভিযুক্ত শাওনের দাদী আলেমা খাতুন জানান, তার ছেলে আবু সাঈদ এবং ছেলে বউ নাজমা তাদের স্বামী-স্ত্রীকে খুব নির্যাতন করে। তাদের থেকে তারা আলাদা থাকেন। শুক্রবার সকালে বাড়ির লেবু গাছ থেকে দুটি লেবু প্রতিবেশি রাজুর স্ত্রী রেহানার কাছে তিনি বিক্রয় করেন। এতে তার ছেলের বউ নাজমা ও পোতা ছেলে শাওন ক্ষিপ্ত হয়ে রাজুর ছেলেকে পানিতে চুবিয়ে মেরে ফেলেছে বলে তিনি জানান।
হত্যাকারীদের কঠিন শাস্তির দাবি জানিয়ে নিহত মোরসালিনের মা রেহানা খাতুন জানান, তিনি শাওনের দাদির কাছ থেকে দুটো লেবু কিনেছিলেন। এতে শাওন ও তার মা নাজমা তাকে প্রচুর গালিগালাজ করেন। এর ঘণ্টা দুই পর তার ছেলে মোরসালিন পুকুরে গোসল করতে গেলে শাওন তার মায়ের ইন্ধনে তার ছেলেকে চুবিয়ে মেরে ফেলে।
সাতক্ষীরা সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) শফিকুল ইসলাম জানান, মফিজুর রহমান শাওন একজন বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। শুক্রবার দুপুরে বাড়ির পাশে জনৈক মাজেদের পুকুরে গোসল করার সময় কলা গাছের ভেলা চড়ার একপর্যায়ে সে মোরসালিনকে পানিতে ডুবিয়ে মেরে ফেলে।
তিনি আরও জানান, বিক্ষুদ্ধ গ্রামবাসীর হাত থেকে শাওন ও তার মা নাজমা আক্তারকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। একই সাথে নিহত মোরসালিনের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান।
বিভি/পিএইচ
মন্তব্য করুন: