৬ দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত সাড়ে ১৭ হাজার, মৃত্যু ৭৬
প্রতীকী ছবি
চলতি মাসের গত ৬ দিনে সারাদেশে মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ১৭ হাজার ৬৫১ জন মানুষ। এর মধ্যে প্রাণ গেছে ৭৬ জনের। যা বাংলাদেশের ডেঙ্গু বিস্তারের ইতিহাসে একেবারেই বিরল ঘটনা। চলমান ডেঙ্গু পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে চলতি মাসে এই রোগে আক্রান্ত লাখ ছাড়িয়ে যাওয়ার শঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। এতে প্রাণহানির সংখ্যাও ভয়াবহ মাত্রায় পৌঁছাতে পারে বলে সতর্ক করছেন চিকিৎসকরা।
সোমবার (৭ আগস্ট) স্বাস্থ্য অধিদফতরের দেওয়া ডেঙ্গু বিষয়ক দৈনিক বুলেটিন পর্যালোচনা করে এই চিত্র দেখা গেছে।
বুলেটিনে জানানো হয়েছে, সোমবার সকাল পর্যন্ত বিগত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৭৫১ জন মানুষ। এর মধ্যে ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন হাসপাতালে ১ হাজার ১১৯ জন এবং ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১ হাজার ৬৩২ জন রোগি।
এই সময় সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকায় ছিল ১০ জন, বাকি ৪ জন মারা গেছেন ঢাকার বাইরে। এ নিয়ে চলতি বছরে ডেঙ্গুতে মৃত্যু হলো ৩১৭ জনের। যার ৭৬ জনই গত ৬ দিনে মারা গেছেন।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের বুলেটিনে আরও জানানো হয়, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ৯ হাজার ৫৭২ জন ডেঙ্গু রোগি ভর্তি রয়েছেন। এর মধ্যে শুধু ঢাকার হাসপাতালগুলোতেই ভর্তি রয়েছেন ৪ হাজার ৬৫২ জন রোগি। গত ২৪ ঘণ্টায় ছাড় পাওয়া ২ হাজার ৫১২ জনসহ চলতি বছরে ডেঙ্গু আক্রান্তের পর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৫৯ হাজার ৫৪৮ জন রোগি।
বুলেটিনে পর্যালোচনা করে আরও দেখা যায়, চলতি বছরে ডেঙ্গু আক্রান্তের মধ্যে ৪২ শতাংশই ১৬ থেকে ৩০ বছর বয়সী মানুষ ছিরেন। মৃত্যুর দিক থেকেও এগিয়ে রয়েছেন এই বয়সীরাই। ডেঙ্গুতে বেশি মারা গেছেন নারীরা। গত ৬ মাসে মৃত্যু হয়েছে ১৮৪ জন নারীর। নারীদের মৃত্যুর দিক থেকে সর্বোচ্চ ২৩ জন ছিলেন ৩১ থেকে ৩৫ বছর বয়সী।
এদিকে ডেঙ্গু ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়ায় সারাদেশে বছরজুড়ে মশা নিধন কর্মসূচি চালুর আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তিনি বলেছেন, “ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করতে হলে এইডিস মশা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। যেখানে এই মশার জন্য হয় সেখানে স্প্রে করে লার্ভা ধ্বংস করতে হবে। দেশে যত সিটি করপোরেশন ও পৌরসভা আছে, তাদের আমরা পরামর্শ দিয়েছি আপনারা এই প্রোগ্রাম সারা বছর চালাবেন। যে সময় ডেঙ্গু রোগী দেখা দেবে, সে সময় শুধু না করে বছরব্যাপী পরিকল্পিত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।”
প্রতিটি জেলায় ডেঙ্গু রোগী পাওয়া গেছে জানিয়ে তিনি বলেন, তাই সারাদেশেই এইডিস মশা মারার কাজটি চালাতে হবে।
ডেঙ্গুর চিকিৎসার সংকটের বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “হাসপাতালগুলো স্যালাইনের ব্যাগ যোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছে, কিন্তু যোগাড় হয়ে যাচ্ছে। যারা স্যালাইন তৈরি করে তাদের উৎপাদন বাড়াতে বলা হয়েছে। আশা করি স্যালাইনের জন্য চিকিৎসার ব্যাঘাত হবে না।”
ডেঙ্গু রোগী আরও বেড়ে গেলে সরকার তাদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাবে কি না- এই প্রশ্নে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “আমাদের ম্যানেজ করতেই হবে। করোনায় এর থেকে বেশি আক্রান্ত হয়েছিল, তখনও ম্যানেজ করেছি। ডেঙ্গু যদি বাড়ে ম্যানেজ করতে পারব।”
বিভি/কেএস
মন্তব্য করুন: