• NEWS PORTAL

  • বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

হলের সিটের বিনিময়ে ছাত্রলীগ নেত্রীকে নেতার কুপ্রস্তাব

প্রকাশিত: ১৬:২৪, ৩ জুলাই ২০২২

আপডেট: ১৬:৪৩, ৩ জুলাই ২০২২

ফন্ট সাইজ
হলের সিটের বিনিময়ে ছাত্রলীগ নেত্রীকে নেতার কুপ্রস্তাব

ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে কুপ্রস্তাবের অভিযোগ এনেছেন একই শাখার ছাত্রলীগ নেত্রী। ঘটনাটি ঘটেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি)। জবি ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফৌজিয়া জাফরিন প্রিয়ন্তী এই অভিযোগ তুলেছেন একই শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসাইনের বিরুদ্ধে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে কুপ্রস্তাবের অভিযোগ তুলেছেন। গত শুক্রবার (১ জুলাই) রাতে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কমিটির কার্যক্রম স্থগিতের নির্দেশ দেওয়ার পর ওই নেত্রী নিজের টাইমলাইনে এক পোস্ট দিয়ে বেশ কয়েকটি অভিযোগ তুলে ধরেন।

অভিযোগ জানিয়ে প্রিয়ন্তী লেখেন, তার কুপ্রস্তাব মেনে না নেয়াটা ছিল আমার অপরাধ। আর এতেই ভেঙে যায় ৭ বছরের ভাই-বোনের সম্পর্ক। একমাত্র ছাত্রী হলে ছাত্রলীগ থেকে ৩০০ মেয়ে হলে সিট পেলেও আমাকে সে হলে উঠতে দেয়নি।

আরও পড়ুন:

ফৌজিয়া জাফরিন লিখেন, আমার জন্য তার অনেক বড় ভাইরা বললেও সে তার কানে তোলেনি কারণ তার তো আর আমাকে প্রয়োজন নেই কর্মী হিসেবে, এখন সে নেতা তার প্রয়োজন মেটাতে পারলেই কেবল সে প্রয়োজনবোধ করবেন। বাংলাদেশের এমন কোনো হল আছে কি, যেখানে কোনো গেস্ট গিয়ে একদিন থাকতে পারে না। কিন্তু এই আমি প্রিয়ন্তী হলে একদিন গিয়েছিলাম দেখতে, হলে থাকার কেমন অনুভূতি। কিন্তু এই আকতার জানতে পেরে প্রভোস্ট ম্যামকে চাপ দিয়ে সেই রাতেই আমাকে হল থেকে বের হতে বাধ্য করে।

আমার কি অপরাধ ছিল...? ২০১৪ সাল থেকে প্রতিদিন আট-দশ ঘণ্টাও বেশি পরিশ্রম করে দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর কমিটিতে এসেছি আমাকে হলে উঠতে দেওয়া হয়নি। এর পেছনের প্রধান কারণ হচ্ছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আক্তার। আমার দীর্ঘ আরাধ্য ও প্রতীক্ষার হল থেকে আমার প্রাপ্য অধিকার থেকে আমাকে বঞ্চিত করছে।

তিনি আরও লেখেন, দীর্ঘ ৭ বছর তার পেছনে হেঁটেছি। আপনি তার কয় দিনের কর্মী সেটা আগে ভাবুন। আমার মাদারীপুরের তিনজন ক্যান্ডিডেট ছিল। কিন্তু তার মধ্যে থেকে তাকে বেছে নিয়েছিলাম নেতা হিসেবে। তার জন্য কত কিছু করছি যা লিখে বলা সম্ভব না। আল্লাহ মনের আশা পূরণ করলেন। কিন্তু তারপর থেকে আকতার ভাইয়ের আসল রূপ বের হতে থাকল।

প্রিয়ন্তী

লেখক (লেখক ভট্টাচার্য) দাদার বাসা থেকে যেদিন ফুল দিয়ে নিচে নামলাম তার সাথে, সেদিন সকল পোস্টেড নেতার সামনে বসে আমাকে আর জিনিয়া আফ্রিনকে উদ্দেশ্য করে বলল- কোন হাইকমান্ডের ফোনে সে হল কমিটি দেবে না। দরকার হয় সে সাবেক হয়ে যাবে। সে নেতা হয়ে গেছে। তার নামের আগে সাবেক লেখা থাকবে তার সমস্যা নেই। আগে তার কর্মী হতে হবে, তাকে নেতা মেনে ধারণ করতে হবে। তবেই সেই হলের নেত্রী বানাবে। আমরা অবাক হয়ে রইলাম। হলের কথা কই থেকে আসল? নেতা হলো ১০ দিন মাত্র তখন। সেদিনের পর থেকে তার বিভিন্ন আবদার রাখতে অস্বীকৃতি জানানোর কারণে তার সঙ্গে আমার দীর্ঘ ৭ বছরের রাজনীতিকে সে মুহূর্তেই অস্বীকার করেছে। এমনকি সে আমার ছোটবোনদের বলে দিয়েছেন, আমাকে সালাম দিলে পদ পাবে না তারা।

পরে ফৌজিয়া জাফরিন প্রিয়ন্তী বলেন, কুপ্রস্তাব বলতে বোঝাতে চেয়েছি, তার মতো করে চলতে হবে। সে যেখানে যেতে বলবে সেখানে যেতে হবে, যা করতে বলবে তা করতে হবে। আমি তো রাজনৈতিক প্রোগ্রাম কোনো কিছুই বাদ দিতাম না। কিন্তু এর বাইরে সে কী বুঝাইছে আশা করি আপনাদের এটা আর ডিটেইলস বলতে হবে না।

প্রিয়ন্তী আরও বলেন, পোস্ট দেওয়ার পর আকতার হোসাইন আমাকে কল দিয়ে বলেন, যা করলি অনেক ভালো করলি। আমি যখন তাকে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি আমার সঙ্গে অন্যায় করেননি? তখন তিনি বলেন, হ্যাঁ, আমি অন্যায় করেছি। কিন্তু তুই এটা এই সময়ে তুলে না ধরলেও পারতি।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য আকতার হোসাইনকে ফোন করা হলে তিনি লাইনটি কেটে দেন।

এদিকে গত শুক্রবার (১ জুলাই) বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ছাত্রলীগের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাংগঠনিক কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত জন্য স্থগিত করা হয়েছে। 

বিভি/এজেড

মন্তব্য করুন: