সার নিয়ে কারসাজি করলে লাইসেন্স বাতিলসহ শাস্তির ব্যবস্থা: কৃষিমন্ত্রী

ইউরিয়া নির্ধারিত দামের চেয়ে কেজিতে ৩-৪ ও এমওপি ৯-১১ টাকা বেশি নেওয়া হচ্ছে। বাড়তি দাম দিয়েও কোনো কোনো জেলায় চাহিদামতো সার পাচ্ছেন না কৃষকেরা। সারের জন্য পরিবেশকদের কাছে তাঁদের রীতিমতো ধরনা দিতে হচ্ছে। তারপর যে পরিমাণ সার তাঁরা পাচ্ছেন, তা চাহিদার তুলনায় অনেক কম। কোথাও কোথাও কৃষকেরা বিক্ষোভও করছেন। সরকার ইউরিয়া সারের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে প্রতি কেজি ২২ টাকা। তবে সেই সার কৃষক পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে ২৬ টাকা। অন্যদিকে ১৫ টাকা কেজির এমওপি বা পটাশ সার বিক্রি হচ্ছে ২৪ থেকে ২৬ টাকায়।
সোমবার (২২ আগস্ট) বিকালে রাজধানীর ফার্মগেটে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) মিলনায়তনে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু কৃষিবিদ পরিষদ ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই এসোসিয়েশন আয়োজিত আলোচনা ও দোয়া অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক সার নিয়ে কারসাজিকারীদের কঠোর হুশিয়ারী দেন।
কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, আগামী জানুয়ারি পর্যন্ত চাহিদা অনুযায়ী সব রকমের সারের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। কাজেই, সার নিয়ে কারসাজি করে কৃত্রিম সংকট তৈরি ও বেশি দামে বিক্রি করলে ডিলারদের লাইসেন্স বাতিল করা হবে। পাশাপাশি কৃত্রিম সংকটকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগের ভিত্তি হলো জনগণ। জনগণের সমর্থন নিয়েই বার বার ক্ষমতায় এসেছে, সরকার পরিচালনা করছে। কোন বিদেশি শক্তি বা রাষ্ট্রের উপর আওয়ামী কখনই নির্ভরশীল নয়, তাদের কাছে ধর্নাও দেয় না। অন্যদিক বিএনপি সবসময়ই জনগণ নয়, বরং অন্যের উপর নির্ভরশীল হয়ে ক্ষমতায় এসেছে। এখনও ক্ষমতায় আসার জন্য তারা বিদেশি প্রভু ও রাষ্ট্রের কাছে ছোটাছুটি করছে, ধর্না দিয়ে বেড়াচ্ছে।’
রাজপথে আন্দোলন-সংগ্রাম করে বিএনপি বর্তমান সরকারের পতন ঘটাতে পারবে না বলেও এসময় মন্তব্য করেন কৃষিমন্ত্রী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ বলেন, গত বছর সারে ২৮ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়েছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আছেন বলেই এ বিশাল ভর্তুকি দেয়া সম্ভব হয়েছে।
তিনি বলেন, ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের পিছনের কুশীলবদের চিহ্নিত করতে একটি কমিশন গঠন করা প্রয়োজন। বঙ্গবন্ধুর খুনীদের বিচার আমরা করেছি। খুনীদের অনেকের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। তবে পাঁচজন আসামি বিদেশে পালিয়ে আছে, তাদেরকে দেশে ফিরিয়ে এনে সাজা কার্যকর করতে পারলে ষড়যন্ত্রের খেলা এ দেশে কমবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক সংসদ সদস্য উম্মে কুলসুম স্মৃতি, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের চেয়ারম্যান সাজ্জাদুল হাসান, কৃষিসচিব মো. সায়েদুল ইসলাম, ইমেরিটাস অধ্যাপক সাত্তার মণ্ডল বক্তব্য রাখেন। প্রধান আলোচক ছিলেন প্রখ্যাত কথাশিল্পী ও বাংলা একাডেমির সভাপতি সেলিনা হোসেন। বঙ্গবন্ধুর উপর স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক সচিব হাসানুজ্জামান কল্লোল। বাকৃবি অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আওলাদ হোসেনের সঞ্চালনায় সংগঠনের নির্বাহী সভাপতি মো. হামিদুর রহমান, ছাত্রলীগ বাকৃবি শাখার সাবেক সভাপতি সারোয়ার মোর্শেদসহ বিশিষ্ট কৃষিবিদরা বক্তব্য প্রদান করেন।
বিভি/এইচএস
মন্তব্য করুন: