• NEWS PORTAL

  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

শিক্ষিকার মৃত্যুর ঘটনায় স্বামী মামুনকে দায়ী করলেন তসলিমা নাসরিন

প্রকাশিত: ১৭:৪১, ১৫ আগস্ট ২০২২

ফন্ট সাইজ
শিক্ষিকার মৃত্যুর ঘটনায় স্বামী মামুনকে দায়ী করলেন তসলিমা নাসরিন

দেশজুড়ে আলোচিত ঘটনা নাটোরের গুরুদাসপুরে কলেজছাত্র মামুন হোসেন (২২) ও শিক্ষিকা খাইরুন নাহারের (৪০) বিয়ে। তবে উচ্ছ্বাসের এই বিয়ে পরিণত হয়েছে শোকের গল্পে। রবিবার (১৪ আগস্ট) সকালে নাটোর শহরের বলারিপাড়ার এক ভাড়া বাসা থেকে শিক্ষিকা খাইরুন নাহারের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য খাইরুন নাহারের স্বামী মামুনকে আটক করা হয়েছে। তাকে আদালতে প্রেরণও করা হয়েছে। এ ঘটনায় খাইরুন নাহারের মরদেহ ময়নাতদন্তের পর দাফন সম্পন্ন হয়েছে। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এখনো প্রকাশ হয়নি। কিন্তু এই ঘটনা নিয়ে মুখ খুলেছেন বাংলাদেশের বিতর্কিত ও নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন।

সোমবার (১৫ আগস্ট) নিজের ফেসবুক টাইমলাইনে তসলিমা যে স্ট্যাটাস দিয়েছেন তা বাংলাভিশনের পাঠকদের জন্য সরাসরি তুলে ধরা হলো-

‌‘অধ্যাপিকা খায়রুন নাহারকে মনে হচ্ছে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে তাঁর বয়সে-ছোট স্বামী মামুন। সমাজের আবর্জনাগুলো খায়রুনকে অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করেছিল যেহেতু তাঁর  স্বামীটির বয়স তাঁর বয়সের চেয়ে কম। 

পুরুষেরা যখন বয়সে-ছোট মেয়েদের বিয়ে করে, তখন তো সেইসব পুরুষকে মানুষ অপমান করে না! এখন তো লোকে এ-ই বলবে, পুরুষকে স্ত্রীর চেয়ে  বয়সে বড় হতেই হয়, এটিই সমাজের নিয়ম। না, এটি সমাজের নিয়ম নয়। এটিকে অলিখিত একটি  নিয়ম  বানানোর চেষ্টা  হয়েছে,  কিন্তু এক তুড়িতে নিয়ম বদলে যেতে পারে। নিয়ম মানুষই তৈরি করে, নিয়ম মানুষই ভাঙ্গে। 

স্ত্রী বয়সে বড় হবে, একে  যদি মানতে না পারো, তাহলে তোমরা তোমাদের প্রিয় নবীর সঙ্গে বিবি খাদেজার বিয়েও মানো না। তোমরা তো তবে   মুসলমানই নও।  তোমাদের  নবী যে পথে হেঁটেছেন, সেই পথেই তো  হাঁটতে চাও। তাহলে স্বামীর চেয়ে বয়সে বড় স্ত্রীকে মেনে নিতে পারো না কেন? আমার মনে হয় না  মানুষের মানা না-মানা নিয়ে খায়রুন নাহারের কোনও সমস্যা ছিল। সমাজের আবর্জনাগুলো সম্বন্ধে যথেষ্ট   ওয়াকিবহাল হওয়ার পরই  তো  মামুনকে বিয়ে করেছিলেন। এমন আত্মবিশ্বাস যাঁর, তিনি  আত্মহত্যা করবেন কোন দুঃখে! 

ময়নাতদন্ত বলছে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। মামুন সাহেব স্ত্রীকে হত্যা করে রাত দুটোর সময় বাড়ি থেকে বেরিয়ে সকাল ছটায় ফিরে ফ্যানের সঙ্গে ওড়না ঝুলিয়ে   আগুনে ওড়না আর ফ্যানের কিছুটা পুড়িয়ে একটি আত্মহত্যার দৃশ্য হয়তো  সাজিয়েছেন। হয়তো রাতে যেখানে ছিলেন, সেখান থেকেই এই বুদ্ধিটা নিয়ে এসেছেন। 

যেহেতু খায়রুনের উপর সমাজ ক্ষিপ্ত ছিল, মামুনকে বয়স্ক নারীর ভিক্টিম হিসেবে দেখেছে, তাই মামুনের শাস্তি হোক তা হয়তো লোকেরা চাইবে না। ছলে কৌশলে মামুনকে বাঁচাবার চেষ্টা চলবে। প্রশ্ন হলো মামুন কেন খুন করবে খায়রুনকে? খায়রুনের দয়ায় সে অন্ন বস্ত্র বাসস্থান তো পেয়েছে, এমনকী  মোটর সাইকেল পেয়েছে, পড়ালেখার খরচ পাতি পেয়েছে। খায়রুন বেঁচে থাকলে আরও সুযোগ সুবিধে পেত। নিশ্চয়ই  কোনও  বদ উদ্দেশ্য  তার ছিল  খায়রুনকে হত্যা করার পেছনে। সে নাকি আবার মাদকাসক্তও ছিল।  তাহলে তো  মাদকের নেশায় অনেকটা ঠাণ্ডা মাথায় খুন  করা সম্ভব। আমি ভুল হতে পারি। কিন্তু দু'একটা খবর পড়ে এমনই মনে হলো।

বিভি/এজেড

মন্তব্য করুন: