• NEWS PORTAL

  • বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪

স্ত্রীর মামলায় সিটি ব্যাংক চেয়ারম্যান কারাগারে

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৬:২৪, ১৬ মার্চ ২০২৩

আপডেট: ১৯:০৩, ১৬ মার্চ ২০২৩

ফন্ট সাইজ
স্ত্রীর মামলায় সিটি ব্যাংক চেয়ারম্যান কারাগারে

আজিজ আল কায়সার

স্ত্রীর স্বাক্ষর জালিয়াতি ও ১৫ কোটি টাকা অর্থ আত্মসাতের মামলায় সিটি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও পারটেক্স স্টার গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান আজিজ আল কায়সারকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. জসিম উদ্দিন তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

প্রসঙ্গত, আজিজ আল কায়সার পারটেক্স স্টার গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান ও স্টার পার্টিকেল বোর্ড মিলস লিমিডেট এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং সিটি ব্যাংকের বর্তমান চেয়ারম্যান। 

বাদী পক্ষের আইনজীবী তুহিন হাওলাদার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আসামি আজিজ আদালত থেকে ১৬ মার্চ পর্যন্ত শর্তসাপেক্ষে জামিনে ছিলেন। কিন্তু জামিনের শর্ত ভঙ্গ করে তিনি বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা ভোগ করছিলেন। এ জন্য আজ আমরা তার জামিনের বিষয়টি আদালতে উত্থাপন করি। শুনানি শেষে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, স্টার পার্টিকেল বোর্ড মিলস লিমিডেট- এর পরিচালক তাবাসসুম কায়সারের স্বাক্ষর জাল করে তার অনুমতি না নিয়ে আজিজ আল কায়সার সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার এ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের বনানী শাখা থেকে ২০২১ সালে ১৭ অক্টোবর স্টার পার্টিকেল বোর্ড মিলস লিমিডেট- এর নামে ১৫ কোটি টাকা ঋণ নেন। এ অভিযোগে ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় মামলা দায়ের করেন তাবাসসুম কায়সার। 

আদালত মামলার সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থ সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণের সময় আজিজ আল কায়সার, স্টার পার্টিকেল বোর্ড মিলস লিঃ ব্যবস্থাপনা পরিচালক কর্তৃক দাখিলকৃত মূল কাগজপত্রে বাদী তাবাসসুম কায়সার স্বাক্ষর করেছেন কিনা তা যাইয়ের জন্য অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার ওয়েব বেইজড ক্রাইম ইনেভেস্টিগেশন টিম ডিবি-সাইবারক্রাইম অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (উত্তর) বিভাগকে নির্দেশনা দিয়েছেন আদালত। 

জানা গেছে, স্বাক্ষর জালিয়াতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে আজিজ আল কায়সারের বিরুদ্ধে মোট চারটি মামলা করা হয়েছে। 

আদালত প্রতিবেদক জানান, বাদী তাবাসসুম কায়সারের পক্ষে ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে মোট চারটি মামলার আবেদন করা হয়। আদালত একটি মামলা আমলে নিয়ে আজিজ আল কায়সারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। অপর ৩টি আবেদন তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় রেকর্ড করে পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে আজিজ আল কায়সার এসব মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিনে আছেন বলে প্রতিবেদককে জানান।

সিটি ব্যাংকের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বাংলাভিশনকে জানান, আজিজ আল কায়সারকে সিটি ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদ থেকে সরাতে এমন বানোয়াট অভিযোগ করা হচ্ছে। সাজানো মামলার নেপথ্যে আছেন একজন প্রভাবশালী সংসদ-সদস্য। যিনি দীর্ঘদিন ধরে সিটি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে নাম লেখাতে মরিয়া। এছাড়াও তিনি আজিজ আল কায়সারের স্ত্রী তাবাসসুম কায়সারের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়। তাবাসসুম কায়সার সিটি ব্যাংকের পরিচালক পদে থাকায় তাকে দিয়ে এমন দুষ্কর্ম করছেন সেই সংসদ সদস্য।

আদালতে আজিজ আল কায়সার

সংশ্লিষ্টরা জানান, তাবাসসুম কায়সারের সঙ্গে ভারতীয় এক ব্যক্তির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক নিয়ে আজিজ আল কায়সারের দাম্পত্য কলহ চলছে। যা সিটি ব্যাংকের অনেক কর্মকর্তারাও জানেন। মামলা হওয়ার পর বিষয়টি এখন ওপেন সিক্রেট। গুলশানের একটি জিমের স্বত্ত্বাধিকারী অর্জুন রিচি নামের ওই ভারতীয় সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা নিয়ে তাদের দাম্পত্য কলহ চরম আকার ধারণ করে। তবে অর্জুন রিচি মামলার পর ভারতে পাড়ি জমিয়েছেন। সিটি ব্যাংক ছাড়াও তাবাসসুম কায়সার পারটেক্স স্টার গ্রুপের কয়েকটি কোম্পানিতে পরিচালক পদে আছেন। তাদের দীর্ঘ ২৮ বছরের সংসার।

এর আগে অভিযোগগুলোর বিষয়ে আজিজ আল কায়সার বাংলাভিশনকে জানিয়েছেন, ‘এটা নিয়ে নিউজ করার কিছু নেই। আমাকে হয়রানি করার জন্যই এ মামলা করা হয়েছে।’

বিভি/এইচএস

মন্তব্য করুন: