• NEWS PORTAL

  • সোমবার, ০৬ মে ২০২৪

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে সুবাতাস, বেড়েছে প্রবাসী আয়

প্রকাশিত: ১৭:৪০, ১১ এপ্রিল ২০২২

ফন্ট সাইজ
এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে সুবাতাস, বেড়েছে প্রবাসী আয়

ছবি সংগৃহিত

দেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে পড়েছে এজেন্ট ব্যাংকিং। গত আট বছরে শহরের তুলনায় প্রান্তিক জনগণের কাছেই বেশি জনপ্রিয়তা পাচ্ছে এটি। প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স গ্রহণেও এ সেবা ক্রমর্শ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এসময়ে গ্রামীণাঞ্চলে এজেন্ট বেড়েছে ৮৫ দশমিক ৩১ শতাংশ এবং শহরাঞ্চলে ১৪ দশমিক ৬৯ শতাংশ। এদের মধ্যে নারী অ্যাকাউন্ট ৬৬ লাখ ৮০ হাজার ৭০২টি। যার মোট অ্যাকাউন্টের ৪৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ। এছাড়া পুরুষ অ্যাকাউন্ট সংখ্যা ৭২ লাখ ৩০ হাজার ৫৫৮টি যা মোট অ্যাকাউন্টের ৫১ দশমিক ৪৭ শতাংশ। এসব অ্যাকাউন্টের প্রবাসীরা এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে এসেছে ৭ হাজার ৬০৯ কোটি ৭৯ লাখ টাকা যা মোট রেমিটেন্সের ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ। অপরদিকে গ্রামীণ এজেন্ট ব্যাংকিং এসেছে ৭৪ হাজার ৭৩৩ কোটি ৪৭ লাখ টাকা যা মোট রেমিটেন্সের ৯০ দশমিক ৭৬ শতাংশ।   

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে, ২০২১ সালে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রবাসী আয় বা রেমিটেন্স এসেছে ৮২ হাজার ৩৪৩ কোটি ২৬ লাখ টাকার বেশি। যা একই বছরের সেপ্টেম্বর প্রান্তিক অপেক্ষা ১০ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ বেশি। আলোচিত সময়ে এজেন্টের মাধ্যমে রেমিট্যান্স সংগ্রহের দিক থেকে সবচেয়ে এগিয়ে বেসরকারি খাতের ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড। এ ব্যাংকের মাধ্যমেই মোট প্রবাসী আয়ের ৫৪ শতাংশ এসেছে। এর পরেই রয়েছে ডাচ-বাংলা ব্যাংক ২৪ শাতাংশ, ব্যাংক এশিয়া ১১ শতাংশ, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক এবং রাষ্ট্রায়ত্ত্ব অগ্রণী ব্যাংকের অবস্থান।

২০২১ সাল শেষে এজেন্ট ব্যাংকিং হিসাবধারীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক কোটি ৪০ লাখ ৪৭ হাজার ৪৯১টি। এসব হিসাবধারীর আমানতের পরিমাণ ২৪ হাজার ২৯৪ কোটি টাকা। যা তার আগের বছরের তুলনায় আট হাজার ৩১৬ কোটি টাকা বেশি। এর মধ্যে শহরে দুই হাজার ৩৩ কোটি এবং গ্রামে ২২ হাজার ২৬১ কোটি টাকার আমানত রয়েছে। ২০২০ সালে আমানতের পরিমাণ ছিলো ১৫ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা।

আমানতের সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে ঋণ বিতরণও। গেল বছর এ সেবাটির মাধ্যমে ঋণ বিতরণ করা হয়েছে ৫৩৪ কোটি টাকা। যা তার আগের বছর ২০২০ সালে ছিল ১৮৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ বছরের ব্যবধানে ঋণ বিতরণ বেড়েছে ৩৪৫ কোটি টাকা। ঋণ বিতরণের শীর্ষে রয়েছে ব্র্যাক ব্যাংক। এর পরেই রয়েছে ব্যাংক এশিয়া ও সিটি ব্যাংক। গত বছরে এ সবার মাধ্যমে বিভিন্ন ইউটিলিটি বিল পরিশোধ হয়েছে ১৩৫ কোটি ৬০ লাখ টাকার।

২০১৩ সালের ৯ ডিসেম্বর এজেন্ট ব্যাংকিং নীতিমালা জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপর ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে পাইলট প্রকল্প হিসেবে মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলায় প্রথম এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা চালু করে ব্যাংক এশিয়া।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, গ্রামীণ সুবিধা বঞ্চিত পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর কাছে ব্যাংকিং সুবিধা পৌঁছে দিতে এজেন্ট ব্যাংকিং চালুর উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর ও ব্যয়সাশ্রয়ী এ সেবায় গ্রাহক এজেন্ট আউটলেটে সহজেই তার বায়োমেট্রিক বা হাতের আঙুলের স্পর্শে হিসাব পরিচালনা করতে পারেন। ফলে কম খরচে সহজে ব্যাংকিং সেবা পাওয়ায় গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর কাছে এটি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সঠিকভাবে পরিচালনা করলে এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রমের মাধ্যমে আগামীতে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রতিটি ঘরে ঘরে ব্যাংকিংসেবা পৌঁছে দেওেয়া সম্ভব হবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী, ট্রেড লাইসেন্স রয়েছে এমন ব্যক্তি এজেন্টশিপ নিতে পারেন। তার শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকতে হয় ন্যূনতম এইচএসসি বা সমমান পাস। এজেন্ট ব্যাংকিং পরিচালনার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের সঙ্গে প্রত্যেক এজেন্টের একটি চলতি হিসাব থাকতে হয়। এ সেবার মাধ্যমে ছোট অঙ্কের অর্থ জমা ও উত্তোলন করা যায়। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স স্থানীয় মুদ্রায় বিতরণ, ছোট অঙ্কের ঋণ বিতরণ ও আদায় এবং এককালীন জমার কাজও করতে পারছেন। উপযোগ সেবা বিল পরিশোধের পাশাপাশি সরকারের অধীনে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির অর্থ দিতে পারছেন এজেন্টরা। এ ছাড়া নীতিমালা অনুযায়ী ব্যাংক হিসাব খোলা, ঋণ আবেদন, ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ডের নথিপত্র সংগ্রহ করতে পারছেন এসব এজেন্ট।

উল্লেখ্য, বিশ্বে প্রথম বারের মতো এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরু করে ব্রাজিল।

বিভি/এইচএস

মন্তব্য করুন: