৪৫ ফুট গর্ত করেও মেলেনি সাজিদের সন্ধান, নতুন সিদ্ধান্ত ফায়ার সার্ভিসের
রাজশাহীর তানোরের কয়েলের হাট মধ্যপাড়া এলাকায় দুই বছরের শিশু সাজিদকে ২৪ ঘণ্টা পার হলেও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এরই মধ্যে ৪৫ ফুট গভীর পর্যন্ত গিয়ে শিশুটিকে খুঁজে পাননি ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। তাই নতুন করে আরও ১০ ফুট গর্ত খননের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) বিকাল ৪টার দিকে এ প্রতিবেদন লেখার সময়ও উদ্ধারকাজ চলমান আছে।
ঘটনাস্থল থেকে ব্রিফিংয়ে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তাজুল ইসলাম বলেন, গর্তটি ১৫০ থেকে ২০০ ফুট গভীর। এর ভেতরে যেকোনো জায়গায় শিশুটি আটকে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। বিশ্বের কোথাও এমন কোনো প্রযুক্তি নেই যে, এত গভীর গর্ত থেকে তাৎক্ষণিক কাউকে উদ্ধার করবে। নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে আমরা পাশে গর্ত করে অনুসন্ধান চালাচ্ছি। এত গভীরে পৌঁছাতে বিভিন্ন উন্নত দেশেও ৭৫-৭৮ ঘণ্টা সময় লাগে।
প্রথম পর্যায়ে ৩৫ ফুট পর্যন্ত গর্তে ক্যামেরা পাঠানো হলেও কিছু দেখা যায়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন ৪৫ ফুট পর্যন্ত নামতে পেরেছে ফায়ার সার্ভিস। আমরা সর্বোচ্চ প্রযুক্তি ব্যবহার করছি।
এর আগে, বুধবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কয়েক দফা চেষ্টায় নলকূপের ৩০ ফুট গর্তে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ক্যামেরা নামায়। কিন্তু ওপর থেকে পড়া মাটি ও খড়ের কারণে শিশুটি তারা দেখতে পায়নি। তবে একই দিন দুপুরে শিশুটির কান্নার আওয়াজ শোনা যায়।
শিশুটির মা রুনা খাতুন জানান, বুধবার দুপুর ১টার দিকে মেজো ছেলে সাজিদের হাত ধরে তিনি বাড়ির পাশের মাঠে যাচ্ছিলেন। এ সময় তার ছোট একটি সন্তান কোলে ছিল। হাঁটার সময় হঠাৎ পেছন থেকে সাজিদ মা বলে ডেকে ওঠে। পেছনে তাকিয়ে দেখেন, ছেলে নেই, গর্তের ভেতর থেকে মা, মা বলে ডাকছে। গর্তটির উপরে খড় বিছানো ছিল। ওখানে যে গর্ত ছিল, সেটা বুঝতে পারেননি তিনি নিজে কিংবা ছেলেও। ওই জায়গায় পা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ছেলে গর্তের ভেতর পড়ে যায়। লোকজন ডাকাডাকি করতে করতেই ছেলে গর্তের তলায় চলে যায়।
স্থানীয়রা জানান, এক বছর আগে জমির মালিক কছির উদ্দিন সেচের জন্য সেমিডিপ নলকূপ বসাতে গিয়ে এ গর্তটি খনন করেছিলেন; কিন্তু পানি না মেলায় কাজটি আর এগোয়নি। ফলস্বরূপ খোলা অবস্থাতেই রয়ে যায় বিপজ্জনক এ গর্তটি। গতকাল সেই অবহেলাই যেন প্রাণসংকটে ফেলেছে দুই বছরের নিষ্পাপ সাজিদকে। শিশুটির মা খড় তুলতে মাঠে গিয়েছিলেন। সে সময় খেলতে থাকা সাজিদ হঠাৎ গর্তে পড়ে যায়। প্রথমে স্থানীয়রা প্রাণপণ চেষ্টা করেও তাকে তুলতে পারেননি। খবর দেওয়া হয় ফায়ার সার্ভিসে।
বিভি/টিটি




মন্তব্য করুন: