অতিরিক্ত ২৬ মাসেও শেষ হয়নি হাবিপ্রবির নির্মাণাধীন ছাত্রী হলের কাজ

দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) বহুল প্রত্যাশিত নির্মাণাধীন ছাত্রী হলের কাজ প্রকল্পের নির্ধারিত সময়ের অতিরিক্ত ২৬ মাস সময় পার হয়ে গেলেও বুঝে পায়নি হল প্রশাসন। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বারবার কাজ শেষ করার জন্য সময় নিলেও প্রকল্পের কাজ এখনো পুরোপুরি শেষ করতে পারেনি। বিষয়টি নিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন হাবিপ্রবির মেয়ে শিক্ষার্থীরা। নবনির্মিত হলটিতে কবে নাগাদ শিক্ষার্থী উঠতে পারবে তাও নিদিষ্ট করে জানা যায়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২১ কোটি ৭১ লক্ষ ৬৯ হাজার ৮ শত পয়ষট্টি টাকা ব্যয়ে মূল ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। তবে হলের প্রাচীর ও রাস্তার কাজসহ বেশকিছু কাজ চলমান রয়েছে। ভবনের প্রতিটি কক্ষ ৪ আসন বিশিষ্ট হবে বলে জানা যায়। প্রধান ভবন ছাড়াও পৃথকভাবে তিনতলা এবং দুইতলা বিশিষ্ট আলাদা দুইটি ভবন তৈরি করা হয়েছে। তিনতলা ভবনের প্রথম ও দ্বিতীয় তলা ব্যবহৃত হবে ডাইনিং এবং তৃতীয় তলায় জিমনেশিয়াম ও কমনরুমের ব্যবস্থা করার পরিকল্পা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি অফিস রুমের দ্বিতীয় তলায় রিডিং রুমের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল শাখা সূত্রে জানা গেছে, নির্মাণাধীন হলের কাজ করছে এম/এস.এমবি এলএস-জেভি নামের একটি প্রতিষ্ঠান। প্রকল্পটি শেষ করতে তাদের ৫ মাস ২ দিন সময় বেঁধে দেয়া হয়। বেঁধে দেওয়া মেয়াদ শেষ হয় ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে না পারায় অতিরিক্ত হিসেবে প্রথম মেয়াদে ২০২০ জানুয়ারি থেকে ২০২১ জুন পর্যন্ত সময়সীমা বৃদ্ধি করা হয়। জুনের মধ্যেও প্রকল্পের কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি। এজন্য আবার দ্বিতীয় মেয়াদে ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়সীমা বৃদ্ধি করেছিলো বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গত ডিসেম্বর মাসেও শেষ করতে না পারায় আবার তৃতীয়বারের মতো সময়সীমা বৃদ্ধির জন্য চিঠি পাঠিয়েছেন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি।
হাবিপ্রবির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. তরিকুল ইসলাম জানান, এ মাসেই কাজ শেষ হবে বলে আমরা আশাবাদী। তবে শিক্ষার্থী উঠানোর বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং হল সুপার সিদ্ধান্ত নিবে।
প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রথমদিকে পাইলিং, অতিবৃষ্টি ও করোনার জন্য বিভিন্ন সময় কাজ বন্ধ থাকার কারণে প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে। তবে বর্তমানে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সঠিক সময়ে প্রকল্পের অর্থ দিতে পারেনি তাই আমাদের প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি করতে হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, নির্মাণাধীন ছাত্রী হলের প্রাচীর, রাস্তা সহ বেশকিছু কাজ চলছে। আমরা আশাবাদী এই মাসেই (মার্চ) কাজ শেষ হবে।
নবনির্মিত হলের হল সুপার অধ্যাপক ড. মোছা. আফরোজা খাতুন বলেন, কবে নাগাদ শিক্ষার্থী উঠানো হবে তা নিদিষ্টভাবে বলা সম্ভব নয়। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আমাদের হল বুঝিয়ে দিলেই আমরা শিক্ষার্থী উঠানোর কার্যক্রম শুরু করবো।
তিনি আরও জানান, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আমাকে বলেছিলো গত মাসে হল হস্তান্তর করবে কিন্তু তারা কাজ শেষ করতে পারেনি। তারা আবার চলতি মাসের কথা বলেছে। তবে আমার মনে হয় এ মাসেও হল হস্তান্তর করতে পারবে না।
বিভি/রিসি
মন্তব্য করুন: