• NEWS PORTAL

  • রবিবার, ২৩ মার্চ ২০২৫

পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার দাবিতে রাবির আট শিক্ষার্থীর আমরণ অনশন 

সৈয়দ সাকিব, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

প্রকাশিত: ১৩:১৪, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

আপডেট: ১৫:৪১, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

ফন্ট সাইজ
পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার দাবিতে রাবির আট শিক্ষার্থীর আমরণ অনশন 

বিভাগের শিক্ষক কর্তৃক উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ডিসকলেজিয়েট হয়ে মাস্টার্সের চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার দাবিতে আমরণ অনশনে বসেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) গ্রাফিক ডিজাইন, কারুশিল্প ও শিল্পকলার ইতিহাস বিভাগের ৮জন শিক্ষার্থী।

বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৯ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসন ভবনের মূল ফটকের সামনে অনশনে বসেন তারা। এর আগে বিভাগের সামনে থেকে এক পদযাত্রা বের করা হয়।

অভিযোগকারী শিক্ষার্থীরা হলেন গ্রাফিক ডিজাইন, কারুশিল্প ও শিল্পকলার ইতিহাস বিভাগের কারুশিল্প ডিসিপ্লিনের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের স্নাতকোত্তর থিসিস ও নন-থিসিস পর্যায়ের আট শিক্ষার্থী। তারা হলেন- মেহেদী হাসান, ফয়সাল আহমেদ,তানভির, জয়শ্রী, রিতু পর্না, ফারজানা ইয়াসমিন, ফাতিমা আফরিন মিম, অনামিকা। অন্যদিকে অভিযুক্ত শিক্ষক হলেন একই ডিসিপ্লিনের সহযোগী অধ্যাপক মনির উদ্দিন আহাম্মেদ ওরফে টভেল।

আরও পড়ুন: জাবিতে ছাত্র ইউনিয়নের ২ নেতার বহিষ্কার বাতিলের দাবিতে মশাল মিছিল

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, বিভাগের মোট ১২জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৮ জনকে ইচ্ছাকৃতভাবে কম এটেন্ডেন্স দেখিয়ে ডিসকলেজিয়েট করা হয়েছে—যেটা অফিসিয়ালি তাদেরকে কোনোভাবে জানানো হয়নি। নিয়মিত ক্লাস করার পরও এই অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে। শ্রেণীশিক্ষক প্রতিদিন ১২টা থেকে ১টার মধ্যে ডিপার্টমেন্টে আসেন; কিন্তু তিনি শিক্ষার্থীদের সাড়ে নয়টা থেকে ক্লাসে থাকতে বলতেন এবং বিভিন্ন কর্মচারী ও জুনিয়র শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে শুনে তার ভিত্তিতে এটেন্ডেন্স দিতেন। এই নিয়মের ফলে শিক্ষার্থীরা অনেকেই ক্লাসে উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও অনুপস্থিত হিসেবে চিহ্নিত হোন।

শিক্ষার্থীরা আরও জানান, গোপনে মাত্র ২দিন সময় দিয়ে ৪ জন শিক্ষার্থীর জন্য পরীক্ষার ফর্ম ফিলাপ করানো হয়েছে। বাকি ৮ জন শিক্ষার্থীকে এই প্রক্রিয়া থেকে অজ্ঞাত রাখা হয়েছে—যেটা উনারা ফরম ফিলাপের একদম শেষ দিনে নোটিশ বোর্ডে প্রকাশ করেছেন। আগামী রবিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) তাদের পরীক্ষার দিন ধার্য করা হয়েছে।

আমরণ অনশনে বসা মেহেদী হাসান বলেন, প্রতি মাসের শেষে আমাদের কাছ থেকে এটেন্ডেন্স খাতায় স্বাক্ষর নেওয়া হতো। শিক্ষকের উপর আস্থা রেখে আমরা স্বাক্ষর করে দিতাম। পরবর্তীতে, এই স্বাক্ষরের ভিত্তিতে ইচ্ছাকৃতভাবে কম এটেন্ডেন্স দেখিয়ে আমাদের ডিসকলেজিয়েট করা হয়েছে। শুরু থেকেই আমাদের ডিসকলেজিয়েট করার এবং পরীক্ষা না দিতে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হতো। শ্রেণিশিক্ষক বারবার বলতেন, "তোমরা কীভাবে পরীক্ষা দাও আমি দেখে নিবো।"

ফাতিমা আফরিন মিম বলেন, "আমাদেরকে ইচ্ছাকৃতভাবে ডিসকলেজিয়েট করে আমাদের জীবনকে ভবিষ্যৎ ধংসের পথে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। আমরা সকাল থেকে আমরণ অনশনে বসেছি। আমরা আমাদের দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত এখান থেকে উঠবো না। নিয়মনীতি উপেক্ষা করে ক্লাস নিতে ১২টার পরে শিক্ষক আসেন। আমাদের কোর্স অসম্পূর্ণ রেখে ক্লাস শেষ করা হয়েছে। চারুকলায় নিয়মিত শিক্ষার্থীদের উপর অন্যায় করা হয়। আমরা এর সুষ্ঠু তদন্ত ও সমাধান চাই।"

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত শিক্ষক মনির উদ্দিন আহাম্মেদ বলেন, "আমি এবিষয়ে কথা বলতে চাচ্ছি না। কারণ হলো, এরকম অনেক কথাই তারা লিখেছে। আমি হুমকি দেওয়ার কে? ক্লাসতো আরো কয়েকজন শিক্ষক নিয়েছে, আমিতো একা নেয়নি? আপনারা অফিসে এসে সভাপতির সঙ্গে কথা বলতে পারেন। কাগজপত্র সব রেডি আছে। তারা ক্লাস করার পরে মাস শেষে অ্যাটেনডেন্স শিটে স্বাক্ষরও করেছে। সব সাক্ষ্য প্রমাণ আছে। এখন তারা যদি ক্লাস না করে, তাহলে আমি কিভাবে কি করবো? দয়া করে উপস্থিতি দেখানোর ক্ষমতা আমার নাই। তাদের সাথেতো আমার ব্যক্তিগত খারাপ সম্পর্কও নাই।"

চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী বলেন, "একজন শিক্ষক কি এভাবে কাউকে ডিসকলেজিয়েট করতে পারে? তারা ক্লাসে অনিয়মিত ছিল। নিয়ম অনুযায়ী তারা ডিসকলেজিয়েট হয়েছে।"

অধ্যাপক আলী জানান, "প্রশাসন থেকে আমাদেরকে ডাকা হয়েছে। আমরা গিয়ে তাদের সাথে কথা বলে একটি যৌক্তিক সিদ্ধান্ত নিবো।"

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. আসাবুল হক শিক্ষার্থীদের ডাকা অনশন প্রসঙ্গে বলেন, "আমরা তাদেরকে আশ্বস্ত করার পরেও তারা উঠবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্যও তাদেরকে আশ্বস্ত করেছে, কিন্তু তারা কোনো লিখিত বক্তব্য ছাড়া এখান থেকে উঠবে না। আমরা তাদের অনুষদের ডিনের সাথে কথা বলেছি এবং দ্রুত প্রশাসন ভবনে আসার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।"

এর আগে, মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. হুমায়ুন কবীর বরাবর অভিযোগপত্র জমা দিয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা। তবে কোনো সমাধান না পাওয়ায় আজ তারা আমরণ অনশনে বসেন।

বিভি/রিসি

মন্তব্য করুন:

আজকের সময়সূচী (২৩ মার্চ ২০২৫)

সেহরি:

০৬:০০

ইফতার:

০৬:১১

Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2