• NEWS PORTAL

  • বুধবার, ০১ মে ২০২৪

নয় মাসে কৃষিঋণ বিতরণ সাড়ে ২১ হাজার কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৩:০৭, ২৬ এপ্রিল ২০২২

ফন্ট সাইজ
নয় মাসে কৃষিঋণ বিতরণ সাড়ে ২১ হাজার কোটি টাকা

চলতি ২০২১-২০২২ অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে (জুলাই-মার্চ) ২১ হাজার ৫০৪ কোটি টাকার কৃষিঋণ বিতরণ করতে সক্ষম হয়েছে ব্যাংকগুলো। বিতরণ করা এই অঙ্ক এ খাতের জন্য নির্ধারিত বার্ষিক ঋণ লক্ষ্যমাত্রার ৭৫ দশমিক ৭৪ শতাংশ। এর আগের অর্থবছরের একই সময়ে লক্ষ্যমাত্রার ৭০ দশমিক ৪১ শতাংশ কৃষিঋণ বিতরণ হয়েছিল।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, চলতি ২০২১-২০২২ অর্থবছরের পুরো সময়ে ২৮ হাজার ৩৯১ কোটি টাকার কৃষিঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ব্যাংকগুলোর। অর্থবছরের জুলাই-মার্চ সময়ে সবগুলো ব্যাংক মিলে কৃষি ও পল্লীঋণ খাতে ২১ হাজার ৫০৪ কোটি ২০ লাখ টাকা ঋণ বিতরণ করে।

২০২০-২০২১ অর্থবছরের জুলাই-মার্চ সময়ে কৃষি ও পল্লীঋণ বিতরণ হয়েছিল ১৮ হাজার ৫১৩ কোটি ৩১ লাখ টাকা। যা ছিল ওই অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রার ৭০ দশমিক ৪১ শতাংশ। ওই অর্থবছরে কৃষি ও পল্লীঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৬ হাজার ২৯২ কোটি টাকা।

পরিমাণের দিক থেকে চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে কৃষি ও পল্লীঋণ বিতরণ বেড়েছে ১৬ দশমিক ১৫ শতাংশ বা ২ হাজার ৯৯০ কোটি ৮৯ লাখ টাকা।

আলোচিত সময়ে কৃষি ও পল্লীঋণ আদায় হয়েছে ১৯ হাজার ৯৭৬ কোটি টাকা। যা বিতরণ করা কৃষিঋণের ৪০ শতাংশ। গত মার্চ পর্যন্ত বিতরণ করা কৃষিঋণের স্থিতি ছিল ৪৮ হাজার ৮৯১ কোটি টাকা।

ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, করোনা মহামারীর প্রকোপ কমে আসায় কৃষিঋণ বিতরণে গতি ফিরেছে। এই ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে অর্থবছরের বাকি সময়ে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ঋণ বিতরণ করতে পারবে ব্যাংকগুলো। তাছাড়া করোনার কারণে গত দুই অর্থবছরে কৃষিঋণের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ায় এ খাতের ঋণ বিতরণ নিয়ে ব্যাংক কর্মকর্তাদের মধ্যে থাকা অস্বস্তিও দূর হবে।

ব্যাংক কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, করোনার কারণে গত দুই বছরে কৃষিঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। এর আগের কখনোই এমন ঘটনা ঘটেনি। তবে এবার কৃষিঋণ বিতরণ পরিস্থিতি ভালো। অর্থবছরের বাকি তিন মাসে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব বলেও আশা প্রকাশ করেছেন তারা।

প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, গত ২০২০-২০২১ অর্থবছরে কৃষিঋণ বিতরণ হয় ২৫ হাজার ৫১১ কোটি টাকা। যা ওই অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রার ৯৭ শতাংশ। এর আগের অর্থবছরে (২০১৯-২০২০) কৃষিঋণ বিতরণ হয় ২২ হাজার ৭৪৯ কোটি টাকার। যা ওই অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রার ৯৪ শতাংশ। ওই অর্থবছরে ব্যাংকগুলোর ২৪ হাজার ১২৪ কোটি টাকার কৃষিঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। এর আগে প্রতি অর্থবছরেই কৃষিঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে সক্ষম হয় ব্যাংকগুলো। কোনো কোনো অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রার বেশিও কৃষিঋণ বিতরণ করতে সক্ষম হয় ব্যাংকগুলো। কিন্তু করোনায় প্রেক্ষাপট বদলে যায়।

তবে সম্প্রতি প্রেক্ষাপট কিছুটা ইতিবাচকভাবে পরিবর্তন ঘটনায় ব্যাংকগুলো বলছে তারা প্রত্যাশা অনুযায়ী কৃষিঋণ বিতরণ করতে সক্ষম হবে।

২০২০ সালের এপ্রিলে করোনা মহামারী দেখা দেওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে কৃষি খাতে প্রণোদনার ঋণ বিতরণ শুরু হয়। প্রথম দফায় ৫ হাজার কোটি টাকার কৃষিঋণ বিতরণের একটি প্যাকেজ হাতে নেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ওই বছর প্রণোদনার কৃষিঋণ বিতরণের ফলে অনেক কৃষকের নিয়মিত কৃষিঋণের দরকার হয়নি। এ কারণেও কৃষিঋণের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। ওই অর্থবছরে প্রণোদনা প্যাকেজের প্রায় ৯২ শতাংশ ঋণ বিতরণ করতে সক্ষম হয় ব্যাংকগুলো। চলতি অর্থবছরেও কৃষিঋণের জন্য প্রণোদনা প্যাকেজ বহাল রেখেছে সরকার।

চলতি ২০২১-২০২২ অর্থবছরে কৃষি খাতে আরও ৩ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ চালু করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এই প্যাকেজের আওতায় ব্যাংকগুলোকে মাত্র ১ শতাংশ সুদে অর্থায়ন করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ওই অর্থ আবার কৃষকদের ৪ শতাংশ সুদে ঋণ দেয় ব্যাংকগুলো। অর্থাৎ ব্যাংকগুলো এখান থেকে ৩ শতাংশ মুনাফা করতে পারে। ঋণ পরিশোধে বাড়তি সময়ও পান কৃষকরা।

বিভি/এইচএস

মন্তব্য করুন: