• NEWS PORTAL

  • রবিবার, ০৫ মে ২০২৪

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি গ্রেফতার

প্রকাশিত: ১৪:১৪, ২৬ জুন ২০২২

আপডেট: ১৪:১৯, ২৬ জুন ২০২২

ফন্ট সাইজ
শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি গ্রেফতার

র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার জাকারিয়া পিন্টু

পাবনার ঈশ্বরদী রেল স্টেশনে ১৯৯৪ সালে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা শেখ হাসিনাকে বহনকারী ট্রেনে হামলা ও গুলিবর্ষণ করে হত্যাচেষ্টা করা হয়। বহুল আলোচিত সে মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এবং অস্ত্র মামলাসহ একাধিক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত, ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামি জাকারিয়া পিন্টুকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।  

কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

রবিবার (২৬ জুন) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

মঈন বলেন, ‘গত রাতে র‌্যাব-২ এর একটি আভিযানিক দল কক্সবাজারের টেকনাফ এলাকা থেকে জাকারিয়া পিন্টু (৫০)কে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সে প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার উদ্দেশ্যে ঈশ্বরদীতে ট্রেনে গুলিবর্ষণ ও বোমা হামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি।’

কমান্ডার মঈন বলেন, ‘১৯৯৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) ট্রেনযোগে খুলনা থেকে সৈয়দপুর যাচ্ছিলেন তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পথে ঈশ্বরদী রেল স্টেশনে পৌঁছালে সন্ধ্যা আনুমানিক ৬.২০ মিনিটে শেখ হাসিনাকে বহনকারী বগি লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। সে ঘটনায় পাবনার ঈশ্বরদীর জিআরপি থানায় বিষ্ফোরক দ্রব্যাদি আইনে ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে ১টি মামলা রুজু হয়। বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশে মামলা তদন্তের দায়িত্ব সিআইডিকে প্রদান করা হলে সিআইডির তদন্ত কর্মকর্তা ১৯৯৭ সালের ৩ এপ্রিল সর্বমোট ৫২ জনের বিরুদ্ধে চার্জশীট দাখিল করেন। এরমধ্যে পাঁচ জন আসামি মৃত্যুবরণ করায় তাদের ঐ মামলা থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়। বাকি ৪৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। পরবর্তীতে দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে ২০১৯ সালের ৩ জুলাই গ্রেফতারকৃত জাকারিয়া পিন্টুসহ ৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ২৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ১৩ জনকে ১০ বছর মেয়াদে কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।’

তিনি বলেন, ‘গ্রেফতার জাকারিয়ার নেতৃত্বে ঈশ্বরদীতে আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি, মারামারিসহ বিভিন্ন অরাজকতা চলতো। প্রথমে ১৯৮৮ সালে, পরবর্তীতে বিভিন্ন অপরাধে সম্পৃক্ততায় তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রুজু হয়। সেসব মামলায় গ্রেফতার এড়াতে সে এলাকা ত্যাগ করে ২০০৪ সাল থেকে ঢাকার মিরপুরে বসবাস শুরু করে। তার পরিবার ঢাকায় থাকলেও সে নিয়মিত ঈশ্বরদীতে যাতায়াত করতো। সে ২০১৫ সালে ঈশ্বরদীতে উপজেলা নির্বাচনে স্বতন্ত্রভাবে অংশগ্রহণ করে এবং পরাজিত হয়।’

গ্রেফতার পিন্টুর বরাত দিয়ে র‌্যাব জানায়, জাকারিয়া ১৯৯৪ সালে ঈশ্বরদীতে চম্পা হত্যা মামলার অভিযুক্ত আসামি এবং ২০০৯ সালে ঈশ্বরদীতে আজম হত্যা মামলায় অভিযুক্ত হয়ে কারাবরণ করে। পরবর্তীতে ২০১১ সালে অস্ত্রসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয় এবং তার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা থানায় একটি মামলা দায়ের হয়। এই মামলায় সে তিন মাস কারাভোগ করলেও পরবর্তীতে জামিনে মুক্তি নিয়ে ফেরারি হয়। ওই মামলায় বিজ্ঞ আদালত তাকে ১৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন।

এছাড়া ২০১২, ২০১৪ এবং ২০১৫ সালে আধিপত্য বিস্তার, বিভিন্ন সন্ত্রাসী ও ধ্বংসাত্বক কর্মকাণ্ডের জন্য তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১০টি মামলা দায়ের হয়। এ পর্যন্ত তার নামে ১টি মৃত্যুদণ্ড ও ১টি ১৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের সাজা পরওয়ানা ছাড়াও বিভিন্ন অপরাধে ৬টি গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় সর্বমোট ১৯টি মামলা রয়েছে।

২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রীকে হত্যাচেষ্টা মামলার রায় ঘোষণার পর থেকে সে আত্মগোপনে ছিল। রায় ঘোষণার পরের দিন আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজর এড়াতে সে দেশ ত্যাগ করে পাশ্ববর্তী দেশে আত্মগোপন করে। সেখানে কিছুদিন অবস্থানের পর পুনরায় দেশে ফিরে আসে। পরবর্তীতে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় সীমান্ত যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সে দেশের মধ্যে ঢাকা, রাজশাহী ও কক্সবাজারসহ বিভিন্ন জায়গায় আত্মগোপনে থাকে। সর্বশেষ কক্সবাজার এর টেকনাফে তার বন্ধুর বাসায় আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় র‌্যাব-২ তাকে গ্রেফতার করে।

বিভি/এসএইচ/এনএ

মন্তব্য করুন: