• NEWS PORTAL

শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

আইএমএফ থেকে বাড়তি ২০ কোটি ডলার ঋণ পেল বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৩:৩৭, ৩১ জানুয়ারি ২০২৩

আপডেট: ২৩:৫৫, ৩১ জানুয়ারি ২০২৩

ফন্ট সাইজ
আইএমএফ থেকে বাড়তি ২০ কোটি ডলার ঋণ পেল বাংলাদেশ

রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি (টেকসই) ফ্যাসিলিটির (আরএসএফ) আওতায় প্রথম দেশ হিসাবে অন্তর্ভুক্ত হলো বাংলাদেশ। সোমবার আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নির্বাহী পর্ষদের সভায় আরএসএফ খাতে ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন বা ১৪০ কোটি ডলার ঋণ অনুমোদন করা হয়েছে। এছাড়া সংস্থাটি বর্ধিত ক্রেডিট সুবিধা বা বর্ধিত তহবিল সুবিধার অধীনে ৩ দশমিক ৩ বিলিয়ন বা ৩৩০ কোটি ডলার ঋণের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। 

এখানে উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ঋণ চেয়েছে ৪৫০ কোটি মার্কিন ডলার হঠাৎ কিভাবে ২০ বিলিয়ন ডলার বেড়ে গেল। পৃথিবীর কয়েকটি কারেন্সি নিয়ে ডলারের বিপরীতে স্পেশাল ড্রয়িং রাইটস (এসডিআর) সমন্বয় করার কারণে বাংলাদেশ অতিরিক্ত আরও ২০০ কোটি ডলার বেশি পেয়েছে। যা আমাদের অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক বলে মনে করছেন অর্থনীতি বিশ্লেষকরা। সবমিলিয়ে আইএমএফ অনুমোদিতে ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪.৭ বিলিয়ন ডলার বা ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলার। যদিও পূর্বের চুক্তি অনুযাযী ৪৫০ কোটি ডলারের ঋণ পাওয়ার কথা ছিল। সেই হিসাবে সংস্থাটি বাংলাদেশের জন্য অতিরিক্ত ২০ কোটি ডলার অনুমোদন দিয়েছে। আইএমএফের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।

জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে সোমবার (৩০ জানুয়ারি) বাংলাদেশকে ৪৫০ কোটি ডলার ঋণ দেওয়ার জন্য আইএমএফের পর্ষদ সভায় তোলা জহয়। পরে সংস্থাটি ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ অনুমোদন করে। এখন অনুমোদনের ফলে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতেই ঋণের প্রথম কিস্তি পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। 

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল গত ৯ নভেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আইএমএফের ঋণের অর্থ বাংলাদেশ পাবে সাত কিস্তিতে। সব ঠিক থাকলে ফেব্রুয়ারিতেই প্রথম কিস্তির ৪৫ কোটি ৪৫ লাখ ডলার পাওয়া যাবে। এরপর প্রতি ছয় মাস পরপর একটি করে কিস্তি দেওয়া হবে। সাত কিস্তিতে দেওয়া এ ঋণের শেষ কিস্তি পাওয়া যাবে ২০২৬ সালের ডিসেম্বরে। ঋণের গড় সুদ হার ২ দশমিক ২ শতাংশ। এদিকে ঋণের কিস্তি খুব কম হলেও আইএমএফের ঋণ পেলে অন্য সংস্থাগুলোর ঋণ পাওয়াও সহজ হবে। এ কারণে সরকার আইএমএফের ঋণ দেওয়াকে গুরুত্ব দিচ্ছে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, ঋণ সংক্রান্ত চুক্তির সব ঠিক থাকলে ৪২ মাসের চুক্তিতে সরকারের নেওয়া ‘অর্থনৈতিক সংস্কার কর্মসূচিতে সহায়তা হিসেবে আইএমএফের এক্সটেন্ডেড ক্রেডিট ফ্যাসিলিটি (ইসিএফ) এবং এক্সটেন্ডেড ফান্ড ফ্যাসিলিটি থেকে ৩২০ কোটি ডলার ঋণ পাবে বাংলাদেশ। আর রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনিবিলিটি ফ্যাসিলিটির (আরএসএফ) আওতায় পাবে বাকি ১৩০ কোটি ডলার। প্রাথমিক সমঝোতা অনুযায়ী শেষ কিস্তি বাংলাদেশ হাতে পাবে ২০২৬ সালে। সুদের হার হবে ২.২ শতাংশ। আর এ ঋণের টাকা দিয়ে যেসব প্রকল্প বাংলাদেশ সরকার হাতে নেবে, তার উদ্দেশ্য হবে সামষ্টিক অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখা এবং দুর্দশায় পড়া জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দিয়ে দৃঢ়, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং পরিবেশবান্ধব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এগিয়ে নেওয়া। 

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সামষ্টিক অর্থনীতির ঝুঁকি কমিয়ে আনতেও এই ঋণের অর্থ ব্যয় করা হবে। এসব লক্ষ্যকে সামনে রেখে গত জুলাইতে আইএমএফের কাছে ঋণ চায় বাংলাদেশ। আইএমএফের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রধান রাহুল আনন্দের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল অক্টোবরের শেষে ঢাকায় আসেন। দুই সপ্তাহ সরকারে বিভিন্ন দপ্তর, নিয়ন্ত্রক সংস্থা এবং অংশীজনদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠকের পর ঋণের বিষয়ে প্রাথমিক সমঝোতার কথা জানানো হয় সরকারের তরফ থেকে।

এবিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্বব্যাংক ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, ‘বিশ্ব ব্যাংক ও আইএমএফের ঋণ পাওয়ার আগে তার বোর্ডে অনুমোদন নিতে হয়। আবার কিছু নীতিগত শর্ত পূরণ করতে হয়। এ জন্য ঋণ পেতে সময় লাগে। বাংলাদেশকে ঋণ দিতে আগে থেকেই আগ্রহী ছিল সংস্থাটি।’

বিভি/এইচএস

মন্তব্য করুন: