• NEWS PORTAL

শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

আমেরিকায় দাঁড়িওয়ালা মাছ প্রবেশ নিষিদ্ধে প্রবাসীর হাহাকার!

প্রকাশিত: ২১:১৯, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

ফন্ট সাইজ
আমেরিকায় দাঁড়িওয়ালা মাছ প্রবেশ নিষিদ্ধে প্রবাসীর হাহাকার!

আমেরিকায় দাঁড়িওয়ালা মাছ প্রবেশ নিষিদ্ধ। অবশ্য এই নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে কোভিড মহামারির সময় থেকে। ঠিক কি কারণে এই নিষেধাজ্ঞা সেটা আমি জানি না। তবে, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে কোন বাংলাদেশী মাছ আমদানীকারক নিশ্চয়ই কোন দু’নাম্বারী করে ধরা খেয়েছে এবং তার পরিণতিতে এই নিষেধাজ্ঞা। 

পেন্ডামিকের আগে দিনে দিনে সরাসরি ফ্লাইটে আসা দাঁড়িওয়ালা মাছ নিউ ইয়র্কের গ্রোসারীগুলোতে পাওয়া যেত। আমি প্রতি সপ্তাহের ঐ ফ্লাইটে আসা মাছের জন্য অপেক্ষা করতাম। আইর মাছ, ট্যাংরা-গুলশা, বোয়াল ইত্যাদি সব দাঁড়িওয়ালা মাছই তখন টাটকা খেতে পারতাম - হয়তো তা ১-দুই দিনের পুরাতন। কিন্তু আমাদের কাছে সেটা টাটকাই। 

একসময় আইর মাছ, ট্যাংরা-গুলশা, বোয়াল ইত্যাদি সব দাঁড়িওয়ালা মাছই তখন টাটকা পাওয়া যেত যুক্তরাষ্ট্রে
সে মাছও বন্ধ হয়ে যাওয়ায়, আমার মতো যারা শুধুই মৎস্যখেকো তাদের জন্য রীতিমত বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইলিশ মাছ ছাড়া অন্য কোন ভালো মাছ পাওয়া যায়না বললেই চলে। যাও বিক্রি হয় তা কোনটা ৬ মাস, কোনটা বা এক-২ বছরের পুরাতন। ওসব মুখে দেয়া যায় না।

দুবাইতে দেশী টাটকা মাছ তেমন একটা পাওয়া যায় না।কিন্তু কাছাকাছি দেশ হওয়ায় বাংলাদেশ-বার্মা-ভিয়েটনাম-কম্বোডিয়া-লাওস-থাইল্যান্ড ইত্যাদি দেশের নদীগুলোতে প্রায় একই কালচারের মাছ পাওয়া যায়। আর ঠিক সে কারণে থাইল্যান্ডের নদীতেও মিলে আয়ের-বোয়াল-পাবদা বা ট্যাংরা-গুলশাসহ আরও কিছু দেশী মাছ। স্বাদও বলতে গেলে একই রকম। 
ব্যাংককে প্রথম কয়েকদিন বারমুনগ্রাদ হসপিটালের গেটে মনিকা’স কিচেন এবং স্টার রেস্টুরেন্টে খেয়েছি - হাবিজাবি অতিরিক্ত চড়া দামে বিক্রি করে এরা। বাধ্য হয়েই খেতে হয়েছে। তারপর খোঁজাখুজি করে একটি আলিশান বাংলাদেশী রেস্টুরেন্ট খুঁজে পাই এম্বাসেডর হোটেল এর কাছে; নাম লিটল স্পাইসী। 
প্রথম দিনেই ওদের চাকচিক্যের চেয়ে খাবারের মানেই বেশী মুগ্ধ হয়ে যাই। ব্যাংককে নয় যেন ঢাকায় বসে খাচ্ছিলাম ওদের খাবার। প্রথম দিনেই রেস্টুরেন্টের মালিক মহোদয় আমার টেবিলে এসে পরিচয় দিলেন, কুমিল্লার মানুষ তিনি। তাদের আথিতেয়তায়ও আমি মুগ্ধ। কাস্টমার সার্ভিস বিশ্বমানের। এমন একটি বাংলাদেশী রেস্টুরেন্ট ব্যাংককে পেয়ে আমি সত্যিই মুগ্ধ হয়েছি। আমার মনে হয় না বিশ্বের অন্য কোন শহরে এতোটা উচ্চ মানসম্পন্ন দ্বিতীয় কোন বাংলাদেশী রেস্টুরেন্ট খুঁজে পাওয়া যাবে!

গতকাল, দুপুরে ওয়েটারকে বলে রেখেছিলাম আয়ের বা বোয়াল মাছ থাকলে আমার জন্য যেন অবশ্যই আলাদা করে রেখে দেয়; রাতে দেরি হলেও আমি আসবো খেতে। রাত প্রায় সাড়ে ১০টায় রেস্টুরেন্টে পৌছে ‍শুনি আমার জন্যে একপিস বোয়াল মাছ রেখে দিয়েছে। ওয়াও। টাটকা বোয়াল মাছের একটি বড় পিস। অসাধারণ রান্না, খেতেও দুর্দান্ত। আরও এক পিস রাখেনি বলে খারাপ লাগলো। 
আজ রাতে খেতে যাবার পর ওয়েটার এসে জানালো আজ আমার জন্য ২ পিস আয়ের মাছ আলাদা রেখেছে সে। আমি তো মহাখুশী। জানতে চাইলো একা দু’দুটো পিস আয়ের খেতে পারবো কি না?
বলে কি?
পুরো আয়ের মাছটা এনে দিলেও তো আমি শেষ করে ফেলবো! খেয়ে হোটেলে ফিরলাম।
দু’পিস তাজা আয়ের মাছ দিয়ে ভাত খেয়ে হোটেলে ফিরতে ফিরতে মনে হচ্ছিল - তাহলে আমার এবারের থাইল্যান্ড সফর শতভাগ ফলপ্রসু হলো।

দু’পিস তাজা আয়ের মাছ দিয়ে ভাত খেয়ে হোটেলে ফিরতে ফিরতে মনে হচ্ছিল - তাহলে আমার এবারের থাইল্যান্ড সফর শতভাগ ফলপ্রসু হলো
 

মন্তব্য করুন: