• NEWS PORTAL

  • বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

গুপ্ত হামলার শিকার হয়ে নরসিংদী সদর থানার ডিউটি অফিসার আদনান জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে

মো. মাজহারুল পারভেজ, নরসিংদী 

প্রকাশিত: ১১:৪৩, ১৯ আগস্ট ২০২৩

আপডেট: ১১:৪৩, ১৯ আগস্ট ২০২৩

ফন্ট সাইজ
গুপ্ত হামলার শিকার হয়ে নরসিংদী সদর থানার ডিউটি অফিসার আদনান জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে

নরসিংদী সদর থানার আহত ডিউটি অফিসার আদনান

ডিউটিরত অবস্থায় গুপ্ত হামলার শিকার নরসিংদী সদর থানার ডিউটি অফিসার আদনান রহমান গুরতর আহত হয়ে ঢাকার একটি অভিজাত হাসপাতালে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। 

বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) রাত পৌনে একটার দিকে নরসিংদী সদর থানার সামনে এ গুপ্ত হামলার ঘটনা ঘটে। এর আগের দিন বুধবার একই হামলাকারী ঢিল ছোড়ে একই থানার আবদুল্লাহ নামে পুলিশের এক অপারেটরকে লক্ষ করে। এতে করে পুলিশের এই সদস্যের মাথা ফেটে যায়। অদৃশ্য কোনো এক কারণে জেলা ও থানা পুলিশ বিষয়গুলো ধামাচাপা দিয়ে রেখেছে। এমনকি ঘটনার দুই দিন হলেও এখনো পর্যন্ত এ ঘটনায় থানায় কোনো মামলা পর্যন্ত হয়নি। আহত পুলিশ সদস্য আদনান ময়মনসিংহ জেলার পাগলা থানার বীরখারুয়া গ্রামের এটিএম খলিলুর রহমানের ছেলে বলে জানা গেছে।

সদর থানা সূত্রে জানা গেছে, থানার পাশেই এক বাসায় এসআই আদনান তার সদ্য বিবাহিতা স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করতেন। বৃহস্পতিবার রাতে থানায় ডিউটি অফিসারে দায়িত্ব পালনকালে কাজের ফাঁকে রাত সাড়ে ১২ টার দিকে বাসায় যান রাতের খাবার খেতে। খাবার খেয়ে থানায় আসার পথে থানার সামনে ঈদগাহের কোনায় আসা মাত্রই আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা হামলাকারী পিছন দিক থেকে কাঠ বা বাঁশ দিয়ে আদনানের মাথায় পর পর উপর্যুপরি কয়েকটি আঘাত করে। 

এসময় তার মাথা ফেটে রক্ত বের হতে থাকে এবং সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে ডাক চিৎকার শুরু করতে থাকে। তখন হামলাকারী দ্রুত ঘটনা স্থল ত্যাগ করে। থানার একশো গজের মধ্যে নির্জন এই স্থানে মাঝ রাতে কেউ তাকে তখন বাঁচতে আসেনি। পরে রক্তাক্ত মাথা চেপে ধরে নিজে নিজেই থানার ভিতরে গিয়ে ডিউটিরত সেন্ট্রির সামনে গিয়ে আবার পরে যায় আদনান। তাঁর এই রক্তাক্ত অবস্থা দেখে সেন্ট্রি ডাক চিৎকার শুরু করলে সহকর্মীরা ছুটে এসে তাকে দ্রুত সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। পথিমধ্যে আহত আদনান কয়েকবার বমি করে। তার অবস্থা গুরতর দেখে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে দ্রুত ঢাকায় রেফার্ড করেন। পরে তাঁর সহকর্মীরা রাতেই এভারকেয়ার হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করায় তাকে।

নিউরো সার্জন আমিনুল ইসলাম এর তত্ত্বাবধানে বর্তমানে সে এভারকেয়ার হাসপাতালে আইসিসিইউতে চিকিৎসাধীন আছেন। আজ সকালে তার অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও এখনো আশংকামুক্ত নয় বলে জানিয়েছেন, এভারকেয়ারে তাঁর সঙ্গে থাকা সহকর্মী এসআই মাসুদ ও একমাত্র ভগ্নিপতি হানিফ খান। 

এদিকে একই থানায় পুলিশের উপর পর পর দুটি হামলার পর হামলাকারী থানার সামনে থেকে কিভাবে নির্বিঘ্নে পালিয়ে যায় তা নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে জনমনে। 

আহতের স্বজনরা জানায়, আদনান মাত্র ৭ মাস আগে ফরিদপুরের মেয়ে চৈতিকে বিয়ে করেছেন। স্বামীর এ অবস্থায় চৈতি একেবারে ভেংগে পড়েছেন। আহত স্বামীর শয্যাপাশে বসে নির্বাক হয়ে স্বামীর দিকে তাকিয়ে থাকে সে।

ভগ্নিপতি ফারুক আরো জানান, হাসপাতালের সকল ব্যয়ভার নরসিংদী জেলা পুলিশই বহন করছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে তাঁর দুই সহকর্মী এ প্রতিবেদককে বলেন, ঘটনার সময় একটি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে হামলাকারীকে শনাক্ত করা হলেও তাকে আটক করা যায়নি। হামলাকারীর নাম সাইফুল ইসলাম। তার গ্রামের বাড়ি সদর উপজেলার আলোকবালি গ্রামে। সেখানে তার থাকার জন্য কোনো ঘর বাড়ি নেই। সে একজন মাদক সেবনকারী ও মাদক ব্যবসায়ী বলে জানা গেছে। তার বিরুদ্ধে সদর থানায় মাদক সংক্রান্ত দুটি মামলা রয়েছে বলেও জানান তারা।

নরসিংদী সদর থানার ওসি আবুল কাশেম ভূইয়া ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমরা সার্বক্ষণিক তার চিকিৎসার খোঁজখবর রাখছি। কেনো এমন ঘটনা ঘটলো এমন এক প্রশ্নের জবাবে আবুল কাশেম বলেন, বিষয়টি জানার জন্য তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। হামলাকারী কোনো জঙ্গি সংগঠনের সদস্য কিনা বা এটা কোনো নাশকতা কি না এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, হামলাকারীকে আটকের পর তা নিশ্চিত হয়ে বলা যাবে। এখনই এ ব্যাপারে এর চেয়ে বেশি কিছু বলতে চাই না।

এদিকে এঘটনার পর স্থানীয়দের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। আতঙ্ক বিরাজ করছে পুলিশ সদস্যদের মধ্যেও। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, আসলে এক অনিরাপদ শহরের নাম নরসিংদী।

বিভি/রিসি

মন্তব্য করুন:

সর্বাধিক পঠিত
Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2