• NEWS PORTAL

  • শুক্রবার, ১০ অক্টোবর ২০২৫

সাত বছর পর নতুন যাত্রা শুরু, শপথ নিলেন গকসুর নির্বাচিতরা

ইভা আক্তার, গণ বিশ্ববিদ্যালয়

প্রকাশিত: ১৯:০৫, ৯ অক্টোবর ২০২৫

ফন্ট সাইজ
সাত বছর পর নতুন যাত্রা শুরু, শপথ নিলেন গকসুর নির্বাচিতরা

দীর্ঘ সাত বছর বিরতির অবসান ঘটিয়ে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে (গবি) আবারও বাজল গণতন্ত্রের শপথধ্বনি। শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে ফিরল নেতৃত্বের নবজাগরণ, আর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (গকসু) নতুন করে শুরু করেছে তার যাত্রা।

বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের ৪১৭ নম্বর কক্ষে অনুষ্ঠিত হয় গকসুর নবনির্বাচিত সদস্যদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান।

জাতীয় সঙ্গীত ও গকসুর থিম সং পরিবেশনের মাধ্যমে শুরু হয় দিনটির আনুষ্ঠানিকতা। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেন নবনির্বাচিত সদস্যদের শপথ বাক্য পাঠ করান। উপস্থিত ছিলেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. সিরাজুল ইসলাম, রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীরা।

শপথ শেষে নবনির্বাচিত সহ-সভাপতি (ভিপি) ইয়াসিন আল মৃদুল দেওয়ান বলেন, “দীর্ঘ সাত বছর পর অনুষ্ঠিত হলো গবি’র ৪র্থ ছাত্র সংসদ নির্বাচন। আমরা অধীর আগ্রহে এই মুহূর্তের অপেক্ষায় ছিলাম। এখন আমাদের দায়িত্ব শুরু। আমি চাই গণ বিশ্ববিদ্যালয়কে জাতীয় পর্যায়ে এমনভাবে উপস্থাপন করতে, যেন সবাই গর্ব করে চিনতে পারে। এটিই গবি।”

তিনি আরও বলেন, “আমি জবাবদিহিতার রাজনীতি করতে এসেছি। শিক্ষক-শিক্ষার্থী-প্রশাসন সবাইকে সমন্বয় করেই আমরা শিক্ষার্থীদের অধিকার ও ক্যাম্পাসের ইতিবাচক পরিবেশ রক্ষায় কাজ করব।”

নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক (জিএস) মো. রায়হান খান বলেন, “গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে বিশ্বাস রেখে আমরা শিক্ষার্থীদের সেবা দেব। এই সংসদ যেন প্রকৃত অর্থে শিক্ষার্থীদের কণ্ঠ হয়ে কাজ করে, সেটিই আমাদের অঙ্গীকার।”

তিনি প্রয়াত প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে বলেন, “স্যার আমাদের শেখালেন, শিক্ষক যেমন প্রতিনিধি রাখেন, ছাত্রদেরও কণ্ঠ থাকা জরুরি। তাঁর দূরদর্শী সিদ্ধান্তের ফলেই আজ আমরা গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন দিতে পেরেছি।”

শপথ অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. জহিরুল ইসলাম খান বলেন, “এবারের ভোট ছিল সম্পূর্ণ অবাধ ও সুষ্ঠু। ২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও প্রায় ৩০০ পুলিশ সদস্যের উপস্থিতিতে নির্বাচন পরিচালিত হয়। আমি আমার জীবনে এত শান্তিপূর্ণ ভোট দেখিনি।”

তিনি বলেন, “কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এখনো এমন সাহস দেখাতে পারেনি। উপাচার্য স্যারের বলিষ্ঠ নেতৃত্বেই এটি সম্ভব হয়েছে।”

সভাপতির বক্তব্যে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেন বলেন, “এটা আমাদের স্বপ্নদ্রষ্টা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর অবদান। তিনি বলতেন, শিক্ষকদের প্রতিনিধি আছে, কিন্তু ছাত্রদের কণ্ঠ কে তুলবে? তাই ছাত্র সংসদ নির্বাচন অবশ্যই দিতে হবে। তাঁর জীবদ্দশায় না হলেও আমরা আজ তা বাস্তবায়ন করতে পেরেছি।”

তিনি আরও বলেন, “নির্বাচন ছিল অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু। এজন্য ছাত্রছাত্রীদের ভূমিকা অনন্য। যারা দায়িত্ব নিয়েছিলেন, তারা অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন, তাদের শ্রমের মূল্য অর্থে দেওয়া সম্ভব নয়।”

নবনির্বাচিতদের উদ্দেশে উপাচার্য বলেন, “আপনারা সবাই মিলেমিশে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে কাজ করবেন। এটিই আমাদের প্রত্যাশা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সবসময় আপনাদের পাশে থাকবে। আমরা শিক্ষক-শিক্ষার্থী একই পরিবারের সদস্য।”

প্রসঙ্গত, সাত বছরের বিরতির পর গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় গত ২৫ সেপ্টেম্বর। বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত শপথের মধ্য দিয়ে নবনির্বাচিত সদস্যরা আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। উপাচার্যের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত এই শপথে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করা হয়। দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে একমাত্র গণ বিশ্ববিদ্যালয়ই ছাত্র সংসদ নির্বাচন আয়োজন করে আসছে।

বিভি/এজেড

মন্তব্য করুন:

Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2