• NEWS PORTAL

  • বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪

যাকে মা ডাকতো সে-ই তুলে ফেললো আলিফের দু’চোখ

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২২:২৯, ১৪ মার্চ ২০২২

ফন্ট সাইজ
যাকে মা ডাকতো সে-ই তুলে ফেললো আলিফের দু’চোখ

শিশু আলিফ হোসেন ফারহানকে (৭) নৃশংসভাবে নির্যাতনের অভিযোগে তার মামী রানী বেগমকে (২২) আটক করেছে পুলিশ। আলিফ চরবালিথা গ্রামের মঈনুদ্দীন সরদারের ছেলে। সোমবার (১৪ মার্চ) সন্ধ্যায় দেবহাটা উপজেলার চরবালিথা গ্রাম থেকে রানী বেগমকে আটক করা হয়। রানি আলিফের মামা আশরাফুল ইসলামের স্ত্রী।

এর আগে দুপুরে চরবালিথা এলাকায় মরিচ্চাপ নদীরপাড় থেকে ক্ষত-বিক্ষত ওই শিশুকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয়রা। পরে তারা তাকে দ্রুত সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করার পর সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে বিকালে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। 

আটককৃত রানী বেগম (২২) চরবালিথা গ্রামের আশরাফুল ইসলামের স্ত্রী। তারা দু’জনই নির্যাতিত শিশুটির আপন মামা ও মামী। 

উদ্ধারকারী শিশুটির ছোট মামা আশিকুজ্জামান জানান, আমি মরিচ্চাপ নদীরপাড় দিয়ে হেঁটে বাড়ি ফিরছিলাম। এসময় উপুড় হয়ে তাকে পড়ে থাকতে দেখি। পরে চিৎ করে তাকে চিনতে পারি সে আমার ভাগিনা। তার চোখে ধারালো কিছু দিয়ে খুচিয়ে রক্তাক্ত জখম করা হয়েছে। আর ঠোট কেটে ক্ষত-বিক্ষত করা হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসি। 

আলিফের বাবা মঈনুদ্দীন সরদার জানান, আমার প্রথম স্ত্রী শারমীন সুলতানা মারা যাওয়ার পরে শিশু ছেলে আলিফ একই গ্রামে তাঁর নানী সকিনা খাতুনের কাছে থাকতো। সৎ মায়ের অত্যাচার ছেলেটাকে যেন সইতে না হয়, সে জন্য নানীর কাছে তাকে রাখা হয়েছিল। তবে, ওর মামী রাণী বেগম প্রায়ই তাঁর উপর অত্যাচার করতো বলে তিনি জানান। 

সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক পারভীন আক্তার জানান, আমরা আশঙ্কা করছি, ফারহানের দুটো চোখই নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাঁর ঠোট, গলা ও গায়ের কয়েক জায়গায় কাটা দাগ রয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। 

সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে শিশুটির মামী রানী বেগম (যাকে সে মা বলে ডাকতো) তাকে বসতঘরের মধ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে দুই চোখ খুচিয়ে-খুচিয়ে মারাত্মক ভাবে রক্তাক্ত জখম করে এবং তার চোখের আশে পাশে, মুখমন্ডলে, নাকে মুখে, ঠোটে রক্তাক্ত জখম করে। এরপর রানী বেগম শিশুটিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার গলায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুত্বর জখম করে। শিশু আলিফ মৃত্যুবরণ করেছে মনে করে ফেলে রেখে যায়। তিনি আরো জানান, আটক রানী বেগমকে বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

বিভি/এজেড/এইচএস

মন্তব্য করুন: