• NEWS PORTAL

  • সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫

Drama: Jamai Bou Chor
Drama: Jamai Bou Chor

পরিমাণের দিক থেকে রপ্তানিতে আয় কমেছে: ফারুক হাসান 

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৭:০২, ১৮ মার্চ ২০২৩

আপডেট: ১৮:৫৯, ১৮ মার্চ ২০২৩

ফন্ট সাইজ
পরিমাণের দিক থেকে রপ্তানিতে আয় কমেছে: ফারুক হাসান 

বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান বলেছেন, টাকার অংকে বা মূল্যভিত্তিক রপ্তানি বাড়লেও পরিমাণের দিক (অর্ডারের) থেকে প্রবৃদ্ধি হয়নি। বরং আগের বছর তুলনায় পোশাক পণ্য রপ্তানি আয় কমেছে আগামী মাস থেকে মূল্যভিত্তিক রপ্তানি আয়ও কমে যাবে।

শনিবার (১৮ মার্চ) বিজিএমইএর সভা কক্ষে পোশাক শিল্পের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় বিজিএমএর ভাইস প্রেসিডেন্ট নাসির উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।

ফারুক হাসান বলেন, ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনার কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে এক অস্থির পরিস্থিতি বিরাজ করছে। যার প্রভাব পড়েছে আমাদের অর্থনীতি ও শিল্পে।আমাদের প্রধান বাজার গুলো বিশেষ করে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি রেকর্ড পর্যায়ে পৌঁছেছে। এসব উন্নত দেশের ভোক্তারা ভোগ্যপণ্যের ব্যয় কমিয়ে দিয়েছে। ফলে কমে আসছে পোশাকের চাহিদা। তাই পোশাকের অর্ডার কমিয়ে দিয়েছেন আমাদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো। তবে অফ প্রাইস বা ডিসকাউন্টেড পণ্যের প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহ বাড়ছে।  

বিজিএমইএ সভাপতি আরও বলেন, এলডিসি গ্রাজুয়েশন পরবর্তীতে আমাদের বড় ধরনের সংকটের মধ্যে পড়তে হবে। বিশেষ করে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ মানবাধিকার ও ডিউ ডিলিজেন্স প্রটোকল গ্রহণ করছে, যেগুলো প্রতিপালন করতে আমাদের সক্ষমতা তৈরি করতে হবে। আবার এই প্রটোকলগুলো ইউজার লেনভেল এ যেন কোন ভোগান্তি তৈরি না করে সেজন্য আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমাদের জোরালো ভূমিকা রাখতে হবে।

তিনি বলেন, প্রধানত দুটি কারণে রপ্তানি অর্ডার ক্রমাগত কমছে। প্রথমত, বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতির কারণে জ্বালানি তেলসহ অন্যান্য কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারণে আমাদের উৎপাদন খরচ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। যার প্রভাব পোশাকের মূল্যের উপর পড়েছে।

দ্বিতীয়ত, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আমাদের শিল্পের মূল্য সংযোজিত পণ্যে উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ হয়েছে। আমাদের বেশ কিছু কারখানা অপেক্ষাকৃত উচ্চমূল্যে পণ্য রপ্তানি করছে। ফলে পোশাকের ইউনিট প্রাইস বেড়েছে। সুতরাং আমাদের যে হারে মূল্যভিত্তিক প্রবৃত্তি হয়েছে সে অনুপাতে পরিমাণ ভিত্তিক প্রবৃদ্ধি হয়নি।

আগামী ১ জানুয়ারি ২০২৪ সাল থেকে বাংলাদেশে উৎপাদিত সকল পোশাক পণ্যের লেভেলে বাংলা বর্ণমালায় ‘বাংলাদেশে তৈরি’ লেখাটি থাকবে। এর মাদ্যমে সারা বিশ্ব জানবে আমাদের গর্বের ইতিহাস, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, বাংলা ভাষা ও বাংলাদেশকে। ঈদের পর আমাদের বায়ারদের এনে আমাদের এ উদ্দেশ্য তুলে ধরবো। 

প্রতিযোগি দেশগুলোকে পেছনে ফেলে আজ বাংলাদেশ পোশাক রফতানিতে বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। এক্ষেত্রে ডেনিম পোশাক উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে একনম্বর স্থানে রয়েছে। মানবউন্নয়ন সূচকের সবগুলো সূচকে বাংলাদেশ প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় লক্ষ্যনীয় ভাবে এগিয়ে রয়েছে। 

বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, উন্নয়নে অগ্রগতি থাকা স্বত্ত্বেও বৈশ্বিক মূল্যায়নে (গ্লোবাল ব্যাঞ্চ মার্ক) বাংলাদেশ এখনও নেশন ব্র্যান্ডিংয়ে কাঙ্খিত অবস্থানে পৌঁছাতে পারেনি। তবে এজন্য বিজিএমইএ গত বছরের নভেম্বরে ঢাকায় মেইড ইইন বাংলাদেশ উইক মেগা ইভেন্টের আয়োজন করেছে। 

এছাড়াও সম্প্রতি ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) বাংলাদেশ বিজনেস সামিট-২০২৩ আয়োজন করেছে। যা আমাদের পণ্যের ব্র্যান্ডিংয়ে বড় ভূমিকা পালন করলো। 

ফারুক হাসান লিখিত বক্তব্যে বলেন, কোভিড-১৯ এর ক্ষত সেরে উঠতে না উঠতেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনার কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে এক অস্থির পরিস্থিতি বিরাজ করছে। যার প্রভাব পড়েছে আমাদের অর্থনীতি ও শিল্পে। বিশেষ করে আমাদের পণ্যের ক্রেতা ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি রেকর্ড পর্যায়ে পৌঁছেছে। এসব দেশের ভোক্তারা ভোগ্যপণ্যের ব্যয় কমিয়ে দিয়েছে। ফলে কমে আসছে পোশাকের চাহিদা। তাই পোশাকের অর্ডার কমিয়েছেন আমদানিকারকরা। তবে অফ প্রাইস বা ডিসকাউন্টেড পণ্যের প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহ বাড়ছে। পাশাপাশি ক্রেতারা সোর্সিং কৌশলেও পরিবর্তন এনেছে। তারা এক সঙ্গে বড় অর্ডারের পরিবর্তে ছোট ছোট অর্ডার দিচ্ছে। ফলে কারখানা পর্যায়ে উৎপাদন বিপর্যস্ত হচ্ছে। 

বিশ্ব অর্থনীতেতে পরিবর্তন আসছে উল্লেখ করে ফারুক হাসান বলেন, এলডিসি গ্রাজুয়েশনের পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমাদের এখনই প্রস্তুতি নিতে হবে। পণ্যের ব্র্যান্ডিংয়ের পাশাপাশি অ্যাপারে ডিপ্লোমেসি নিয়েও আমরা কাজ করছি। একই সঙ্গে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তোরণের পথটি মসৃণ করতে ট্রানজিশন পিরিয়ড বাড়িয়ে ৬ বছর করার জন্য সরকারের মাধ্যমে সকল প্রেফারেন্স গিভিং দেশগুলোকে অনুরোধ করছি। এনিয়ে ইতোমধ্যে আমরা অফিসিয়ালি কাজ শুরু করেছি। 

বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, আমরা পোশাক রফতানিতে যে প্রবৃদ্ধি দেখছি তা মূলত মূল্যভিত্তিক প্রবৃদ্ধি কিন্তু পরিমাণের দিক থেকে কোন প্রবৃদ্ধি হয়নি। বরং কমেছে। 

২০২১-২০২২ অর্থবছরে পোশাক রপ্তানি ছিলো ৬.৩৭ বিলিয়ন ডলার শেয়ার ছিলো ১৪.৯৬ শতাংশ। আর চলতি বছরে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়ে নতুন বাজারে পোশাক রপ্তানির পরিমাণ ছিলো ৫.৬৯ বিলিয়ন ডলার। যার মার্কেট শেয়ার ছিলো ১৯.৬৪ শতাংশ।

বিভি/এইচএস

মন্তব্য করুন: