জনবল না থাকায় বন্ধ ঘোড়াশাল স্টেশন, দুর্ভোগে যাত্রীরা
ছবি: সংগৃহীত
নরসিংদী জেলার পলাশ উপজেলার ঐতিহ্যবাহী ঘোড়াশাল রেল স্টেশন ও ঘোড়াশাল ফ্লাগ স্টেশন জনবল না থাকায় অস্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এক কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত এই দুটি স্টেশনেই বর্তমানে কার্যক্রম বন্ধ থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা।
প্রতিদিন প্রায় ৪০০ যাত্রী যাতায়াত করেন ঘোড়াশাল রেল স্টেশন থেকে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায়। কিন্তু স্টেশনে কোনো স্টেশন মাস্টার না থাকায় ট্রেন সিগন্যাল ছাড়া চলাচল করছে, যার ফলে ট্রেন চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। এতে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে। সময়সূচি অনুযায়ী যাত্রীরা স্টেশনে এলেও ট্রেন কখন আসবে বা যাবে, তা কেউ নিশ্চিতভাবে বলতে পারেন না। যাত্রীরা ট্রেনে থাকা অন্য যাত্রীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ট্রেনের অবস্থান জানার চেষ্টা করেন।
দুটি স্টেশনের মধ্যে একটিতে কেবল একজন বুকিং সহকারী থাকলেও অন্যটি পুরোপুরি বন্ধ থাকায় একদিকে যাত্রীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন, অন্যদিকে অচল হয়ে পড়েছে রেলের মূল্যবান সম্পদ। পাশাপাশি সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব আয়। ব্রিটিশ আমলে ১৯১০ সালে নির্মিত এই দুটি স্টেশন বর্তমানে পাশের জিনারদী ও আড়িখোলা স্টেশন থেকে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে।
নিয়মিত যাতায়াতকারী কয়েকজন যাত্রী জানান, ট্রেনের অবস্থান জানতে তারা ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ভৈরব ও রায়পুরার যাত্রীদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেন। ঘোড়াশাল স্টেশনের বুকিং সহকারী থাকলেও তিনিও ট্রেনের অবস্থান সম্পর্কে কিছু বলতে পারেন না।
ঘোড়াশাল ফ্লাগ স্টেশনের বুকিং সহকারী মো. মাসুদ সরকার গণমাধ্যমকে বলেন, এখানে দীর্ঘদিন ধরে কোনো স্টেশন মাস্টার নেই। আমি একাই কোনোরকমে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।
সম্প্রতি ঘোড়াশাল রেল স্টেশনের একমাত্র স্টেশন মাস্টারকেও প্রত্যাহার করে নেওয়ায় বন্ধ রয়েছে সিগন্যালিংসহ আধুনিক কার্যক্রম। এতে সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছে চামড়াবো এলাকার একটি অরক্ষিত লেভেল ক্রসিং। আগে স্টেশন মাস্টার সিগন্যাল পাঠালে গেটম্যানরা গেট ফেলতে পারতেন। এখন সিগন্যাল বন্ধ থাকায় ট্রেনের শব্দ শুনে বা দূর থেকে দেখে গেট বন্ধ করতে হচ্ছে, ফলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেড়েছে।
ঘোড়াশাল রেল স্টেশনে ৩ জন স্টেশন মাস্টার, ৩ জন পয়েন্টসম্যান, ১ জন পোর্টার ও ১ জন পরিচ্ছন্নতা কর্মীর পদ থাকলেও বর্তমানে কেবল একজন বুকিং সহকারী দিয়ে কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।
ঘোড়াশাল ফ্লাগ ও রেল স্টেশন নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে জানতে চাইলে জিনারদী স্টেশন মাস্টার হাসানুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কথা বলতে পারবেন না।
দুর্ঘটনা প্রতিরোধ ও যাত্রীদের ভোগান্তি কমাতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত জনবল নিয়োগ দিয়ে বন্ধ হয়ে যাওয়া এই ঐতিহ্যবাহী ঘোড়াশাল রেল স্টেশন দ্রুত চালু করবে এমন প্রত্যাশা করছেন এলাকাবাসী।
বিভি/এআই




মন্তব্য করুন: