• NEWS PORTAL

  • শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

রেইনট্রি ধর্ষণ মামলায় আসামিদের খালাসঃ বিচারকের যুক্তি খুঁজতে গলদঘর্ম হতে হলো

শওগাত আলী সাগর

প্রকাশিত: ১৪:৪২, ১২ নভেম্বর ২০২১

আপডেট: ১৪:৪৩, ১২ নভেম্বর ২০২১

ফন্ট সাইজ
রেইনট্রি ধর্ষণ মামলায় আসামিদের খালাসঃ বিচারকের যুক্তি খুঁজতে গলদঘর্ম হতে হলো

বহুল আলোচিত (বিচারক অবশ্য এই মামলাটিকে বহুল আলোচিত হিসেবে স্বীকার করতে রাজি হননি)  রেইনট্রি হোটেলে ধর্ষণ মামলায় আসামিদের খালাস দেওয়ার পেছনে বিচারকের যুক্তিগুলো কী সেটা খুঁজতে গিয়ে অনেকটা গলদঘর্ম হতে হলো। অধিকাংশ রিপোর্ট থেকেই এ ব্যাপারে পরিস্কার ধারণা পাওয়া গেলো না। প্রথম আলো অবশ্য এ নিয়ে আলাদা করে একটি রিপোর্ট করেছে। আমার মতো কম মেধার মানুষদের বিচারের যুক্তিগুলো বোঝার ক্ষেত্রে এই রিপোর্টটি সহায়ক হবে।

প্রথম আলোর রিপোর্ট থেকে কয়েকটি অংশ উল্লেখ করি। 
১. ‘রেইনট্রি হোটেলে ধর্ষণের মামলায় ভুক্তভোগী রেইনট্রি হোটেলে যান, সেটি প্রমাণ করতে পারেননি তদন্ত কর্মকর্তা।’ ইন্টারেস্টিং! এই একটি বাক্যেই তো মামলা খারিজ হয়ে যায়। ভুক্তভোগী যদি হোটেলে না গিয়েই থাকেন, তা হলে সেখানে ধর্ষণের ঘটনা ঘটবে কীভাবে? তদন্ত কর্মকর্তা তার প্রতিবেদনে কী উল্লেখ করেছেন সেটি আমরা জানি না। তদন্ত কর্মকর্তার প্রতিবেদন নিয়ে আগে কোনো রিপোর্ট হয়েছিলো কী না- সেটাও আমার জানা নাই। সাংবাদিকদের ‘তীক্ষ্ণ দৃষ্টি’ এড়িয়ে এমন একটি ‘অকেজো’ তদন্ত রিপোর্ট আদালতে গেলো কীভাবে? 

এই রায়ের পর তদন্ত কর্মকর্তার রিপোর্ট এবং তার  ভূমিকা আমাদের মনোযোগের আসবে কী না- সেটাও জানি না। কিন্তু যে কোনো মামলার রায়ের ক্ষেত্রে তদন্ত প্রতিবেদন একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান সেটি জানি। বিচারক অবশ্য ‘ভবিষ্যতে সঠিক তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন’ বলে খবরে প্রকাশ হয়েছে।

২. ‘ধর্ষণ মামলা প্রমাণ করতে হলে মেডিকেল প্রতিবেদন খুব জরুরি। একই সংগে ভুক্তভোগীর পরিহিত বস্ত্রের রাসায়নিক পরীক্ষার প্রতিবেদনও গুরুত্বপূর্ণ। এই মামলায় দুটি প্রতিবেদনেও ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি।’- এটিও  আদালতের বক্তব্য।

তদন্ত কর্মকর্তার পর এবার ডাক্তার সাহেবদের দিকেও মনোযোগ দিতে হয়। আদালতের ভাষ্য অনুসারে, ডাক্তার সাহেবদের কাছ থেকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ যে দুটি রিপোর্ট আদালতে গেছে তার কোনোটাতেই ধর্ষণের অভিযোগের প্রমাণ নাই। আসলেই কী তাই? সত্যিই ডাক্তার সাহেবরা এমন রিপোর্ট দিয়েছেন? কীভাবে দিয়েছেন? আমরা কী এগুলো নিয়ে কথা বলবো? কোনো সাংবাদিক কী ফলো আপ করবেন- মেডিকেল রিপোর্টের  ব্যাপারে!

ধর্ষণ মামলার রায়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুটি বিষয়ে আদালতের বিবেচনার কথাটা এখানে উল্লেখ করলাম। এগুলো নিয়েই আমাদের সবচেয়ে সোচ্চার হওয়ার কথা ছিলো। আমাদের মনোযোগ পেয়েছে বিচারকের অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তাগুলো, বিচারকে অবিচারে পরিণত করে যে উপাদানগুলো, সেগুলোকে আমরা পাশ কাটিয়ে রেখেছি চমৎকারভাবে।

কানাডা প্রবাসী সাংবাদিক শওগাত আলী সাগর-এর ফেসবুক থেকে নেওয়া।

বিভি/এসডি

মন্তব্য করুন: