• NEWS PORTAL

  • বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫

পর্বত দিবসে পাহাড় বাঁচানোর আহ্বান, রাঙ্গামাটিতে বিপন্ন প্রতিবেশ

নন্দন দেবনাথ, রাঙ্গামাটি

প্রকাশিত: ১৩:১৭, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫

ফন্ট সাইজ
পর্বত দিবসে পাহাড় বাঁচানোর আহ্বান, রাঙ্গামাটিতে বিপন্ন প্রতিবেশ

আজ ১১ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক পর্বত দিবস। পাহাড়ের পরিবেশ রক্ষা এবং টেকসই পাহাড় ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব তুলে ধরতেই প্রতিবছর এ দিবস পালিত হয়। পাহাড় কাটা, বন নিধন ও অপরিকল্পিত বসতির কারণে ঝুঁকি বাড়ছে মানুষের জীবন ও প্রকৃতির।  

রাঙ্গামাটির সবুজ পাহাড়, কৃত্রিম কাপ্তাই লেক আর ঝরণাময় নৈসর্গিক সৌন্দর্য বহু বছর ধরে রেখেছে পার্বত্য চট্টগ্রামকে। কিন্তু, জনসংখ্যার চাপ, বেপরোয়া পাহাড় কাটা আর নির্বিচারে বন উজাড়ে আজ বিপন্ন এই পাহাড়।

বনজ সম্পদ আহরণ, পাথর উত্তোলন আর অপরিকল্পিত বসতি শুধু পাহাড়কেই বিপন্ন করেনি; বর্ষায় ভূমিধসেও প্রাণহানি বাড়ছে। পাহাড় ধসের কারণে সীতারাম পাহাড়সহ কাপ্তাই জাতীয় উদ্যান ও রাঙ্গামাটির অসংখ্য পাহাড় আজ বিপর্যয়ের মুখে। এতে যেমন কমছে জীববৈচিত্র, তেমনি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষি, পর্যটন আর স্থানীয় অর্থনীতি।

পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের পাহাড়গুলোর সঠিক সমীক্ষা নেই। জরুরি ভিত্তিতে সার্ভে হলে পাহাড় রক্ষায় সরকার-বেসরকারি উদ্যোগ আরও কার্যকর হবে। পরিবেশ রক্ষায় নীতিমালা থাকলেও এর বাস্তব প্রয়োগ সীমিত, বলছে নাগরিক সমাজ ।

রাঙ্গামাটি পাবলিক কলেজ এর অধ্যাপক মুকুল কান্তি ত্রিপুরা বলেন, পাহাড়, লেক, গিরি, ঝরনার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের নৈসর্গিক লীলাভূমি পার্বত্য চট্টগ্রাম। এই পাহাড় আছে বলে পার্বত্যাঞ্চল অনেক সুন্দর। এখানের পাহাড়গুলোর যে সমীক্ষা হওয়া দরকার সে সমীক্ষা এখনও আমরা পাইনি। যেটা সবচেয়ে জরুরি বর্তমান সময়ে এ সমীক্ষাটা করে ফেলা দরকার। এর মাধ্যমে যথায়ত তথ্য থাকলে তাহলে আমরা তা রক্ষা করতে পারি সবাই মিলে। সরকারি-বেসরকারি প্রশাসনের পক্ষ থেকে সে প্রচেষ্টা আমরা নিতে পারি।

রাঙ্গামাটি জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি সভাপতি ওমর ফারুক বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিবেশ প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র রক্ষার ক্ষেত্রে পাহাড়ের অনন্য সাধারণ ভূমিকা আছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা এ প্রাকৃতিক সম্পদকে কাজে লাগাতে পারছি না। এখানে পাহাড় ও পরিবেশ এর যথেচ্ছভাবে ব্যবহার হচ্ছে। চমৎকার সব নীতিমালা আছে কিন্তু, এর বাস্তবিক প্রয়োগ সব সীমিত। সরকারি পর্যায়ে যখন পাহাড় কাটা হয় কিংবা পরিবেশকে নিধন করা হয়, তখন বিষয়টা আমাদের দুঃখ দেয়। এটি কোন অবস্থাতেই কাম্য নয়। আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদকে রক্ষা করতে হবে এবং এটাকে যথাপোযুক্ত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এটাকে ব্যবহার করতে হবে। বিল্ডিং কোড থেকে শুরু করে পাহাড়ে স্থাপত্য নির্মাণের যে কৌশল আছে সে কৌশলগুলো অবলম্বন করতে হবে। আইনের সঠিক প্রয়োগ করতে হবে এবং এ বিষয়ে জনসচেতনতা গড়ে তুলতে হবে।  

পরিবেশ অধিদপ্তর রাঙ্গামাটির সহকারী পরিচালক মোঃ মোমিনুল ইসলাম বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম হলো পাহাড়ি এলাকা। এখানের ভূমি গঠন ৯০ ভাগই উঁচু পাহাড় নিয়ে রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান জেলা গঠিত। দেশের ১৬টি জেলায় পাহাড় রয়েছে। পুরো বাংলাদেশে ১৫ লক্ষ ৪১ হাজার হেক্টর পাহাড়ি ভূমি রয়েছে। এর মধ্যে রাঙ্গামাটি জেলায় উচুঁ নিচু মিলে রয়েছে ৪ লক্ষ ৭৫ হাজার হেক্টর পাহাড়ি এলাকা ও পাহাড়ি ভূমি। এর মধ্যে ৮১ হাজার ৬০ হেক্টর উচুঁ পাহাড়। ইতোপূর্বে  পাহাড় রক্ষায় পরিবেশ অধিদপ্তরএর বিভিন্ন কার্যক্রম বিভাগীয় চট্টগ্রাম থেকে পরিচালিত হতো। ২০২৪ এর নভেস্বর থেকে রাঙ্গামাটি থেকে পরিবেশ অধিদপ্তরের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। পাহাড় রক্ষায় জনসচেতনতামূল কার্যক্রমকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।

বিভি/পিএইচ

মন্তব্য করুন:

Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2