• NEWS PORTAL

শনিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩

বহুমাত্রিক ব্যবসার প্রলোভন দেখিয়ে কোটি টাকা হাতিয়ে নিল ৩ প্রতারক

পুঁজি বলতে ছিল শুধুই নানান কৌশলে লোভনীয় প্রলোভন দেখানোর ফাঁদ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৬:৩৯, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩

ফন্ট সাইজ
পুঁজি বলতে ছিল শুধুই নানান কৌশলে লোভনীয় প্রলোভন দেখানোর ফাঁদ

নিজেদের পুঁজি বলতে শুধুই ছিল নানান কৌশলে লোভনীয় প্রলোভন দেখানোর ফাঁদ। আর এই ফাঁদে পা দিয়ে কোটি টাকা খোয়ালেন কয়েকজন। এঘটনায় ৩ প্রতারককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- আব্দুল বারী ওরফে আফসার উদ্দিন খান ওরফে বজলুর রহমান (৬৬), মো. রাশেদ ওরফে রাসেল (৩৭) ও মো. নাঈম (৪৩)।

সংস্থাটি জানায়, গ্রেফতারকৃতরা নিজেদের পরিচয় দেন বড় ব্যবসায়ী। কখনো ফার্নিচারের ব্যবসায়ী, কখনো কেমিক্যালের ব্যবসায়ী। যখন যাকে যেভাবে প্রলুব্ধ করা যায়, সেই ব্যবসার নাম বলতেন তারা। এমন বহুমাত্রিক ব্যবসার লোভ দেখিয়ে প্রায় এক কোটি টাকার বেশি হাতিয়ে নেয় এই ‘রয়েল চিটার ডিপার্টমেন্ট’ নামের চক্রটি। শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর উত্তরা এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

রবিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পিবিআই ঢাকা মেট্রো উত্তর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পিবিআই-এর বিশেষ পুলিশ সুপার (এসপি) মো. জাহাঙ্গীর আলম।

তিনি বলেন, সাইফুল ইসলাম (৩২) নামের এক ব্যক্তি ২৬ শতক জমি বিক্রির জন্য অনলাইনে বিজ্ঞাপন দিলে ইঞ্জিনিয়ার শরীফ (৫০)-এর সঙ্গে পরিচয় হয়। তার মালিক আফসার উদ্দিন খাঁন ওরফে বজলুর রহমান মাসুদ ওরফে বারেক (৬৬) ওই জমি ক্রয় করবে বলে তাদের জমির কাগজপত্র নিয়ে উত্তরা ৬ নম্বর রোডে তাদের অফিসে আসতে বলেন। গত ১৭ জুলাই সাইফুল ইসলাম (৩২) তার এক পরিচিতজনকে নিয়ে অফিসে গেলে জমির মূল্য নির্ধারিত হয় এবং ১৯ জুলাই হাজীগঞ্জ চাঁদপুর জমি রেজিস্ট্রি করার জন্য যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। জমিজমার কথাবার্তা শেষ হওয়ার পর মোয়াজ্জেম হোসেন (৬৫) হঠাৎ করে অফিসারকে বলে তার মালিক ভারতীয় নাগরিক কিছু দামি ব্র্যান্ডের ঘড়ি ক্রয় করবেন। ঘড়ি দিতে পারলে প্রায় সাড়ে ৬ কোটি টাকার ব্যবসা হবে। আফসার তার ভারতীয় নাগরিক মালিককে আসতে বললে আধাঘণ্টা পর ভারতীয় নাগরিক পরিচয় দিয়ে ঘড়ি ক্রয়মূল্য নির্ধারণ করে ঘড়ি ক্রয় বাবদ অগ্রীম প্রায় ৩৫ লাখ টাকা দেয় এবং পরদিন অবশিষ্ট টাকা পরিশোধ করবে এবং ঘড়ি বুঝে নিবে বলে চলে যায়।

পিবিআই জানায়, পরে আফসার উদ্দিন খাঁন সাইফুলকে তাদের সাথে পার্টনার হিসেবে থেকে ২০ লাখ টাকা দিলে সবাই সমানভাবে ব্যবসার টাকা বণ্টন করে নেবে। পরদিন নগদ ২০ লাখ টাকা নিয়ে যায়।

এসপি বলেন, গতকাল শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর উত্তর এলাকা থেকে তিন প্রতারককে আমরা গ্রেফতার করেছি। এদের বিগত দিনেও আপনারা মিডিয়ার সামনে উপস্থাপন করতে দেখেছেন। এরা রয়েল চিটার ডিপার্টমেন্ট নামে যেসব গ্রুপ আছে তাদের সক্রিয় সদস্য। এ গ্রুপের মূলহোতা আব্দুল বারী বিভিন্ন সময় বিভিন্ন নাম দিয়ে থাকে তার। আমরা এ পর্যন্ত তার তিনটি আইডি কার্ডের নাম পেয়েছি। একটিতে নাম আফসার উদ্দিন, অন্যটিতে বজলুর রহমান। তার বিরুদ্ধে ২০১১ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ঢাকার বিভিন্ন থানায় মোট ছয়টি মামলা পাওয়া গেছে।

তিনি বলেন, আব্দুল বারী দীর্ঘদিন বিদেশে থাকতেন। বিদেশ থেকে আসার পরই তিনি এ প্রতারণার কাজে জড়িত হয়ে পড়েন। চক্রের সদস্য সংখ্যা নির্দিষ্ট নয়। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মানুষকে সম্পৃক্ত করে। এছাড়া একেক সময় একেক জায়গায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকে। নিজেদের পরিচয় দেন বড় ব্যবসায়ী তারা। কখনো ফার্নিচারের ব্যবসায়ী, কখনো কেমিক্যালের ব্যবসায়ী যখন যাকে যেভাবে প্রলুব্ধ করা যায় সে ব্যবসার নাম বলেন। এ প্রতারণার কাজ করতে গিয়ে এর আগে ৫ থেকে ৬ বার গ্রেফতার হয়েছেন বারী।

 

বিভি/এসএইচ/রিসি

মন্তব্য করুন: