• NEWS PORTAL

  • বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

জাকসুর তফসিল ঘোষণা, নির্বাচন ৩১ জুলাই

জাবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১২:০২, ১ মে ২০২৫

ফন্ট সাইজ
জাকসুর তফসিল ঘোষণা, নির্বাচন ৩১ জুলাই

দীর্ঘ ৩২ বছর ধরে অচলাবস্থার পর অবশেষে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) এর তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ৩১ জুলাই সকাল ৯টা থেকে বিকাল পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলবে এবং একই দিনেই ভোগ গণনা এবং ফলাফল জানানো হবে। বৃহস্পতিবার (১ মে) দিবাগত রাত দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের কাউন্সিল কক্ষে জাকসুর তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মনিরুজ্জামান। 

এসময় অন্যান্যদের মাঝে আরও উপস্থিত ছিলেন জাকসু নির্বাচন কমিশনের সদস্য সচিব ও জাবি প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশেদুল আলম, কমিশনের সদস্য  ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. লুৎফুল এলাহী এবং নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক রেজওয়ানা করিম স্নিগ্ধা।

এসময় প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, তফশিল অনুযায়ী ১২ মে খসড়া ভোটার তালিকা ও আচরণবিধি প্রকাশ করা হবে৷ এছাড়াও খসড়া ভোটার তালিকা সম্পর্কে আপত্তি গ্রহণের শেষ তারিখ ২১ মে বিকেল ৫টা পর্যন্ত, খসড়া আচরণবিধি সম্পর্কে মতামত গ্রহণের শেষ তারিখ ২১ মে, ৩০ জুন চূড়ান্ত হালনাগাদ ভোটার তালিকা প্রকাশ ও চূড়ান্ত আচরণবিধি প্রকাশ, ১ জুলাই মনোনয়নপত্র সংগ্রহ, মনোনয়নপত্র জমাদান (প্রার্থী কিংবা তার প্রতিনিধি কর্তৃক) ১-৭ জুলাই। 

তিনি বলেন, মনোনয়ন পত্র যাচাই বাছাই ও খসড়া প্রার্থী তালিকা প্রকাশ ৯ জুলাই, মনোনয়নপত্রের বৈধতার বিষয়ে এবং বাতিলের বিরুদ্ধে আপিল আবেদন গ্রহণ ১১ জুলাই, ১৩ জুলাই আপিলের শুনানী গ্রহণ ও আপিলের রায় ঘোষণা, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৪ জুলাই, প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ ১৫ জুলাই, নির্বাচনী প্রচারণা ১৬ জুলাই থেকে ২৮ জুলাই,  বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ ১৬ জুলাই।

অধ্যাপক মনিরুজ্জামান বলেন, একই দিন থেকে ২৮ জুলাই রাত ১২টা পর্যন্ত নির্বাচনী প্রচারণা করা যাবে এবং আগামী ৩১শে জুলাই সকাল ৯টা থেকে বিকাল পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলবে এবং একই দিনেই ভোগ গণনা এবং ফলাফল প্রকাশ করা হবে।

এসময় জাকসু নির্বাচন কমিশনের সদস্য ও জাবি প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, জাকসু নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরাপদ করতে পুরো ক্যাম্পাস সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় নিয়ে আসা হবে। সেই প্রেক্ষিতে ইতিমধ্যেই কাজ শুরু হয়েছে। বহিরাগতরা যেন ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য আমাদের নিরাপত্তারক্ষীরা সর্বাত্মকভাবে কাজ করবে। সেই সাথে ক্যাম্পাসের সকল শিক্ষার্থীদেরও সহযোগিতা চান তিনি।

তিনি আরও বলেন, একটি সুষ্ঠু সুন্দর নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরিস্থিতির চাহিদা অনুযায়ী দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর সহায়তাও নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

এর আগে রাত পৌনে ১২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের কাউন্সিল কক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অংশীজনদের এবং সাংবাদিকদের সাথে এক সংবাদ সম্মেলনে জাকসুর তফসিল ঘোষণার কথা জানান উপাচার্য অধ্যাপক ড কামরুল আহসান। 

এসময় তিনি বলেন, উপাচার্য জানান, জাকসুর গঠনতন্ত্রের ৮ এর খ. ধারা অনুযায়ী আগামী ৩১ জুলাই সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) এবং হল সংসদ নির্বাচন একই সঙ্গে অনুষ্ঠিত হবে।

তিনি আরও বলেন, জাহাঙ্গীরনগরে একটি নতুন ইতিহাস রচিত হতে যাচ্ছে। দীর্ঘ ৩২ বছর থেকে জাকসু অচল হয়ে আছে। সিনেটে উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবিগুলোও আদায় হচ্ছে না। কিন্তু জাকসু হলে পাঁচ জন নির্বাচিত ছাত্র প্রতিনিধি সিনেটে যাবে। শিক্ষার্থীদের হয়ে কথা বলবে। সকলের সম্মতিতে একটা আশাব্যঞ্জক নির্বাচন হবে বলেই আশা ব্যক্ত করেন তিনি।

এসময় অন্যান্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা)  অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সোহেল আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড আব্দুর রব, প্রক্টর অধ্যাপক ড এ কে এম রাশেদুল আলমসহ অন্যান্যরা।

এর আগে গত মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট হলে জাকসুর সার্বিক নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে আলোচনার লক্ষ্যে ‘পরিবেশ পরিষদ: জাকসু নির্বাচন ২০২৫’- শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী প্রতিনিধি এবং ক্রিয়াশীল শিক্ষার্থী সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।

দীর্ঘ ১১ ঘণ্টা বৈঠক শেষে বুধবার (৩০ এপ্রিল) সকাল ৬টায় জাকসুর তফসিল ঘোষণার বিষয়ে সম্মত হয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে জাকসুর তফসিল ঘোষণা করা হয়।

প্রসঙ্গত, জাকসুর সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৯২ সালে। ১৯৯৩ সালে সিন্ডিকেটে একটি হট্টগোলের কারনে তখন থেকে বন্ধ আছে জাকসুর কার্যক্রম। ১৯৭৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত মোট আটবার জাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে নবমবারের মতো জাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এবছরের ৩১ জুলাই।
 

বিভি/পিএইচ

মন্তব্য করুন:

সর্বাধিক পঠিত
Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2