বছরের দীর্ঘতম রাত আজ
আজ ২১ ডিসেম্বর, রবিবার। আজ উত্তর গোলার্ধের সব দেশেই রাত হবে সবচেয়ে দীর্ঘতম এবং দিনের দৈর্ঘ্য হবে সবচেয়ে কম। অন্যদিকে দক্ষিণ গোলার্ধে দেখা যাবে বিপরীত চিত্র। অন্যদিকে দক্ষিণ গোলার্ধে আজ বছরের দীর্ঘতম দিন। বিজ্ঞানের ভাষায় এই দিনটিকে বলা হয় ‘শীতকালীন অয়নান্ত’ বা ‘উইন্টার সলসটিস’।
এই দিনের মধ্য দিয়েই শুরু হলো জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক শীত। আবহাওয়াবিদদের হিসাবে শীত শুরু হয়েছে ১ ডিসেম্বর থেকে। তবে অনেকেই অয়নান্তের দিনকেই প্রকৃত শুরুর দিন মনে করেন।
জ্যোতির্বিজ্ঞানের ভাষায়, ২১ ডিসেম্বরকে বলা হয় শীতকালীন অয়নান্ত বা উইন্টার সলসটিস। এই দিনে সূর্য মকরক্রান্তি রেখার ঠিক ওপর অবস্থান করে। পৃথিবীর ঘূর্ণন অক্ষ সূর্যের দিকে হেলে থাকার কারণে উত্তর গোলার্ধ সূর্য থেকে তুলনামূলকভাবে দূরে অবস্থান করে, ফলে সেখানে সূর্যালোক কম পড়ে এবং দিন ছোট হয়ে রাত দীর্ঘ হয়।
শীত অয়নান্ত আসলে কোনো পুরো দিন নয়। এটি একটি নির্দিষ্ট মুহূর্ত। বাংলাদেশ সময় আজ রাত ৯টা ৩ মিনিটে এই অয়নান্ত ঘটতে চলেছে। এই সময় উত্তর গোলার্ধ সূর্য থেকে সবচেয়ে দূরে হেলে থাকে।
পৃথিবী তার নিজ অক্ষের ওপর প্রায় ২৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি কাত হয়ে আছে। এই কাত থাকার কারণেই ঋতুর পরিবর্তন ঘটে। সূর্য থেকে পৃথিবীর দূরত্ব এর কারণ নয়।
শীত অয়নান্তের পর সূর্য ধীরে ধীরে বিষুবরেখার দিকে উত্তরমুখী যাত্রা শুরু করে। এই যাত্রা চলে প্রায় ছয় মাস। এরপর আসে গ্রীষ্ম অয়নান্ত। তখন সূর্য কর্কটক্রান্তি রেখার ওপর থাকে। সেই দিন উত্তর গোলার্ধে সবচেয়ে বড় দিন দেখা যায়।
শীত ও গ্রীষ্ম অয়নান্তের মাঝখানে আসে দুটি বিষুব। মার্চ ও সেপ্টেম্বর মাসে এই বিষুব ঘটে। ওই সময় দিন ও রাত প্রায় সমান হয়। এতে বসন্ত ও শরৎ ঋতুর শুরু বোঝানো হয়।
২১ ডিসেম্বর উত্তর গোলার্ধে সূর্য দিগন্তে খুব নিচু অবস্থান করে উদয় ও অস্ত যায়। এ কারণে সূর্যাস্ত দ্রুত ঘটে বলে মনে হয় এবং রাত দীর্ঘ হয়। তবে এই দিনের পর থেকেই ধীরে ধীরে দিন বড় হতে শুরু করবে এবং রাতের দৈর্ঘ্য কমতে থাকবে।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জানান, প্রাচীনকাল থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন সভ্যতায় এই দিনটি বিশেষ গুরুত্ব পেয়ে আসছে। ইউরোপ, এশিয়া ও আমেরিকার বিভিন্ন সংস্কৃতিতে উইন্টার সলসটিস উপলক্ষে উৎসব ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনের রীতি রয়েছে।
উল্লেখ্য, ২১ জুন উত্তর গোলার্ধে বছরের দীর্ঘতম দিন বা গ্রীষ্মকালীন অয়নান্ত, আর ২১ ডিসেম্বর দীর্ঘতম রাত। এই প্রাকৃতিক চক্র পৃথিবীর আবহাওয়া, কৃষি এবং জীববৈচিত্র্যের ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে।
বিভি/এসজি




মন্তব্য করুন: