বিশ্ববাজারে কমতে শুরু করেছে স্বর্ণ-রুপার দাম, তবে কি পতনের শুরু?
দফায় দফায় রেকর্ড ভঙের পর স্বর্ণের বাজারে চোখে পড়ছে দামের পতন। বুধবার (২২ অক্টোবর) স্বর্ণ প্রায় দুই সপ্তাহের ন্যূনতম স্তরে নেমেছে। মার্কিন ইনফ্লেশন ডেটা প্রকাশের আগে বিনিয়োগকারীরা মুনাফা তুলে নেওয়ায় দাম কমেছে। আগের দিনেই পাঁচ বছরের মধ্যে একদিনে সবচেয়ে বড় দরপতনের পর এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্পট স্বর্ণের দাম ১.৭ শতাংশ কমে প্রতি আউন্স ৪ হাজার ৫৪.৬৯ হয়েছে। এর আগে সেশন শুরুতে দাম ৪ হাজার ১৬১.১৭ পর্যন্ত উঠেছিল। ডিসেম্বর ডেলিভারির মার্কিন স্বর্ণের ফিউচারও ০.৯ শতাংশ কমে ৪ হাজার ৭২.১০ প্রতি আউন্সে নেমেছে। মার্কিন ডলার সূচক এক সপ্তাহের সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছেছে, যা ডলারে মূল্যায়িত স্বর্ণকে আরও ব্যয়বহুল করছে।
হাই রিজ ফিউচারসের মেটালস ট্রেডিং ডিরেক্টর ডেভিড মেগার বলেন, গত কয়েক সপ্তাহে স্বর্ণের দাম অনেক বেড়েছে। শুক্রবারের মার্কিন সিপিআই রিপোর্টের আগে মুনাফা তোলা স্বাভাবিক।
কারিগরি দিক থেকে দেখা গেছে, স্বর্ণের দাম বর্তমানে ২১ দিনের চলমান গড় ৪ হাজার ৫ ডলারে সমর্থন পাচ্ছে। এখন বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টি শুক্রবার প্রকাশিত হতে যাওয়া যুক্তরাষ্ট্রের ভোক্তা মূল্য সূচক (সিপিআই) প্রতিবেদনের দিকে, যা ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হার কমানোর দিকনির্দেশনা দিতে পারে। স্বর্ণ একটি অ-ফলনশীল সম্পদ; তাই সুদের হার কমলে এর দাম সাধারণত বেড়ে যায়।
স্বর্ণের দাম সাধারণত কম সুদের পরিবেশে উপকৃত হয়। বিনিয়োগকারীরা মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের সম্ভাব্য সুদের হ্রাসকেও বিবেচনা করছেন।
অপরদিকে, রাশিয়া জানিয়েছে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্ভাব্য সামিটের প্রস্তুতি চলছে। বিনিয়োগকারীরাও ট্রাম্প-চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বৈঠকের বিষয়ে পরিষ্কার নির্দেশনার অপেক্ষায় রয়েছেন।
স্যাক্সো ব্যাংকের কমোডিটি স্ট্র্যাটেজি প্রধান ওলে হ্যানসেন বলেন, ২০২৬ পর্যন্ত স্বর্ণ ও রুপার জন্য ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি বজায় আছে। সাম্প্রতিক সংশোধনের পর ব্যবসায়ীরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবেন।
অন্যান্য ধাতুর মধ্যে, রুপার দাম ১ শতাংশ কমে ৪৮.২৭ ডলার, প্লাটিনাম ০.১ শতাংশ কমে ১ হাজার ৫৪৯.৮৫ ডলার এবং প্যালেডিয়াম ১.৬ শতাংশ কমে ১ হাজার ৪৩০ ডলার প্রতি আউন্সে নেমেছে।
দেশের বাজারে ২২ ক্যারেটের এক ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণের দাম পড়বে ২ লাখ ১৭ হাজার ৩৮২ টাকা। যা দেশের ইতিহাসে মূল্যবান এই ধাতুর সর্বোচ্চ দাম। পাশাপাশি ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ লাখ ৭ হাজার ৫০৩ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৭৭ হাজার ৮৫৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম পড়বে ১ লাখ ৪৮ হাজার ৭৪ টাকা।
এদিকে দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম বাড়ানো হলেও অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। বর্তমানে ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ৬ হাজার ২০৫ টাকায়। যা দেশের ইতিহাসে এক ভরি রুপার সর্বোচ্চ দাম। পাশাপাশি ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি রুপা ৫ হাজার ৯১৪ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি রুপা ৫ হাজার ৭৪ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৮০২ টাকায়।
বিভি/টিটি




মন্তব্য করুন: