ধর্মঘটে রাস্তা ফাঁকা, কার নির্দেশে বন্ধ চাকা?

ঢাকাগামী বাস চলাচল বন্ধের ৩দিনেও কেউ বলতে পারছে না কে বা কারা কর্মবিরতি করছেন। সারি সারি বাস রয়েছে আর প্রতিদিনের মতোই চালক শ্রমিকরা আসছেন বাসস্ট্যান্ডে।
যদিও নাম প্রকাশের অনিচ্ছায় কয়েকজন শ্রমিক জানিয়েছেন, বাসের ড্রাইভার-হেলপারসহ কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধি, পুলিশি হয়রানি বন্ধসহ ৫ দফা দাবিতে মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) সকাল থেকেই অঘোষিত রংপুর থেকে ঢাকাগামী বাস চলাচল আংশিক বন্ধ রাখা হয়েছে।
তবে কে বন্ধ রেখেছে, বা কার নির্দেশে চলছে, মালিক সমিতি না শ্রমিক ইউনিয়ন, সে ব্যাপারে কেউ কথা বলছেন না। এসব বিষয়ে বিভিন্ন বাসের কাউন্টার ম্যানেজার-কর্মচারী কেউই জানেন না বলে জানান।
এদিকে বাস না চলার ব্যাপারে বুধবার রাতে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে বসা হলেও মেলেনি কোন সদুত্তর। যদিও রংপুর জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মজিদ সাফ জানিয়েছেন, শ্রমিকরা কর্মবিরতি করছেন না। কারা করছে তাও তিনি জানেন না। রমজান মাসে ধর্মঘট ডেকে মানুষকে দুর্ভোগে ফেলা উচিত হচ্ছে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
জেলা মোটর মালিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আফতাবুজ্জামানও ধর্মঘটের ব্যাপারে কিছু জানেন না বলে জানান।
আরও পড়ুন:
অন্যদিকে যাত্রী মোশারফ হোসেন বলেন, তিনি ঢাকায় যাবেন বলে এসআর ট্রাভেলস এ টিকেট অগ্রিম কেটেছিলেন। টার্মিনালে এসে জানতে পারলেন বাস চলবে না। কেন চলবে না কেউ বলে না। তিনি বলেন, দেশে কি আইন নেই, প্রশাসন নেই, ধর্মঘটের নামে যে নাটক শুরু করা হয়েছে, এটা বন্ধ করার কি কেউ নেই?
নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইশরাত । তিনি আগমনী এসিতে টিকেট কেটেছিলেন। অগ্রিম এখানে এসে শুনছেন বাস যাবে না। ধর্মঘট চলছে কি-না, কেনই বা বাস চলাচল করছে না, কেউ কিছু বলে না। আমরা যাত্রীরা জিম্মি, বাস মালিক শ্রমিকদের ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপর।
কামারপাড়ায় ঢাকা কোচস্ট্যান্ডে এসআর ট্রাভেলস, আগমনী, হানিফ পরিবহন, নাবিলসহ বেশির ভাগ কোম্পানির কাউন্টার বন্ধ ছিল। কর্মচারীরা বলছেন, বাস ধর্মঘট কেন হচ্ছে আমরা জানি না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কাউন্টার ম্যানেজার জানান শ্রমিক ইউনিয়নের বড় নেতা বললেই বাস চলাচল শুরু হয়। কিন্তু উনি তো কিছুই বলছেন না। মালিক সমিতির লোকজনও কথা বলছেন না। এটা নাটক করা হচ্ছে। রমজানের শুরুতেই বাস বন্ধ থাকায় অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
তবে সকালে এনা পরিবহন, ফতেহ আলী পরিবহন শ্যামলী পরিবহনসহ কয়েকটি বাস টার্মিনাল ছেড়ে যেতে দেখা যায়। তবে কয়েকজন যাত্রী বললেন যে সব কোম্পানির গাড়ি চলছে এসব গাড়িতে চলাচল করা নিরাপদ নয় ভেবে বিকল্পভাবে মাইক্রোবাস-প্রাইভেটকারে ঢাকা যাচ্ছেন তারা।
নগরীর মর্ডান মোড়ে দেখা গেছে মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার ও দিনাজপুর, কুড়িগ্রাম লালমনিরহাট, ঠাকুরগাঁও থেকে ঢাকাগামী গাড়িতে যাত্রীরা ঢাকার উদ্দেশে যাচ্ছেন।
শ্যামলী পরিবহন কাউন্টার কর্তব্যরত সাফিউল ইসলাম জানান, আমাদের মালিকপক্ষ বাস চালু রাখতে বলেছেন। সকাল থেকেই নির্ধারিত সময়ে বাস ছাড়ছি।
বাস মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্যাহ’র মালিকানাধীন এনা পরিবহনের সব বাস ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা অব্যাহত রেখেছে। একই অবস্থা ফতেহ আলী পরিবহনের। তবে যাত্রীদের সংখ্যা তুলনামূলক কম হওয়ায় এই সব কোম্পানির অনেক বাস বন্ধ রাখা হয়েছে বলে কাউন্টার ম্যানেজাররা জানান।
বিভি/জেএ/এজেড
মন্তব্য করুন: