‘আল্লাহ আমার ছাওয়াল শ্যাষ, মরা মুখটাও দেখালা না’-মায়ের আর্তনাদ
‘আল্লাহ আমার ছাওয়াল (ছেলে) শ্যাষ (শেষ) রে আল্লাহ... আমার ছাওয়ালকে ফিরিয়ে দাও। আমার ছাওয়ালের মরা মুখটাও দেখালা না রে...।’ এভাবেই আর্তনাদ করছিলেন শিশু সাজিদের মা।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজশাহীর তানোরে গভীর নলকূপের গর্তে পড়ে যাওয়া শিশু সাজিদের উদ্ধারকাজ দেখতে এসে বিলাপ করছিলেন মা রুনা খাতুন। কয়েকজন প্রতিবেশীর কাঁধে ভর দিয়ে তিনি যখন ঘটনাস্থলে আসেন, তখন তার কান্না আর আহাজারিতে পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে।
রাজশাহীর তানোর উপজেলায় গভীর নলকূপের গর্তে পড়ে যাওয়া দুই বছরের শিশু সাজিদকে উদ্ধারে ৩০ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এখনো সফল হননি উদ্ধারকর্মীরা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত শিশুটির কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের পাশাপাশি উদ্ধারকাজে সর্বাত্মক চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাইজুল ইসলাম বলেন, ‘মাটির ওপর থেকে ৪২ ফুট গভীরতা পর্যন্ত খুঁড়েও শিশুটির সন্ধান পাওয়া যায়নি। শিশুটিকে উদ্ধারে খননের কোনো বিকল্প নেই। সে কারণে বড় পরিসরে খোঁড়া হচ্ছে। শিশুটিকে উদ্ধারে আরও সময়ের প্রয়োজন।’
ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মোহাম্মদ শাহজাহান। তিনি উদ্ধারকাজে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন এবং উদ্ধারকর্মী ছাড়া বাকিদের ঘটনাস্থল থেকে দূরে সরে যাওয়ার অনুরোধ জানান।
এর আগে তিনটি এস্কেভেটর দিয়ে খননকাজ চালানো হয়। খনন করা গর্ত থেকে সুড়ঙ্গ খুঁড়ে শিশুটি যে পাইপে পড়েছে সেখানে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন উদ্ধারকারীরা। তবে পানি ও কাদার কারণে উদ্ধারকাজে বেগ পেতে হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত বুধবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তানোর উপজেলার পাচন্দর ইউনিয়নের কোয়েলহাট পূর্বপাড়া গ্রামের রাকিব উদ্দীনের ছেলে সাজিদ গভীর নলকূপের গর্তে পড়ে যায়। এরপর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কয়েক দফা নলকূপের ৩০ ফুট গর্তে ক্যামেরা নামায় ফায়ার সার্ভিস। কিন্তু ওপর থেকে পড়া মাটি ও খড়ের কারণে শিশুটিকে দেখা যায়নি। তবে বুধবার দুপুরে শিশুটির কান্নার আওয়াজ শোনা গিয়েছিল।
বিভি/টিটি




মন্তব্য করুন: