শেয়ারবাজার নিয়ে গুজব রটানোর অভিযোগে গ্রেফতার ৩
শেয়ারবাজারে কারসাজি ও গুজব রটানোর অভিযোগে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (দক্ষিণ) বিভাগ।
শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) রাতে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর একাধিক এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। শনিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
তিনি বলেন, সম্প্রতি শেয়ারবাজারে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সাধারণ গ্রাহককে তাদের শেয়ার বিক্রি করে লাভের চাইতে লোকসান গুনতে হচ্ছে বেশি। এক শ্রেণির অসাধু ব্যক্তি এই শেয়ারের দাম নিয়ে কারসাজি করছেন। আবার কেউ কেউ গুজব রটাচ্ছেন। এসব অভিযোগে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গ্রেফতাররা হলেন- মো. আমির হোসাইন ওরফে নুরনুরানী (৩৭), নুরুল হক হারুন (৫২) ও আব্দুল কাইয়ুম (৩৯)।
ডিবি প্রধান বলেন, পুঁজিবাজার একটি স্পর্শকাতর জায়গা। দেশের অর্থনীতির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এখানে অনেক সাধারণ বিনিয়োগকারী তাদের সর্বস্ব নিয়ে এসে বিনিয়োগ করে থাকেন। অল্পতেই এখানে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক থাকে। একটি স্বার্থান্বেষী চক্র দীর্ঘদিন ধরে পুঁজিবাজার এবং দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, কমিশনের চেয়্যারম্যানসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির বিরুদ্ধে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রামে গোপনীয় গ্রুপ খুলে বিভিন্ন মিথ্যা, ভুয়া এবং প্রতারণামূলক তথ্য সরবরাহ করে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধীর জন্য সাধারণ বিনিয়োগকারীদের প্রতারিত করে আসছে।
তিনি বলেন, সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ব্যবহার করে আন্দোলনের নামে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করে আসছে চক্রটি। এ বিষয়ে পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, রমনা মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় ওই মামলায় তদন্ত করে এই তিনজনকে গ্রেফতার করে।
তিনি আরও বলেন, গ্রেফতারকৃত আসামিরা বিভিন্ন সময় আন্দোলনের নামে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ব্যবহার করে রাস্তা দখল করে উদ্দেশ্যমূলকভাবে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করে। তালিকাভুক্ত কোম্পানিতে বিভিন্ন ইস্যুতে চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দিলে ওইসব কোম্পানি সম্পর্কে অনলাইনে অপপ্রচার শুরু করে। এমনকি কোম্পানির অফিসগুলোতেও হামলা করে। গ্রেফতারকৃত আসামিরা পুঁজিবাজারে বিভিন্ন শেয়ার নিয়ে মিথ্যা তথ্য প্রদান করে দাম বৃদ্ধি করে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে উচ্চ মূল্যে বিক্রি করে এবং এসব করার জন্য গোপনীয় হোয়াটসঅ্যাপ/টেলিগ্রাম গ্রুপ। ব্যবহার করে।
এসব গ্রুপের সদস্যদের একটি নির্দিষ্ট ফি প্রদান করে গ্রুপে যুক্ত হতে হয়। আবার শেয়ারে প্রফিট হলে লভ্যাংশের অংশ দিতে হয়। লোকসান হলে তারা দায়িত্ব নেয় না। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইন অনুযায়ী যেকোনো শেয়ারের মূল্য নিয়ে তথ্য আদান- প্রদান সম্পন্ন অবৈধ। গ্রেফতারকৃত আসামি আমির হোসাইন (নূর নূরানী ছদ্মবেশ নাম ধারণ করে আছে) এর নামে বিস্ফোরক দ্রব্য দমন আইন ও বিশেষ কমতা আইনে ১১টি মামলা রয়েছে। নুরুল হক হারুন, বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের বিভিন্ন সদস্যদের একত্রিত হয়ে কোম্পানিগুলোতে চাঁদাবাজি করত। তাদের বিষয়ে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে এবং আরও কারা জড়িত আছে তাও খতিয়ে দেখছে বলে জানান ডিবি প্রধান।
বিভি/এসএইচ/টিটি
মন্তব্য করুন: