• NEWS PORTAL

  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

প্রবাসী আয়ে প্রায় শূন্যের কোঠায় যে ২১ ব্যাংক

প্রকাশিত: ২০:০৮, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

আপডেট: ২০:২২, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

ফন্ট সাইজ
প্রবাসী আয়ে প্রায় শূন্যের কোঠায় যে ২১ ব্যাংক

দেশে ডলারের সংকটে মোকাবিলায় প্রধান দুটি উৎস রপ্তানি ও প্রবাসী আয়। চলতি ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে ১৯৫ কোটি ৮৮ লাখ ৬ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় এসেছে। যা আগের মাসের চেয়ে ২৫ কোটি ৯১ লাখ ডলার বেশি। সংকট কাটাতে ব্যাংকে বেঁধে দেওয়া হয়েছিলো ডলারের সর্বোচ্চ দাম। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের পক্ষ থেকে অপ্রয়োজনীয় ও বিলাসপণ্য আমদানি নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শতভাগ এলসি মার্জিনের আওতাভুক্ত করা হয়ে বেশ কিছু পণ্য। গেল বছর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নেওয়া সিদ্ধান্তে রেমিট্যান্স আয়ে কিছুটা ভাটা পড়ে। তবে নতুন বছরের শুরুতে লাফিয়ে বাড়ছে প্রবাসী আয়। তবে রেমিট্যান্স আহরণের ক্ষেত্রে পিছিয়ে রয়েছে ২১টি ব্যাংক। এদের মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত দুটি, বিশেষায়িত একটি, বিদেশি ৮টি এবং চতুর্থ ও পঞ্চম প্রজন্মের ৮টি ব্যাংক রয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) এ তথ্য জানা গেছে। রেমিট্যান্স আসা শূন্যের কোঠায় থাকা ব্যাংকগুলো হলো। রাষ্ট্রায়ত্ত বিডিবিএল ব্যাংকে শূন্য ডলার, বেসিক ব্যাংকে এসেছে মাত্র ২ লাখ ৩০ হাজার ডলার। বিশেষায়িত রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক বা রাকাব-এ কোনো প্রবাসী আয় আসেনি। 

বেসরকারি বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক লিঃ-এ মাত্র ৭ লাখ ৩০ হাজার ডলার, বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক লিঃ এ কোনো রেমিট্যান্স আসেনি, কমিউনিটি ব্যাংক বাংলাদেশ লিঃ শূন্য, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক ৬০ হাজার ডলার, মেঘনা ব্যাংক ৪০ হাজার ডলার, মিডল্যান্ড ব্যাংক চার লাখ ৬০ হাজার ডলার, পদ্মা ব্যাংকে ৬০ হাজার ডলার, সীমান্ত ব্যাংক লিঃ এ ৮০ হাজার ডলার। বিদেশি ব্যাংকের মধ্যে ব্যাংক আল ফালাহ্ দুই লাখ ৫০ হাজার ডলার, সিটি ব্যাংক এনএ ৬০ হাজার ডলার, কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন দুই লাখ ৮০ হাজার ডলার, হাবিব ব্যাংক লিঃ শূন্য ডলার, এইচএসবিসি পাঁচ লাখ ১০ হাজার ডলার, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান শূন্য, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া শূন্য, ওরি ব্যাংক লিঃ আট লাখ ৭০ হাজার ডলার।  

রেমিট্যান্স প্রবাহ পর্যালোচনায় দেখা গেছে, জানুয়ারি মাসে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিঃ-এ ৩৫ কোটি ৪৯ লাখ ৪০ হাজার ডলার। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে মার্কেন্টাইল ব্যাংক ১২ কোটি ১০ লাখ ৩০ হাজার ডলার, তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে আল আরাফাহ ১১ কোটি ৭১ লাখ ডলার এবং চতুর্থ অগ্রণী ব্যাংক ১০ কোটি ৪২ লাখ ৪০ হাজার ডলার। 

২০২২-২০২৩ অর্থবছরের প্রথম (জুলাই থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত) ৭ মাসে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ১ হাজার ২৪৫ কোটি ২১ লাখ মার্কিন ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ১ হাজার ১৯৪ কোটি ৪০ লাখ মার্কিন ডলার। আলোচ্য সময়ে ৫০ কোটি ৮০ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স বেশি এসেছে।

তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, জানুয়ারিতে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে তার মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ২৫ কোটি ৫৮ লাখ ৪০ হাজার ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে ৪ কোটি ২২ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১৬৫ কোটি ৩৬ লাখ ৯০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৭০ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স।

বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মধ্যে যথারীতি ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে। জানুয়ারিতে ব্যাংকটির মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ৩৫ কোটি ৪৯ লাখ ডলার। এরপরেই রয়েছে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের অবস্থান। ব্যাংকটির মাধ্যমে ১২ কোটি ১০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। এছাড়া আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ কোটি ৭১ লাখ ডলার। অগ্রণী ব্যাংকের মাধ্যমে ১০ কোটি ৪২ লাখ ডলার, পূবালী ব্যাংকের মাধ্যমে ৯ কোটি ৮৯ লাখ ডলার, এনসিসি ব্যাংকের মাধ্যমে ৭ কোটি ৫১ লাখ ডলার, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের মাধ্যমে ৭ কোটি ২৫ লাখ ডলার, ডাচ্‌-বাংলা ব্যাংকের মাধ্যমে ৬ কোটি ৭৫ লাখ ডলার, সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে ৬ কোটি ৬২ লাখ ডলার, প্রিমিয়ার ব্যাংক ৬ কোটি ২২ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে।

রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংক বৈধ উপায়ে ওয়েজ আর্নার্স রেমিট্যান্সের বিপরীতে আড়াই শতাংশ নগদ প্রণোদনা, সরকার রেমিট্যান্স প্রেরণকারীদের সিআইপি সম্মাননা প্রদান, রেমিট্যান্স বিতরণ প্রক্রিয়া সম্প্রসারণ ও সহজীকরণ পাশাপাশি অনিবাসী বাংলাদেশিদের জন্য বিনিয়োগ ও গৃহায়ণ অর্থায়ন সুবিধা দেওয়া, ফিনটেক পদ্ধতির আওতায় আন্তর্জাতিক মানি ট্রান্সফার অপারেটরকে বাংলাদেশের ব্যাংকের সঙ্গে ড্রয়িং ব্যবস্থা স্থাপনে উদ্বুদ্ধকরণ এবং রেমিট্যান্স প্রেরণে ব্যাংক বা এক্সচেঞ্জ হাউসগুলোর চার্জ ফি মওকুফ করা হয়েছে।  

বিভি/এইচএস

মন্তব্য করুন: