স্বামীকে বেঁধে স্ত্রীকে ধর্ষণ, ১৮ বছর পর রায়ে দুজনের যাবজ্জীবন

প্রতীকী ছবি
রংপুরে স্বামীকে গাছে বেঁধে রেখে গৃহবধুকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় দায়ের করা মামলার রায় অবশেষে ঘোষণা হয়েছে। ওই মামলার দুজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। কিন্তু এই রায় যখন ঘোষিত হয়েছে, ততদিনে পেরিয়ে গেছে ১৮টি বছর।
রংপুরের পীরগঞ্জে স্বামীকে গাছের সাথে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে অপহরণ করে তুলে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় দুই আসামীকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) সন্ধ্যায় রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত ৩ এর বিচারক এম আলী আহাম্মেদ এ রায় প্রদান করেন। রায় ঘোষণার সময় দুই আসামী আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০০৪ সালের ১ সেপ্টেম্বর রাতে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার একবারপুর দক্ষিণপাড়া গ্রামের শওকত শেখের ছেলে মিলন শেখ তার স্ত্রীকে নিয়ে আত্মীয়র বাসা থেকে দাওয়াত খেয়ে বাসায় ফিরছিল। ফেরার পথে একরামুল হক ও আবুল কালাম আজাদ তাদের পথরোধ করে অস্ত্রের মুখে স্বামী মিলন শেখকে একটি গাছের সাথে বেঁধে রেখে তার স্ত্রীকে অপহরণ করে তুলে নিয়ে মাদারগঞ্জ কলেজের পার্শ্বে নিয়ে গিয়ে ধর্ষন করে ফেলে রেখে যায়। তাদের চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে এসে স্বামী-স্ত্রীকে উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় নির্যাতিতা গৃহবধুর স্বামী মিলন শেখ বাদী হয়ে পীরগঞ্জ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করে। তদন্ত শেষে মামলার তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা এসআই ইকবাল বাহার দুই আসামীর বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে।
মামলায় ১৫ জন সাক্ষীর মধ্যে আদালতে ১২জন সাক্ষী সাক্ষ্য প্রদান করে। দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে মামলা চলার পর অবশেষে বৃহস্পতিবার বিজ্ঞ বিচারক দুই আসামী একরামুল হক ও আবুল কালাম আজাদকে দোষী সাব্যস্ত করে ধর্ষনের অভিযোগে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড এব্ং অপহরনের অভিযোগে ১৪ বছর সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দিয়ে রায় প্রদান করেন। রায় ঘোষণার পর দুই আসামীকে পুলিশি পাহারায় কোট হাজতে নিয়ে যাওয়া হয় পরে তাদের কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
বাদী পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন বিশেষ পিপি এ্যাডভোকেট তাইবুর রহমান লাইজু এবং এপিপি এ্যাডভোকেট মাকজিয়া হাসান দীবা। তারা জানান, দেরীতে হলেও জঘন্য ঘটনার ন্যায় বিচার পেয়েছে বিচারপ্রার্থীরা। এর মাধ্যমে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় অগ্রগতি হলো বলে আমরা মনে করি।
অন্যদিকে আসামী পক্ষের আইনজিবী আব্দুস সালাম জানান, তার আসামি ন্যায় বিচার পায়নি তারা এ আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপীল দায়ের করবেন।
বিভি/জেএ/এজেড
মন্তব্য করুন: