কবিরাজের কাণ্ডঃ কাগজে মাছের ছবি আঁকলেই হয়ে যাচ্ছে জীবন্ত!(ভিডিও)
বিশিষ্ট কবিরাজ হুমায়ুন। অনেক নাম-ডাক তার। কাগজে আঁকা মাছ মুহুর্তে গ্লাস ভর্তি পানিতে ফেলে জীবন্ত করতে পারেন তিনি। এমন তেলেসমাতি কাণ্ডে অনেকের কাছে পীরে কামেল হুমায়ুন নামেও পরিচিত তিনি।
মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করেন তিনি। ভালোবাসার মানুষের সংগে বিয়ে থেকে শুরু করে অবাধ্য স্বামী-স্ত্রীকে বশে আনা অথবা অসুস্থ রোগীকে সুস্থ করা বা চাকরিতে পদোন্নতি করে দেওয়াসহ সব ধরনের সমস্যার সমাধান আছে কবিরাজ হুমায়ুনের কাছে। এসব বলেই তিনি কাছে টানেন ভুক্তভোগীদের।
তেমনি এক ভুক্তভোগী আয়েশা আক্তার, একটি বীমা কোম্পানির ব্রাঞ্চ ম্যানেজার তিনি। হাঁটুর ব্যথায় নামাজ পড়তে পারতেন না আয়েশা। এক সহকর্মীর মাধ্যমে কবিরাজ হুমায়ুনের সন্ধান পেয়ে সমাধানের আশায় ছুটে তার কাছে। শুরু হয় চিকিৎসা। এক গ্লাস পানি নিয়ে এরপর আয়েশার সামনেই হাতে আঁকা দুটি মাছের ছবি চুবিয়ে দেওয়া হয় তাতে। মুহূর্তেই সৃষ্টি হয় দুটি জীবন্ত মাছ। বিস্মিত হন আয়েশা। আরও বিশ্বাস জন্মায় কবিরাজের প্রতি। সেই বিশ্বাসকে পুঁজি করে এই ভণ্ড কবিরাজ শুধু আয়েশার কাছ থেকেই হাতিয়ে নিয়েছেন আট লাখ টাকা।
এই কবিরাজের প্রতারণার শিকার হয়েছেন আরও অন্তত দুই শতাধিক ভুক্তভোগী। এভাবে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন হুমায়ুন। ভালোবাসার মানুষকে কাছে পাওয়ার আসায় হুমায়ুনের পাল্লায় পড়েছিলেন মিরপুরের বাসিন্দা সাথীও।
সাথী বলেন, প্রতারণার শিকার হওয়ার পর পুলিশ গিয়ে আমাকে উদ্ধার করেছিলো। প্রথমে বুঝতেই পারিনি এরা ভন্ড প্রতারক।
দীর্ঘদিন ধরে এই কবিরাজের কাণ্ড নজরদারি করছিলো ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগ। অবশেষে সম্প্রতি গাজীপুর ও ময়মনসিংহ থেকে এক সহযোগীসহ তাকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের পরই তার তেলেসমাতি কাণ্ডের রহস্য তুলে ধরেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার মশিউর রহমান।
তিনি বলেন, আধুনিক বিজ্ঞানের যুগেও মানুষ এখনও জ্বীন- ভূত বিশ্বাস করে। যে কারণে প্রতিনিয়ত প্রতারণার শিকার হচ্ছে। তাই এসব প্রতারণা থেকে বাঁচতে সচেতনতার বিকল্প নেই।
হুমায়ুনেই শেষ নয়। প্রতারণার এই সাম্রাজ্যে রয়েছে তারও গুরু। সেই গুরুকে খুঁজতে পুলিশী তৎপরতা চলছে বলেও জানান ডিবির এই কর্মকর্তা।
বিভি/এসএইচ/রিসি
মন্তব্য করুন: