আজ মানিকগঞ্জ হানাদারমুক্ত দিবস
আজ ১৩ ডিসেম্বর, মানিকগঞ্জ হানাদারমুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাক হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসরদের পরাজিত করে জেলা সম্পূর্ণভাবে মুক্ত করেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। উত্তোলন করা হয় স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা, আর মুক্তির উল্লাসে ফেটে পড়ে মানিকগঞ্জের মানুষ।
জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আ. মান্নান জানান, মুক্তিযোদ্ধারা ভারত থেকে অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ নিয়ে ১৯৭১ সালের জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ শুরু করেন। ১ এপ্রিল পাক সেনারা হেলিকপ্টারের মাধ্যমে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক দখল করে মানিকগঞ্জসহ আশপাশের এলাকা দখলে নেয়। জেলায় বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত হয় ছোট-বড় কয়েকটি উল্লেখযোগ্য যুদ্ধ।
২২ নভেম্বর তেরশ্রী, সেনপাড়া, বড়রিয়া ও বড়বিলা গ্রামে হামলা চালিয়ে পাকবাহিনী হত্যা করে ৪৩ জন নিরীহ মানুষকে। ১০ ডিসেম্বর মিরপুরে মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পে আক্রমণের পর দুই ঘণ্টার সম্মুখযুদ্ধ হয়। সবচেয়ে বড় যুদ্ধ হয় সিংগাইরের গোলাইডাঙ্গায়, যেখানে ৮১ পাক সেনা নিহত হয়।
১১ ডিসেম্বর ঘিওরে আরও তীব্র সংঘর্ষের পর পাকবাহিনী পিছু হটে। অবশেষে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবল প্রতিরোধে ১৩ ডিসেম্বর মানিকগঞ্জ থেকে পাক সেনারা পালিয়ে যায়। এসব যুদ্ধে প্রাণ হারান ৫৪ বীর মুক্তিযোদ্ধা। ১৩ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা মানিকগঞ্জ পিটিআই ভবনে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন। পরে দেবেন্দ্র কলেজ মাঠে আবারও উত্তোলিত হয় জাতীয় পতাকা। সেই থেকে দিনটি মানিকগঞ্জে হানাদারমুক্ত দিবস হিসেবে শ্রদ্ধা ও গৌরবে পালন করা হচ্ছে।
বিভি/এসজি




মন্তব্য করুন: